কলকতা, ২০ জুন: বলিউডের পর স্বজনপোষণ (Nepotism) নিয়ে অভিযোগ উঠছে টলিউডেও (Tollywood Film Industry)। টালিগঞ্জে স্বজনপোষণ নিয়ে শুক্রবারই সরব হয়েছেন শ্রীলেখা মিত্র (Sreelekha Mitra)। স্বজনপোষণ প্রসঙ্গে বাংলা ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির একাধিক ব্যক্তিত্বের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগড়ে দিয়েছেন অভিনেত্রী। যেখানে প্রসেনজিৎ-ঋতুপর্ণা ছাড়াও উঠে এসেছেন সৃজিত সহ একাধিক জনের নাম। আর এর ঠিক পরদিন, শনিবার সোশাল মিডিয়ায় এনিয়ে মুখ খুললেন স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায় (Swastika Mukherjee)।
নিজের ইউটিউ চ্যানেলে সুশান্ত সিং রাজপুতের মৃত্যুর ঘটনায় তাঁর খারাপ লাগার কথা তুলে ধরেন শ্রীলেখা মিত্র। পাশাপাশি, তাঁর ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতার কথাও জানান। শ্রীলেখা বলেন, ''ইন্ডাস্ট্রিতে আমারও কেউ নেই। সেই কারণেই হয়ত আমি বিষয়টি অনুভব করতে পারছি। আমি কারোর তাঁবেদারি না করে, নিজের যোগ্যতায় কাজ করেছি। কারণ, এই শিল্পটাকে আমি ভালোবাসি। এমন নয় যে আমি পড়াশোনায় খারাপ ছিলাম, আমার কিছু হওয়ার ছিল না বলে এসেছি। আমার বাবা আমায় টলিগঞ্জে বিভিন্ন জায়গায় নিয়ে যেতেন। প্রথমে ওড়িয়া ছবি, সিরিয়াল দিয়ে কাজ শুরু করি, প্রথমেই যে আমায় সিনেমায় সুযোগ দিয়েছে এমনটা নয়। এই ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে শুধু মেয়েরাই অযাচিত ঘটনার শিকার হন, এমনটাও নয়, ছেলেরাও হন। এখানে ক্ষমতা কথা বলে। এই যে মিটু, যৌন হেনস্থা, কাস্টিং কাউচের কথা শোনেন সেটা সবটাই ক্ষমতার ব্যবহার। কোনও নায়ক, পরিচালক, প্রযোজক, যাঁদের ক্ষমতা রয়েছে, তাঁরা অনেকসময়ই ক্ষমতার ব্যবহার করেছেন। সেটা অপব্যবহার, নাকি অন্যকিছু, তা ওপর দিকের মানুষটির উপর নির্ভর করছে। তবে যাঁদের বাবা-মা বা কেউ এই ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে ছিলেন না, তাঁদের পক্ষে এটা খুবই মুশকিল। এখনকার মতো তখন সিরিয়ালগুলির দৌলতে এত সহজে সুযোগ পাওয়া যেত না।'' আরও পড়ুন: Sonu Nigam: 'মিউজিক ইন্ডাস্ট্রিতেও হতে পারে আত্মহত্যা', নেপোটিজমের ঝড়ে মুখ খুললেন সোনু নিগম
তাঁর কথায়, ''এই ইন্ডাস্ট্রিতে গডফাদার খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। গডফাদার হলেন সেই ব্যক্তি, যিনি কোনও কিছুর বিনিময়ে তোমায় কাজ পাইয়ে দেবেন। আমার সেই অর্থে কোনও গডফাদার ছিল না। সেসময় মূলত, প্রসেনজিৎ, চিরঞ্জিত, তাপস দা (তাপস পাল) এরাই মূলত ইন্ডাস্ট্রি চালাত। তার মধ্যে বুম্বাদা (প্রসেনজিৎ) নম্বর ওয়ান, তিনি ইন্ডাস্ট্রি। সেসময় আমাকে প্রথমেই নায়িকার চরিত্র দেওয়া হয়নি। পার্শ্ব চরিত্রই করতে হয়েছে। আমার যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও। কারণ, তখন ঋতুপর্ণার সঙ্গে প্রসেনজিৎ-এর প্রেম। কারণ, মূলত বুম্বাদাই ইন্ডাস্ট্রি চালাত।
আজ এই বিষয়ে কারোর নাম না করে নিজের পোস্টে প্রশ্ন তুলে স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায় লেখেন, ''ছোট্ট প্রশ্ন। যখন কোন অভিনেত্রী কোন পরিচালকের সঙ্গে এক বা একের বেশি ছবি করে তখন বলা হয় সে শুয়ে বা প্রেম করে কাজটা পেয়েছে। বেশ। তা আমি এক পরিচালকের সঙ্গে তার জীবনের ১৭টা ছবির মধ্যে আড়াইখানা ছবি করেছি (২টি মুখ্য চরিত্র, ১টি অতিথি শিল্পী)। কিন্তু যেহেতু এই পরিচালকের সঙ্গে সৌমিক হালদার ১১টা, অনুপম রায় ৯টা, প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায় ৭টা, যীশু সেনগুপ্ত ৭টা, অনির্বাণ ভট্টাচার্য ৬টা এবং পরমব্রত চট্টোপাধ্যায় ৬টা কাজ করেছেন, তারা নিশ্চয় আরো বেশি করে শুয়ে আর প্রেম করে কাজগুলো পেয়েছেন? এনারা তাহলে সবাই উভকামী ও সুযোগসন্ধানী? যুক্তি তো সবার ক্ষেত্রেই এক হওয়া উচিৎ, তাই না? নাকি নিজের খামতি ঢাকতে স্লাটশেমিং শুধু আমাদের মত 'কুযোগ্য' অভিনেত্রীদের করা হবে যারা একেবারেই অভিনয়টা পারেনা?