নয়া দিল্লি, ৩ সেপ্টেম্বর: সংবিধানের ৩৭০ ধারা রদের পর উপত্যকায় সমস্যা হতে পারে। বাড়তে পারে হিংসার ঘটনা। এই আশঙ্কায় গত ৫ আগস্ট থেকে গোটা জম্মু ও কাশ্মীরে বন্ধ করে দেওয়া হয় ফোন ও ইন্টারনেট পরিষেবা। তবে দিন ১০-১২-র মধ্যেই একটু একটু করে সরকারি অফিস স্কুল খুললেও এই কমিউনিকেশন ব্ল্যাক আউট কিন্তু এখনও কাশ্মীরে বলবৎ রয়েছে। মঙ্গলবার কাশ্মীরি প্রতিনিধিদের একটি দল স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ-র (Union Home Minister Amit Shah) সঙ্গে দেখা করতে দিল্লিতে আসে। সেই প্রতিনিধি দলকেই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বললেন, আগামী ১৫ দিনের মধ্যেই কাশ্মীর সহ উপত্যকায় আর কমিউনিকেশন ব্ল্যাক আউট থাকবে না।
জম্মু ও কাশ্মীরের স্পেশ্যাল স্টেটাস কেড়ে নিয়েছে ভারত সরকার। তাও প্রায় একমাস হতে চলল। এই ঘটর পর প্রথম কোনও কাশ্মীরি প্রতিনিধির (Kashmiri delegation) দল দিল্লিতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে এল। এই প্রতিনিধি দলে ছিলেন উপত্যকার বিভিন্ন গ্রামের মোট ২২জন পঞ্চায়েতের প্রধান ও নেতারা। গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে যাঁরা জঙ্গি আক্রমণের ভয়কে তুচ্ছ করে সাহসিকতার সঙ্গে নির্বাচনে লড়েছেন। জয়ী হয়েছেন। এঁদের প্রত্যেকের জন্যই দুলক্ষ টাকার অঙ্কের জীবনবিমার কথা ঘোষণা করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। এদিকে কাশ্মীরে ৩৭০ ধারা (Article 370) তুলে দিয়ে জম্মু ও কাশ্মীরকে এক কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল ও লাদাখকে পৃথক কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল হিসেবে ঘোষণা করেছে কেন্দ্র। তারপর থেকেই কড়া সেনা নিরাপত্তার চাদরে ঢেকেছে কাশ্মীর। যোগাযোগের সমস্ত ব্যবস্থাও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। টেলিফোন, মোবাইল, ইন্টারনেট পরিষেবা কিছুই সেখানে নেই এমনকী, টিভিও চলছে না ঠিকমতো। পরিস্থিতির উন্নতি পর্যালোচনা করে ৯২টি থানা এলাকায় দিনের বেলায় নিরাপত্তার কড়াকড়ি কিছুটা শিথিল হয়েছে। এমনটাই প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে। এর জেরে উপত্যকার ৯০ শতাংশ জায়গায় দিনের বেলা ততটাও সেনা টহলদারি নেই বললেই চলে। আগে ৮২টি থানা এলাকা থেকে কার্ফিউ শিথিল করা হয়েছিল। গত সপ্তাহে তা বেড়ে ৯২টি এলাকা হয়েছে। এদিন এমনটাই বললেন জম্মু ও কাশ্মীরের প্রিন্সিপাল সেক্রেটারি রোহিত কনসল (Rohit Kansal)। আরও পড়ুন-Jammu And Kashmir: বড় ঘোষণার প্রায় এক মাস পর দুই প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী-ওমর আবদুল্লা, মেহবুবা মুফতি-র সঙ্গে পরিবারের দেখা হল
রোহিত কনসল একাধারে উপত্যকার সরকারি মুখপাত্রও বটে। তিনি এদিন সেখানকার ল্যান্ডলাইন টেলিফোনের বিষয়ে বিশদ আলোচনা করেন। বলেন, ২৯টি টেলিফোন এক্সচেঞ্চ কাজ রা শুরু করবে। এমনিতেই উপত্যকায় ৯৫টি টেলিফোন কেন্দ্র রয়েছে, তারমধ্যে ৭৬টি কাজ করা শুরু করলে ভূস্বর্গের ২৬ হাজার ল্যান্ড ফোনের পরিষেবা পুনরায় চালু হয়ে যাবে। তিনি আরও লেন। লাদাক, জম্মু ও কাশ্মীরে যাবতীয় ল্যান্ড লাইন ও মোবাইল ফোনের পরিষেবা চালু হল বলে। সরকারি অফিসগুলোতে অচলায়তন কেটে পুরোদমে কাজকর্ম শুরু হয়েছে। প্রাথমিক, উচ্চপ্রাথমিক, হাইস্কুল গুলিতেও নিয়মিত ক্লাস নিচ্ছেন শিক্ষকরা। পড়ুয়াদের উপস্থিতির হারও দিনের পর দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। যা সন্তোষজনক ছবির ইঙ্গিত দেয়। যেসব রাজনৈতিক নেতারা বন্দিদশায় রয়েছেন, পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে তাঁদের দেখা করার ব্যবস্থাও করা হয়েছে।