শ্রীনগর, ১০ সেপ্টেম্বর: গত ৫ আগস্ট ৩৭০ ধারা (Article 370) উঠে যেতেই জম্মু ও কাশ্মীর যেন সেনা ও পুলিশ চৌকিতে পরিণত হয়েছে। অশান্তি এড়াতে গোটা উপত্যকা জুড়ে চলছে অবিরত সেনার টহল দারি। ইদুজ্জোহা উপলক্ষে সেই কড়াকড়ি কিছুটা শিথিল হলেও মহরমে কিন্তু তার চিহ্ন মাত্র নেই। দৃশ্যত থমথমে গোটা কাশ্মীর, বেরল না কোনও তাজিয়া। ৫০০ মিটার অন্তর অন্তর সেনার তৈরি ব্যারিকেড। বিশেষ অধিকার খর্ব হওয়ার পর হামলার আশঙ্কা ছিল। আর এবার তো নিয়ন্ত্রণরেখা পেরিয়ে বিভিন্ন জায়গায় ঢুকে পড়েছে পাক জঙ্গি দল। পাক সেনার সহায়তায় বড়সড় নাশকতার চেষ্টা চলছে। তাইতো সাম্প্রতিক পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখেই মহরমের মিছিলের জন্য এ বার অনুমতি দেয়নি উপত্যকার প্রশাসন।
এমনিতেই ৩৭০ ধারা বিলোপের পর থেকে বার বার ঝামেলা বাধানোর চেষ্টা করে চলেছে পাকিস্তান। ওরা শুধু সুযোগ খুঁজছে, একবার পেয়ে গেলেই বড়সড় বিপদ তৈরি করবে। তাই নিরাপত্তার স্বার্থেই উপত্যকায় মহরমের মিছিলের জন্য অনুমতি দেয়নি কেন্দ্র। তবে এই ঘটনায় বাসিন্দাদের একাংশ বেশ ক্ষুব্ধ, তাঁদের বক্তব্য অমরনাথ যাত্রার জন্য যদি পর্যাপ্ত নিরাপত্তার বন্দোবস্ত কেন্দ্র করতে পারে, তবে মহরমের জন্য কেন তা করা হল না। যদিও প্রশাসনের তরফে এর কোনও উত্তর মেলেনি। ১৯৮৯ সালের আগে পর্যন্ত উপত্যাকায় মহরম হত কোনওরকম সন্ত্রাসের ভয় ছাড়াই। এরপর থেকেই ছবিটা বদলে যেতে শুরু করে। তবে এবার একেবারেই আলাদা। কোনও পুরনো বছরের সঙ্গেই এবারের মহরমকে মেলাতে পারছেন না কাশ্মীরিরা। স্থানীয়দের অনেকের মতেই, নয়ের দশকের কঠিন সময় বা তার পরেও মহরমের দিন এমন ছবি কাশ্মীরে (Muharram in Kashmir) দেখা যায়নি। ঠিক সে কথাই উঠে এসেছে জাদিবাল এলাকার বাসিন্দা সত্তর বছরের অবসরপ্রাপ্ত সরকারি অফিসার গুলাম হুসেনের কথায়। নিরাপত্তার কড়াকড়ি নিয়ে এক রাশ অভিযোগ তাঁর গলায়। তিনি বলেন, ‘‘আমাদের ওষুধপত্র বা অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র আনতে যেতেও অনুমতি দেওয়া হচ্ছে না।’’ আরও পড়ুন-সীমান্তে অনুপ্রবেশের সময় ভারতীয় সেনার হাতে খতম পাক জঙ্গি ও সেনার দল, প্রকাশ্যে সেই ভিডিও
উপত্যকার বর্তমান পরিস্থিতির উপর নজর রেখেই যে কোনও ধরনের জমায়েত বা শোভাযাত্রা নিষিদ্ধ করা হয়েছে। স্থানীয়দের অনেকেই মূল রাস্তাকে বাদ দিয়েই এলাকায় ছোট ছোট জমায়েতের প্রস্তুতি নিয়েছিলেন। কিন্তু, রবিবার সে সবের উপরেও নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে প্রশাসন।