4 Day Ambubachi mela (Photo Credit: X@ANI)

সারা বিশ্বের হিন্দুদের কাছে এবং গুপ্তমন্ত্র ও তন্ত্রসাধকদের কাছে অসমের গুয়াহাটিতে (Guwahati) কামাখ্যা মন্দির হলো অন্যতম পবিত্র তীর্থস্থান। সারাবছর পূজা হলেও অম্বুবাচীর তিন দিন মা কামাখ্যার মন্দিরে (Kamakhya Temple)  বিশেষ পূজা হয়। অসম-সহ সারা দেশের সমস্ত দেবী মন্দিরের দরজাও বন্ধ থাকে। এই তিনদিন ভক্তদের ঢল নামে মন্দিরে।  অম্বুবাচীর আগেই কামাখ্যা মন্দিরে সাজ সাজ রব পড়ে যায়। কামাখ্যা ধামের অম্বুবাচী মেলা (Four-Day Ambubachi Mela) আন্তর্জাতিক ও জাতীয় সম্প্রীতি রক্ষার জন্য বিশেষ ভূমিকা পালন করে আসছে শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে। অম্বুবাচী আরম্ভের প্রথম দিন থেকে কামাখ্যা দেবীর মন্দিরের দরজা বন্ধ রাখা হয়। ফলে অম্বুবাচীর সময় দর্শনার্থীরা দেবীর দর্শন পান না। অম্বুবাচীর চতুর্থ দিন দেবীর ঋতুস্নান ও ষোড়শ উপচারে পূজা সম্পূর্ণ হওয়ার পরই দর্শনার্থীরা কামাখ্যা মাতার দর্শন পান। মা কামাখ্যার অম্বুবাচীর মেলায় দেশ বিদেশ থেকে ভিড় করেন ভক্তরা।

চারদিনের অম্বুবাচী মেলার তৃতীয় দিনে ভক্তদের ভিড়

 রহস্যময়ী কামাখ্যা মন্দিরে অনুষ্ঠিত অম্বুবাচী হিন্দুধর্ম বা সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বাৎসরিক উৎসব। হিন্দুদের বিশ্বাস, অম্বুবাচীতে কামাখ্যা মায়ের রক্তস্নাত লাল কাপড় হাতে পেলে বিশ্বসুখ লাভ করা সম্ভব! সনাতন ধর্মমতে, প্রতি বছর আষাঢ় মাসে মৃগশিরা নক্ষত্রের তিনটি পদ শেষ হলে পৃথিবী বা ধরিত্রী মা রজস্বলা হন। এই বিশেষ সময়কাল ধরে প্রতি বছর সনাতন ধর্মাবলম্বীরা অম্বুবাচী পালন করেন। আষাঢ় মাসের সাত তারিখ থেকে শুরু হয় অম্বুবাচী। সুপ্রাচীন জ্যোতিষ শাস্ত্র বলে, সূর্য যে বারের যে সময়ে মিথুন রাশিতে গমন করে, তার পরবর্তী সেই বারের সেই সময় থেকে অম্বুবাচী হয়।অর্থাৎ ধরিত্রী মা এই সময়ে ঋতুমতী হন।

অম্বুবাচীর সময় সারা বিশ্বের হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের নজর ঘুরে যায় আসামের গুয়াহাটি শহরের পশ্চিমাংশে অবস্থিত নীলাচল পর্বতের চূড়ায় অধিষ্ঠিত জাগ্রত দেবী কামাখ্যার মন্দিরের ওপর। ৫১টি সতীপিঠের অন্যতম এবং সবচেয়ে বিখ্যাত ও রহস্যময় পীঠ এই কামাখ্যা। জনশ্রুতি রয়েছে, অম্বুবাচীর তিন দিন কামাখ্যা মন্দিরের অধিষ্ঠিত দেবীর যোনিপীঠ থেকে রক্তরাঙা তরল নিঃসৃত হয়।মা কামাখ্যার বিশ্বব্যাপী ভক্তরা মানেন, এই তরল হলো মায়ের ঋতুস্রাব। একে অত্যন্ত পবিত্র ও মহার্ঘ্য বলে ভক্ত মহলে গণ্য করা হয়। অম্বুবাচীর শেষ দিন মন্দিরের পান্ডারা ভক্তদের রক্তবস্ত্র উপহার দেন। দেবী ঋতুস্নাত এই রক্তবস্ত্র ধারণ করলে বা বাড়িতে রাখলে সকলের সর্বপ্রকার মনোকামনা পূর্ণ হয় বলে বিশ্বাস ভক্তদের। এই রক্তবস্ত্র নারীরা ধাতুর তাবিজ বা মাদুলি বানিয়ে বাঁ হাত বা গলায় পরেন এবং পুরুষেরা ডান হাত বা গলায় রক্তবস্ত্র ধারণ করেন।