টলি পাড়ায় নতুন তারকার অভাব নেই, বর্তমানে বাণিজ্যিক ছবির পাশপাশি প্যারালাল ছবিও এখানে তৈরি হচ্ছে।এখন দুই ধরনের দর্শক টলিউডকে(Tollywood) ফলো করে। এই দর্শকদের একটা ভাগ কিন্তু ওপার বাংলা অর্থাৎ বাংলাদেশের(Bangladesh) বাসিন্দা।তাইতো বাংলাদেশের অভিনেতা অভিনেত্রীরাও টলিপাড়ায় এসে চুটিয়ে কাজ করছেন।অভিনয় দক্ষতায় শিরোপাও জিতে নিয়েছেন কেউ কেউ।আজকের প্রতিবেদনে রইল তেমনই পাঁচজনের কথা।
জয়া আহসান(Jaya Ahsan)
শুধু সুন্দরী নন অভিনয় দক্ষতাতেও টলি ইন্ডাস্ট্রিকে প্রায় কাঁপিয়ে দিয়েছেন এই বাংলাদেশি অভিনেত্রী।নয়ের দশকের মাঝামাঝি মডেলিং দিয়েই জয়ার কেরিয়ার শুরু।তাঁর ডেবিউ ছবি ‘ডুব সাঁতার’।তিনি যে লম্বা রেসের ঘোড়া তা এই ছবিতে বুঝিয়ে দিয়েছেন।মুক্তিযুদ্ধের প্রেক্ষাপটে তৈরি ‘গরিলা’(Guerrilla),জয়ার দ্বিতীয় ছবি তাঁকে এনে দিল জাতীয় পুরস্কার।এই অল্প সময়েই দুটি জাতীয় পুরস্কার রয়েছে অভিনেত্রীর ঝুলিতে।প্রতিবেশী দেশের প্রতিভাবান অভিনেত্রীর গল্প টলিপাড়ায় ঢেউ তুলল একে একে অভিনয় করলেন ‘আবর্ত’, ‘রাজকাহিনী’, ‘বিসর্জন’(Bishorjon), ‘বিজয়া’(Bijoya), ‘একটি বাঙালি ভূতের গল্প’, এখন ‘কান্থো’র- শ্যুটিং চলছে।সৃজিত মুখোপাধ্যায়, কৌশিক গাঙ্গুলির( Kaushik ছবিতে জয়া এখন লিড রোলে থাকেন।বুঝতেই পারছেন এই সুন্দরী বঙ্গললনা অদূর ভবিষ্যতে কোন মাইল ফলক গড়তে চলেছেন।
মাহিয়া মাহি(Mahiya Mahi)
লাস্যে ভরপুর দুটি চোখ যেন না চাইতেই অনেক কিছু বলে ফেলে।সৌন্দর্যের সঙ্গে প্রতিভা বাণিজ্যিক ছবির তুরুপের তাস হলেন মাহিয়া মাহি।এই মুহূর্তে ঢাকা-সহ সমগ্র বাংলাদেশের হার্টথ্রব তিনি।সেই জনপ্রিয়তায় মাতল টলিউডও।২০১২-তে মুক্তি পাওয়া ‘ভালবাসার রং’ (Valobasar Rong)তাঁর ডেবিও ফিল্ম(Debut film)।এই ছবিতে মাহির অভিনয় সাড়া জাগিয়েছিল, এমন বক্স অফিস হিট অভিনেত্রীকে হাতছাড়া করতে চায়নি টলিপাড়া।তাই মাহির দ্বিতীয় ছবি কলকাতাতেই, ‘রোমিও ভার্সেস জুলিয়েট’।তুখোড় অভিনয়ে পরিচালক ও প্রযোজনা সংস্থার মন কাড়লেও পশ্চিমবঙ্গের দর্শক মাহিকে গ্রহণ করেনি।সৌন্দর্যের ছাপ মনে রেখে গেলেও ফের স্বমহিমায় ফিরতে দেশেই পাড়ি দেন মাহি।বর্তমানে বেশ কয়েকটি ছবির কাজ রয়েছে তাঁর হাতে।
কুসুম শিকদার(Kusum Sikder)
মডেল থেকে রুপোলী পর্দার নায়িকা হয়ে ওঠা বাংলাদেশে নতুন কোনও ব্যাপার নয়। তবে বাণিজ্যিক ছবিতে নাম করলেও এই অভিনেত্রীদের মধ্যে খুব অল্পসংখ্যাকই প্যারালাল ছবিতে চুটিয়ে অভিনয় করছেন।তাঁদের মধ্যে অন্যতম হলেন কুসুম শিকদার।রুপোলী পর্দার তারকা হওয়ার আগে সংগীত শিল্পী হিসেবেই বাংলাদেশে নিজের কেরিয়ার শুরু করেছিলেন কুসুম।বিভিন্ন শো করে যখন জনপ্রিয়তার মধ্যগগনে, তখনই টেলিভিশনে অভিনয়ের সুযোগ পেয়ে যান।কোনও এক শুভাকাঙ্খীর ইচ্ছেতে নাটকে অভিনয় করেন।গান থেকে মডেলিং সেখান থেকে টেলিভিশন সেলুলয়েড কুসুমকে টানছিল।দেরি না করে অভিনয়টা চুটিয়েই করলেন, ‘লঞ্চপ্যাড’, ‘গহীনের শব্দ’-এর মতো ছবি কুসুম শিকদারকে জাতীয় পুরস্কারের সম্মাননা এনে দিল।এই সূত্র ধরেই টলিপাড়ার প্রখ্যাত পরিচালক গৌতম ঘোষের নজরে পড়ে যান।তাঁর আপকামিং ছবি গৌতম ঘোষের শঙ্খচিল, যেখানে টলিস্টার প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়ের বিপরীতে অভিনয় করছেন তিনি।গৌতম ঘোষকে টলিপাড়ায় একমাত্র ভাগ্য করেই ডেবিউ ফিল্মের পরিচালক হিসেবে পাওয়া যায়।সেক্ষেত্রে কুসুম শিকদার তো সৌভাগ্যের বরপুত্রী।
সোহানা সাবা(Sohna Saba)
এই বাংলাদেশী অভিনেত্রী যেন ঘোড়ায় জিন দিয়ে অভিনয় জগতে পা রেখেছেন।যেই ছবিতে কাজ করেছেন প্রযোজনা সংস্থা মালামাল হয়ে গিয়েছে।বক্স অফিস হিট যেন সোহানার পায়ে পায়ে ঘোরে।তাই ঢালিউডের পরিচালকরা এই নিউ কামারকে ছবিতে নেওয়ার জন্য ব্যস্তই থাকেন।টেলিভিশনে হাতখড়ি হলেও খুব শিগগির ছবিতে সুযোগ পেয়ে যান সোহানা।তাঁর উল্লেখযোগ্য ছবির মধ্যে রয়েছে ‘খেলাঘর’, ‘ডলহাউস’, ‘চন্দ্রগ্রহণ’, ‘প্রিয়তমেসু’।মনকাড়া অভিনয় দক্ষতায় সমসাময়িকদের বেশ খানিকটা এগিয়ে থাকা সোহানা যেন ছবির পর্দায় স্বপ্ন বোনেন।তাঁর অনন্য বুনট শুধু গল্পে নয়, শরীরি বিভঙ্গেও ঝড় তোলে।এই মুহূর্তে টলিপাড়ার পরিচালক অয়ন চক্রবর্তীর(Ayan Chakravarty) ছবিতে অভিনয় করছেন তিনি।অয়নবাবুর ডেবিও ছবি হতে চলছে ‘ষড়রিপু’, যেখানে কলকাতার এক ঝাঁক নামী তারকার পাশে নিজগুণে জায়গা করে নিয়েছেন সোহানা।
ফিরদৌস(Ferdous Ahmed)
এই মুহূর্তে একেবারে হাতে গরম খবর অভিনেতা ফিরদৌস, তবে কোনও ছবির জন্য নয়।এরাজ্যে উত্তরবঙ্গে নির্বাচনী প্রচারে ছিলেন তিনি।সেই অপরাধেই শ্যুটিংয়ের কাজ বাকি রেখেই তাঁকে দেশে ফিরতে হয়েছে।১৯৯৮ সালে দুই বাংলার যৌথ প্রযোজনায় মুক্তি পায় ছবি ‘হঠাং বৃষ্টি’।সেখানেই ফিরদৌসের অভিনয়দক্ষতা ঢালিউডকে চমকে দিয়েছিল।এরপর থেকে দুই বাংলাতেই চুটিয়ে কাজ করছেন তিনি।জাতীয় পুরস্কার প্রাপ্ত অভিনেত্রী ঋতুপর্ণা সেনগুপ্তের সঙ্গে জুটি বেঁধে টলি পাড়ার বক্স অফিস হিট বাণিজ্যিক ছবির তালিকা নেহাত কম নয়।সৃজিতের ‘ইয়েতি অভিযানে’ও ফিরদৌসকে দেখা গিয়েছে।সম্প্রতি শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের (Saratchandra Chatterji)রচনা অবলম্বনে পরিচালক নির্মল চক্রবর্তী ছবি ‘দত্তা’(Datta)-তে বিনোদবিহারী চরিত্রে অভিনয় করছেন তিনি। বিপরীতে রয়েছেন সেই ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত(Rituparna Sengupta)।