গুয়াহাটি, ২৭ মে: প্রকৃতি যেন ধ্বংসলীলায় মেতেছে। দেশের উত্তর থেকে দক্ষিণ, পূর্ব থেকে পশ্চিম প্রকৃতির চোখ রাঙানিতে বিপর্যস্ত। বিশ্বজুড়ে চলছে করোনাভাইরাস প্রতিরোধের লড়াই। ঘূর্ণিঝড় আম্ফানে লণ্ডভণ্ড বাংলা, পঙ্গপালের হানা ও তীব্র গরমের দাবদাহে জ্বলছে উত্তর ও মধ্য ভারত। উত্তরাখণ্ডের দাবানলে দাউ দাউ করে জ্বলছে আগুন। এরই মধ্যে অসমে হড়পা বানে বিপর্যস্ত অসম (Assam)। একটানা সাগরের জলীয় বাষ্পও ঢুকছে উত্তর-পূর্বের পাহাড়ে। আর তার জেরেই সাত জেলা অর্থাৎ লখিমপুর, তিনসুকিয়া, ধেমাজি, ডিব্রুগড়, দারাং, নলবাড়ি এবং গোয়ালপাড়ার দু’লক্ষেরও বেশি মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। বিপর্যস্ত ২২০টিরও বেশি গ্রাম, ৫৭৯ হেক্টর শস্যক্ষেত্র জলের তলায়।
#AssamFloodCorona Sandwiched between Corona and impending major flood due to continuous torrential rain post-Cyclone Amphan, Assam is heading for very tough times. pic.twitter.com/bEEIzlhHyx
— Mrinal Talukdar (@mrinaltalukdar8) May 24, 2020
গত সোমবারই করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ৫০০ ছাড়ায় অসমে। এরই মধ্যে সোমবার হড়পা বানের তাণ্ডব শুরু হয় অসমে। এখনও পর্যন্ত সবচেয়ে খারাপ অবস্থা গোয়ালপাড়ার। রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা দপ্তরের হিসাব অনুযায়ী, বন্যার জেরে ওই জেলার ১ লক্ষ ৬৮ হাজারেরও বেশি মানুষ ইতিমধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত। আপাতত ৩৩টি ত্রাণ শিবিরে ৯ হাজারেরও বেশি মানুষকে সরানো হয়েছে। এরই মধ্যে নতুন উদ্বেগ তৈরি করেছে কেন্দ্রীয় জল কমিশন। অসমে ব্রহ্মপুত্র নদ লাগোয়া শোনিতপুর ও জোরহাট জেলার নিয়ামাতি ঘাট এবং জিয়াভারালিতে বন্যা সতর্কতা জারি করে তারা। সোমবারই ফি-ঘণ্টায় ব্রহ্মপুত্রের জলস্তর ২ সেন্টিমিটার করে বেড়েছে বলে জানায় কমিশন। আরও কিছু নদী বিপদ্সীমার উপর দিয়ে বইছে। পরে জানা যায়, অসমজুড়েই তীব্র বন্যার সতর্কতা জারি করেছে তারা। আরও পড়ুন, উত্তরাখণ্ডে ভয়াবহ দাবানল, আগুনে পুড়ে ছাই ৭১ হেক্টর বনভূমি
২০ মে থেকে অসম ও মেঘালয়ের কিছু অংশে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টিপাত হচ্ছে। আবহাওয়া দপ্তর এ দিনও অতি ভারী বৃষ্টিপাতের সতর্কবার্তা দিয়ে রেখেছিল। ন্যাশনাল ওয়েদার ফোরকাস্টিং সেন্টার হেড কে সাথী দেবী বলেন, ‘আরও তিন দিন এমন বৃষ্টি হবে বলেই ধারণা।’ তিনি জানান 'আম্ফান' শক্তি হারিয়ে অসমের কাছে পৌঁছনো ও বঙ্গোপসাগর থেকে আসা আর্দ্র দখিনা-পশ্চিমি যৌথ সংযোগেই এই বৃষ্টি। তবে রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর এক আধিকারিক জানান, এই বৃষ্টিতে জলস্তর বাড়লেও পরিস্থিতি পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণের বাইরে বেরোবে এমন ভাবার কারণ নেই। তবে রাতের দিকে অবস্থার অবনতির খবর মেলে। একাধিক জায়গায় বিপদসীমা ছাড়ায় জলস্তর।