পাটনা, ২৯ জুলাই: যতই ‘কন্যাশ্রী’, ‘বেটি বাঁচাও বেটি পড়াও’ স্বীকৃতি পাক না কেন, মেয়েরা যে এই একুশ শতকেও ফেলনা তা আর নতুন করে বলার কিছু নেই। তাই মেধাবী মেয়ের কিডনি নষ্ট হয়ে গেলেও বাবা-মায়ের কোনও হেলদোল নেই। ডাক্তারবাবুরা বলেছেন যত তাড়াতাড়ি সম্ভব কিডনি বদল করতে হবে। কিন্তু মেয়েকে আবার কিডনি দেওয়ার কী আছে বলে বাবা-মা প্রায় জেগেই ঘুমোচ্ছেন। আর একটু একটু করে মৃত্যুর দিকে এগিয়ে চলেছে বিহারের কাঞ্চন কুমারী। আরও পড়ুন-বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক লুকিয়ে রাখতে হবে, একরত্তিকে খুন করে গাঙের জলে ভাসাল মা
কাঞ্চনের জীবনটা যেন পড়ে পাওয়া ১৪ আনার মতো। তাইতো সে মন দিয়ে পড়াশোনা করে ফার্স্ট ডিভিশন পেয়ে মাধ্যমিক পাশ করল। কিন্তু সেই আনন্দ বেশি দিন স্থায়ী হয়নি। কিছুদিন পরেই অসুস্থ অবস্থায় তাকে পটনার ইন্দিরা গাঁধী ইনস্টিটিউট অফ মেডিক্যাল সায়েন্স (আইজিআইএমএস)-এ ভর্তি করানো হয়। পরীক্ষা নিরীক্ষার পর ধরা পড়ে তার কোনও কিডনিই কাজ করছে না।কাঞ্চনের পারিবারের আর্থিক অবস্থা ভাল নয়। তাই পাটনা থেকে শেখপুরের সদর হাসপাতালে এনে ভর্তি করানো হয় তাকে। সেখানেই স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মেয়েকে বাঁচাতে তার বাবা-মা কেউই কিডনি দান করতে রাজি নন। কেননা সে মেয়ে তাকে কিডনি দেওয়া মানে কিডনিকে অপমান করা। এককথায় কাঞ্চন হল সেই অপাত্র যাকে দান করা যায় না। চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি বিহারের শেখপুরা জেলার অভগিল গ্রামের।
বাবা রামেশ্বর যাদবকে এনিয়ে জিজ্ঞাসা করা হলে তাঁর সাফ জবাব, ওকে কে কিডনি দেবে, ও তো মেয়ে। মায়েরও একই বক্তব্য। বাবা-মায়ের এমন দৈত অবহেলায় মৃত্যুই যেন উচ্ছল কিশোরীর নিয়তি হয়ে গিয়েছে। দুটো বিকল কিডনি নিয়ে ধুঁকে ধুঁকে বাঁচছে সে, আর বাবা-মাকে দেখলে মনেই হবে না যে তাদের সন্তান মৃত্যুর দিন গুনছে। এমনই মনোভাব য়ে মেয়েকে বাঁচাতে সরকারি সাহায্যের জন্ও কোনও আবেদন নিবেদন করেনি তারা। প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিল তেকে দুস্থদের সাহায্যার্থে যে টাকাপয়সা বিতরণ হয় সেই সুযোগও চায়নি তারা।