লখনউ, ৪ ফেব্রুয়ারি: অযোধ্যার ধান্নিপুর গ্রামে নির্মিত হচ্ছে মসজিদ (Ayodhya Mosque)। সেই মসজিদ নির্মাণের তদারকিতে রয়েছে ইন্দো ইসলামিক কালচারাল ফান্ডেশন ট্রাস্ট। শোনা যাচ্ছে আগামী ৩০ মাসের মধ্যেই মসজিদ নির্মাণ সম্পূর্ণ হবে। ৫ একর জমিতে তিনটি প্রধান ভবন তৈরি হবে। সেখানে থাকবে মসজিদ, জাদুঘর ও হাসপাতাল। এই ধান্নিপুর থেকে ৪০ কিলোমিটার দূরত্বে অযোধ্যায় তৈরি হচ্ছে রামমন্দির যার কাজ শেষ হতে সময় লেগে যাবে ৩৯ মাস। এই প্রসঙ্গে ওয়াকফ বোর্ডের এক কর্তা জানিয়েছেন, “সমস্ত প্রশাসনিক কাজকর্মের পর শুরু হবে মসজিদ তৈরির কাজ। তারপর ছয় মাসের মধ্যে তা সম্পূর্ণ হবে। তবে হাসপাতাল তৈরি হতে ২ বছর লেগে যাবে।”
গত ২৬ জানুয়ারি মসজিদের প্রতীকী নির্মাণ শুরু হবে। সেদিন ৯ জন সদস্যদের মধ্যে ৬ জন বৃক্ষ রোপণ করেন ও পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে মসজিদ নির্মাণের কাজ শুরু হয়। শ্রমিকরা ইতিমধ্যেই মাটি পরীক্ষার কাজ শুরু করে দিয়েছেন। ৫ একর জমির তিন জায়গায় চলছে মাটি পরীক্ষার কাজ। যেখানে এই তিনটি ভবন তৈরি হতে চলেছে। ১৫ দিনের মধ্যে এই সংক্রান্ত রিপোর্ট আশা করা হচ্ছে। ইন্দো ইসলামিক কালচারাল ফান্ডেশনের সম্পাদক ও মুখপাত্র হুসেন বলেন, মাটি পরীক্ষার রিপোর্ট হাতে এলে মসজিদ নির্মাণের ম্যাপের অনুমোদনের জন্য অযোধ্যা পঞ্চায়েতকে চিঠি দেওয়া হবে। মসজিদ চত্বরে সবুজায়নের বন্দোবস্তও হবে। যেখানে ভারত-সহ বিভিন্ন দেশের গাছপালা থাকবে। এমনকী আমাজনের রেন ফরেস্ট থেকেও আনাহবে চারাগাছ। মসজিদ ও মিউজিয়াম সম্পূর্ণভাবে সৌরশক্তিতে চলবে। আরও পড়ুন-Mamata Banerjee On State Budget: আগামী কাল বাজেট পড়বেন মুখ্যমন্ত্রী, কিন্তু কেন?
সরকারি তরফে এই পাঁচ একর জমিতে ইন্দো-ইসলামিক কালচারাল রিসার্চ সেন্টার, মসজিদ ছাড়াও তৈরি হবে ২০০ বেডের সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতাল। ৫০ হাজার স্কয়্যার ফিটের মধ্যে ২০০ বেডের হাসপাতালটি থাকবে পাঁচতলা। মসজিদ কমপ্লেক্সের জন্য বরাদ্দ হয়েছে ২৪ হাজার স্কয়্যার ফিট। এই মসজিদ তৈরি হয়ে গেলে একসঙ্গে প্রায় ২ হাজার মুসলমান নামাজ পড়তে পারবেন। এছাড়া রিসার্চ সেন্টারের অধীনে এই জমিতেই তৈরি হবে বাগান, যাদুঘর, কমিউিকেশন সেন্টার ও গ্রন্থাগার। জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থাপত্য বিভাগের অধ্যাপক এসএম আখতার মসজিদের নকশা তৈরি করছেন। মূলত, ইস্তানবুল, কাতার, দুবাই, কোসোভোর মসজিদের অনুকরণেই তৈরি হবে এই মসজিদ। অধ্যাপক আখতার জানিয়েছেন, নতুন ভবন একদম আধুনিক কমপ্লেক্স হিসেবে গঠিত হবে। তবে গোটা প্রকল্পের নির্মাণে ঠিক কত খরচ পড়বে তা এখনও জানা যায়নি। দোতলা মসজিদের একটি পৃথক ফ্লোরের সবটা মহিলাদের নামাজের জন্য বরাদ্দ থাকবে। ট্রাডিশনাল মসজিদের মতো একেবারেই দেখতে লাগবে না। এই মসজিদে কোনও গম্বুজ বা খিলান থাকবে না।
মাটির তলায় তৈরি হবে যাদুঘর। কমপ্লেক্সের সঙ্গে থাকবে গ্রন্থাগারও। স্বাধীনতার আগে ১৮৫৭ সালের বিদ্রোহের পর থেকে স্বাধীনতার আগে পর্যন্ত দেশের হিন্দু ও ইসলামিক সম্প্রদায়ের মানুষ যে সাধারণ বাধা বিপত্তির সম্মুখীন হয়েছে তা এই মিউজিয়ামে প্রদর্শিত হবে। সমস্ত ফোকাস থাকবে জাদুঘরের দিকেই। ভারতীয় সাহিত্যে কবি আমীর খসরু, কবীর রাস খানের অবদান সম্পর্কিত তথ্যও থাকবে এই মিউজিয়ামে। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মসজিদ দেখতে আসা পর্যটকরা একই জায়গায় বিভিন্ন স্থাপত্যের স্বাদ পাবেন। এখানে একটি উপহারের দোকানও থাকবে, যেখানে অবাধি পোশাক বিক্রি হবে। থাকবে কাফে যেখানকার ঐতিহাসিক খাবারদাবার খাদ্য রসিকদের রসনা তৃপ্তিতে বড় ভূমিকা নেবে।