নতুন দিল্লি, ১০ ফেব্রুয়ারি: বহিরাগতদের তাণ্ডবে উত্তাল হয়ে উঠেছিল দিল্লির গার্গী কলেজের (Gargi College) ক্যাম্পাস। পড়ুয়াদের দাবি, গত ৬ ফেব্রুয়ারি কলেজের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান (College Annual Programme) চলাকালীন মত্ত অবস্থায় একদল বহিরাগত ক্যাম্পাসে ঢুকে পড়ে। অনুষ্ঠানে বাধা সৃষ্টি করার পাশাপাশি মেয়েদের হেনস্থা করা হয়। এমনকি তাঁদের লক্ষ্য করে হস্তমৈথুন (Masterbation) করতে থাকে তাণ্ডবকারীরা। বিষয়টি নিয়ে সে রাতেই কলেজ কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ জানান পড়ুয়ারা। কিন্তু কোনও ব্যবস্থা নেওয়ার পরিবর্তে তাঁদেরই সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান করতে নিষেধ করা হয় বলে দাবি জানায় পড়ুয়ারা। এদিকে কলেজের অধ্যক্ষা প্রমীলা কুমার (Principle Pramila Kumar) বলেন, ‘‘দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যান্য কলেজের ছেলেদের এই অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার ক্ষেত্রে কোনও বাধা ছিল না। মেয়েদের জন্যও নির্দিষ্ট জায়গার বন্দোবস্ত করা হয়েছিল। তাঁদের নিরাপত্তা দিতে ক্যাম্পাসে পুলিশ, কম্যান্ডো এবং বাউন্সারও মোতায়েন ছিল। সেই নিরাপত্তা বলয়ের বাইরে কেউ বেরিয়ে গিয়ে থাকলে তিনি নিজের ইচ্ছাতেই গিয়েছেন।’’ এদিকে ছাত্রছাত্রীদের অভিযোগ ক্যাম্পাসে সেদিন পুলিশ কর্মী মোতায়েন থাকলেও তাঁদের নাকের ডগাতেই ওই ঘটনা ঘটে। এদিকে পুলিশের তরফ থেকে ওই ঘটনা রুখতে কোনও তৎপরতা দেখানো হয়নি! ঘটনায় সরগরম সোশ্যাল মিডিয়া। গার্গী কলেজের পড়ুয়া এবং অধ্যাপকরাও এই ঘটনার নিন্দায় সরব হয়েছেন।
এমন উত্তপ্ত পরিস্থিতি আজ সোমবার জানা গেল অধ্যক্ষা প্রমীলা কুমার সেদিন রাতে কলেজ কর্তৃপক্ষের দায়িত্বে শিথিলতা থাকার বিষয়টি শিকার করে নিয়েছেন। ছাত্রছাত্রীদের (Students) কাছে প্রকাশ্যে ক্ষমা চেয়েছেন ওই ঘটনার জন্য। এদিকে আরও জানা গিয়েছে, ন্যাশনাল কমিশন ফর উইমেন (এনসিডাব্লু), ডিসিডব্লিউ এবং দিল্লি পুলিশ এই ঘটনায় ছাত্রছাত্রীদের অভিযোগের গ্রহণ করেছে। এনসিডব্লিউর এক প্রতিনিধি দলও ইতিমধ্যেই কলেজ ক্যাম্পাসে পৌঁছেছে বলেও জানা গিয়েছে। কলেজে পৌঁছেছিলেন ডিসিডব্লিউ প্রধান মালিওয়ালিও। দিল্লি পুলিশ এই ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। ঘটনায় প্রতিক্রিয়া জানিয়ে আম আদমি পার্টির সাংসদ সানজা সিংহ (Sanja Singha) রাজ্যসভায় এই ঘটনার বিষয়ে 'জিরো আওয়ার' নোটিশ জারি করেছেন। আরও পড়ুন: Delhi: দিল্লির গার্গী কলেজ ক্যাম্পাসে বহিরাগতদের হামলা, ছাত্রীদের সামনে হস্তমৈথুন!
এদিকে কলেজের এক পড়ুয়ারা ঘটনার বিষয়টি জানিয়ে বলেন, ওই বহিরাগতরা কলেজে ঢুকে কয়েকজন ছাত্রীর পিছনে ধাওয়া করে। পুরো ক্যাম্পাসে তাঁদের বিরক্ত করে। আমি এমনও দেখেছি যে প্রথমবর্ষের কয়েকজন ছাত্রী ভয়ে মাঠের মধ্যেই অজ্ঞান (Senseless) হয়ে পড়ে গেছেন। সেই সময় রীতিমতো জীবন নিয়ে টানাটানি পরিস্থিতি হয়ে গেছিল। কলেজ কর্তৃপক্ষ এই ঘটনা নিয়ন্ত্রণ করার জন্যে কিছুই করেনি। পাশাপাশি সেই সময় সেখানে র্যাফ (RAF) থাকলেও (র্যাপিড অ্যাকশন ফোর্স) সেই কর্মীরা ক্যাম্পাসের ঠিক সামনেই দাঁড়িয়ে ছিল। ওঁরাও কিছু করেননি। আমাদের কাছে গোটা ঘটনার ভিজ্যুয়াল রয়েছে।