Movie Review: 'মহিলা পুরোহিত', 'পিরিয়ডস', 'কন্যাদান'......অসাম্য-ট্যাবুর মুখে সপাটে চড়ের নাম 'ব্রহ্মা জানেন গোপন কম্মটি'
একটি ট্রেলার মুক্তি আর সেই নিয়ে নতুন চিন্তা, নতুন চর্চা। সদ্য ঋতুস্রাব হওয়া মেয়েরা কি ছবিটি দেখার পর একবারও শবরীর মতো হয়ে ওঠার স্বপ্ন দেখবে? নাকি সমাজ তাকে ধাক্কা দিয়ে আবার কয়েক যুগ পিছনে ঠেলে ফেলে দেবে? পুরোহিত, তাও আবার মেয়ে। এই বেমানান বৈষম্যতাকে ভেঙে সাম্য এনে মানানসই করে তোলার একটা ছোট্ট প্রয়াস হল 'ব্রহ্মা জানেন গোপন কম্মটি'।
একটি ট্রেলার মুক্তি আর তা নিয়ে নতুন চিন্তা, নতুন চর্চা। সদ্য ঋতুস্রাব হওয়া মেয়েরা কি ছবিটি দেখার পর একবারও শবরীর মতো হয়ে ওঠার স্বপ্ন দেখবে? নাকি সমাজ তাকে ধাক্কা দিয়ে আবার কয়েক যুগ পিছনে ঠেলে ফেলে দেবে? পুরোহিত, তাও আবার মেয়ে। এই বেমানান বৈষম্যতাকে ভেঙে সাম্য এনে মানানসই করে তোলার একটা ছোট্ট প্রয়াস হল 'ব্রহ্মা জানেন গোপন কম্মটি' (Brahma Janen Gopon Kommoti)।
ছবির প্রতিটি প্রশ্ন অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক। ২০২০-তে দাঁড়িয়ে কেন মেনে চলতে হবে পুরোনো পচা-গলা কিছু নিয়ম? যা কিনা যুক্তিহীন? শবরী সেই প্রশ্নটা করতে শেখায়। দেশের হাজার হাজার শবরীকে সাহসটা করতে হবে। প্রশ্ন করতে হবে। মুখ খুলতে হবে। সমাজের মেয়েদের বাঁচাতে গেলে মেয়েদেরই উদ্ধার করতে হবে। ঠিক যেমনটা করতে পেরেছে শবরীর গোঁড়া শাশুড়ি। আরও পড়ুন, 'বিশ্বকাপ হাতে কপিল দেব', ৮৩'র ঐতিহাসিক মুহূর্তের ছবি শেয়ার করে যেন টাইম ট্রাভেল করালেন রণবীর সিং
পুরুষতান্ত্রিক সমাজ নারীদের দমিয়ে রাখছে কথাটা পুরোপুরি সত্যি নয়, তা প্রমাণ করে দেয় শবরীর ভাসুর, শ্বশুর, বর। ভাসুরের ভরসা, বরের ভালোবাসা আর শ্বশুরের সাহস শবরীকে আরও আত্মবিশ্বাসী করে তোলে। ভন্ড সাধুর চোখ রাঙানি যে আত্মবিশ্বাসের কাছে হার মেনে যায়। পুরোহিত- যিনি পুরোটাই হিত করবেন সংসারে, সমাজে, তিনি পুরুষ না হলে চলে? এই ধারণায় একটা সপাটে চড় কষিয়েছেন রিয়েল লাইফ শবরীর ওরফে নন্দিনী ভৌমিক।
সমাজসেবিকা এবং অধ্যাপিকা মানবী বন্দোপাধ্যায় এ বিষয়ে একটি দামি মত রেখেছেন,"মহিলাদের কাছার দরকার হয় না। মহিলারা তো ঊর্ধ্বলিঙ্গম বিরুপাক্ষম নন। লিঙ্গত্থানের মুখে বৃথা লাগাম হল কাছা। মহিলা যেহেতু লিঙ্গখাদিকা 'যোনি', তাই তার কাছার বৃথা বন্ধনের প্রয়োজন নেই।" পুরোহিতের কোনও চিহ্ন হয় না, পৌরোহিত্যের কোনও লিঙ্গ হয় না।পরিচালনা নিয়ে খুব একটা আলোচনা না হলেও
পরিচালকের অসামান্য ভাবনা ছবিটিকে আরও সুদৃঢ় করেছে। বিশেষ করে ন্যাপকিনের স্টিকার বাতাসে উড়ে পাখনা মেলেছে- এমন দৃশ্য সত্যিই অভাবনীয়। ন্যাপকিনের পলকা স্টিকার 'থাকবো নাকো বদ্ধ ঘরে দেখব এবার জগৎটাকে' গাইতে গাইতে যেন উড়ে চলেছে। শবরীর জয়। ছবির মধ্যে দিয়ে পেশার আরেকটি দিক আরও বৃহৎভাবে খুলে গেল। ইচ্ছে হলেই মেয়েরা যে পৌরোহিত্যকে পেশা করতে পারেন, তার পথ একপ্রকার করে দিয়ে গেলেন আসল শবরী। ছবিটি দেখার পর শবরীমালার ভাবনা আসলে, শবরীও মনের কোণায় একবার উঁকি দিয়ে যাবে। সাম্যের জন্য লড়তে হবে। সমস্ত ট্যাবু আজ থেকে ভেঙে চুরে ছাড়খার হয়ে যাক। গাওয়া যাক নতুন জয়গান।