হিসার, ১৯ মে: করোনা (Corona Virus) রোগীদের মৃতদেহের যাতে সম্মানের সঙ্গে শেষকৃত্য করা যায় তা দেখার দায়িত্ব নিজের কাঁধে নিয়েছিলেন উনি। হরিয়ানার (Haryana) হিসার (Hisar) পুরসভার কর্মী প্রবীণ কুমার (Praveen Kumar) একাই ৩০০ জনেরও বেশি করোনায় মৃত ব্যক্তিদের শেষকৃত্য করেছিলেন নিজে হাতে। তিনি নিশ্চিত করতেন করোনায় মৃত ব্যক্তির যেন কোনও সম্মানের সঙ্গেই শেষকৃত্যু হয়। হিসারের ঋষি নগর শ্মশানের মাঠে যত করোনায় মৃতদের দেহ আসত তাদের শেষকৃত্যর জন্য পুরসভা যে দল গঠন করেছিল প্রবীণ ছিলেন তাঁর নেতৃত্বে। মৃতদেহ গাড়ি থেকে নামানো শুরু করে, পোড়ানো পর্যন্ত যাবতীয় কাজ তিনি করতেন। দিনরাত এক করে তিনি এই কঠিন কাজ করছিলেন। শেষের কটা দিন রোজ অন্তত ২০টি করোনায় মৃতদেহের শেষকৃত্য করছিলেন তিনি। দিন যত যাচ্ছিল চাপ বাড়ছিল। আরও পড়ুন: Covid-19: কোভিডে প্রয়াত বিজেপি বিধায়ক গৌতম লাল মিনা
দলের কর্মীদের বারবার বলতেন সাবধান এবং সম্মানের সঙ্গে কোভিড দেহের সৎকার করতে। দিন দুয়েক আগে জ্বর আসায় অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। স্থানীয় এক বেসরকারী হাসপাতালে ভর্তি করা হলে দেখা যায় তাঁর করোনা রিপোর্ট পজেটিভ এসেছে। এরপর তাঁর শরীরের অক্সিজেনের মাত্রা ক্রমশ কমে আসতে থাকে। অনেক চেষ্টার পরেও তাঁকে বাঁচানো সম্ভব হয়নি। হিসার পুরসভার শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি ছিলেন তিনি। তাঁর স্ত্রী ও দুই ছেলে আছে।
যে প্রবীণ বহু করোনা রোগীর সাহায্য এগিয়ে এসেছিলেন, করোনায় মৃতদের সম্মানের সঙ্গে শেষকৃত্যের কাজে নিয়োজিত ছিলেন, সেই তিনিই করোনায় আক্রান্ত হওয়ার পর হাসপাতালের বেড পাচ্ছিল না। তাঁর পরিবারের লোকেরা বহু ছুটোছুটির করে ঘণ্টা তিনেকে পর তাঁর জন্য এক বেসরকারী হাসপাতালে বেড জোগাড় করে। হাসপাতালে ভর্তির সময় তাঁর শরীরে অক্সিজেনের মাত্রা ৪০-এর নিচে নেমে গিয়েছিল।
যে শ্মশানে এতদিন করোনায় মৃতদের চিতা সাজিয়ে এসেছিলেন, সেখানেই তাঁর চিতা জ্বলল। প্রবীণের শেষকৃত্যে হাজির ছিলেন হিসার পুরসভার মেয়র গৌরম সারদানা, পুরসভার কমিশনার অশোক গর্গ এবং উচ্চপদস্থ প্রশাসনিক কর্তারা। চোখে জল নিয়ে সবাই তাঁকে বিদায় জানাল।