হায়দরাবাদ, ৬ ডিসেম্বর: অনেকদিনের রাগ দুঃখ অপমান ও গ্লানির স্তূপের মাঝে স্বস্তি নিয়ে এল শুক্রবারের সকাল। গোটা ভারত যখন ঘুমের দেশ থেকে ফিরছে ঠিক তখনই হল সেই খবর। হায়দরাবাদে পশু চিকিৎসককে ধর্ষণ করে খুন ও জ্বালিয়ে দেওয়ার ঘটনায় চার ধৃতকেই এনকাউন্টারে উড়িয়ে দিয়েছে সাইবারাবাদ পুলিশ। সৌজন্য সেখানকার পুলিশ কমিশনার ভিসি সাজ্জানার (VC Sajjanar)। পুলিশ জানায়, অভিযুক্ত মহম্মদ আরিফ, নবীন, শিবা ও চেন্নাকেসাভুলুর এনকাউন্টারে মৃত্যু হয়েছে। দাবি, ভোররাতে ঘটনার পুনর্নির্মাণের জন্য অভিযুক্তদের অপরাধস্থলে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। তখনই পুলিশের অস্ত্র কেড়ে নিয়ে হেফাজত থেকে পালানোর চেষ্টা করে চারজন। তখনই ৪৪ নং জাতীয় সড়কের উপরে এনকাউন্টার ধৃতদের মৃত্যু হয়।
এদিকে এই এনকাউন্টারের সঙ্গে ২০০৮-এর ওয়ারাঙ্গলের (Warangal) এনকাউন্টারের সাদৃশ্য যেন বড় বেশি।। হায়দরাবাদের পশু চিকিত্সক ধর্ষণ ও খুনের মামলায় তদন্তের নেতৃত্বে ছিলেন সাইবারাবাদ পুলিশ কমিশনার ভিসি সাজ্জানার। ১১ বছর আগে ওয়ারাঙ্গল এনকাউন্টারের সময় তিনিই ছিলেন সেখানকার পুলিশ সুপার। ওই বছর ডিসেম্বরে কাকাতিয়া ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজির দুই ইঞ্জিনিয়ারিং ছাত্রীকে অ্যাসিড ছোড়ার ঘটনায় অভিযুক্ত তিনজনের মৃত্যু হয় অন্ধ্র পুলিশের এনকাউন্টারে। মূল অভিযুক্ত ২৫ বছরের শ্রীনিবাস রাওয়ের প্রেমের প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়েছিলেন আক্রান্ত এক ছাত্রী। তারপরই তাঁর ও তাঁর বান্ধবীর উপর অ্যাসিড হামলা চালানোর অভিযোগ ওঠে শ্রীনিবাস ও তার দুই শাকরেদ পি হরিকৃষ্ণ (২৪) ও বি সঞ্জয় (২২)-এর বিরুদ্ধে। শুক্রবারের ঘটনার মতোই সে ক্ষেত্রেও পুলিশ সুপার দাবি করেছিলেন যে, প্রমাণ সংগ্রহণের জন্য অভিযুক্তদের অপরাধস্থলে নিয়ে গিয়েছিল পুলিশ। তখনই নাকি অভিযুক্তরা তাজা বোমা নিয়ে পুলিশের উপর হামলা চালানোর চেষ্টা করে। আত্মরক্ষার্থে পুলিশকে এনকাউন্টারের নির্দেশ দেন সাজ্জানার। এই ঘটনায় সেসময় ওয়ারাঙ্গল-সহ গোটা অন্ধ্রপ্রদেশ উত্তাল হয়ে উঠেছিল। আরও পড়ুন-Hyderabad Encounter: এনকাউন্টারে ঝাঁঝরা ধর্ষকরা, সানন্দে পথে বেরিয়ে সাইবারাবাদ পুলিশকে রাখি পরিয়ে গোলাপ পাপড়িতে অভিনন্দন তেলেঙ্গানার বাসিন্দাদের
যাইহোক তারপর থেকেই 'এনকাউন্টার কপ' হিসেবে পরিচিত এই ভিসি সাজ্জানার। ১৯৯৬ ব্যাচের আইপিএস অফিসার সাজ্জানার বরাবরই কড়া পুলিশ কর্তা বলে পরিচিত। তেইশ বছরের চাকরি জীবনে প্রচুর ঝুঁকিপূর্ণ দায়িত্বও সামলেছেন তিনি। এক সময়ে রাজ্য গোয়েন্দা দপ্তরের ইন্সপেক্টর জেনারেল পদেও ছিলেন। অন্ধ্রপ্রদেশের বিস্তীর্ণ অঞ্চল তখন নকশাল তথা মাওবাদী সমস্যা কবলিত। সে সময়ে অন্যতম ছিল নকশাল নেতা নঈমুদ্দিন ওরফে নঈমের এনকাউন্টার। হায়দরাবাদের উপকণ্ঠে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে মৃত্যু হয়েছিল নঈমের। এরও নেপথ্যে ছিলেন এই ভিসি সাজ্জানার