বছর তিনেক আগের ঘটনা। মালদার কালিয়াচকে ছেলের হাতে পরিবারেই চার সদস্যের রহস্যজনক মৃত্যুর ঘটনার খবরে আঁতকে উঠেছিল গোটা দেশ। পুরো ঘটনা যখন সামনে এসেছিল তখন অনেকেরই হাত কপালে উঠেছিল। মালদার কালিয়াচকের সেই হত্যাকাণ্ড এবার উঠে আসছে টলিউডে। পরিচালক রাতুল মুখোপাধ্যায় কালিয়াচকে অভিযুক্ত আসিফ কাণ্ড নিয়ে বাংলা সিনেমা করলেন। সিনেমার নাম 'কালিয়াচক চ্যাপ্টার ১'। আগামী মাসেই রিলিজ করার কথা সিনেমাটির। সাহসী পদক্ষেপ নিয়ে তৈরি করা এই সিনেমাটির প্রযোজক 'সাহি বাংলা ফিল্মস'। ছবির ড্রিস্টিবিউশন পার্টনার 'কলকাতা ফিল্মস'।
২০২১ সালের ১৯ জুন মালদার কালিয়াচকে হাড়হিম করা হত্যাকাণ্ডের ঘটনা সামনে আসে। গত ১৮ ফেব্রুয়ারি নিজেদের বাড়ির দেওয়াল লাগানো নির্মীয়মাণ গুদামঘরে পরিবারের পাঁচ সদস্যকে জলে ডোবানোর পর শ্বাসরোধ করে খুন করার চেষ্টা করেছিল আসিফ ইকবাল নামের এক ব্যক্তি। ভাগ্যচক্রে সঠিক সময়ে ঘুমের ওষুধের প্রভাব কেটে যাওয়ায় প্রাণে বেঁচে যান তার দাদা আরিফ মোহম্মদ। এই হাড়হিম করা ঘটনাটিকে সিনেমার পর্দায় ফুটিয়ে তুলেছেন পরিচালক রাতুল মুখোপাধ্যায়। আরও পড়ুন-Prosenjit Chatterjee: ছেলের সাফল্যে আনন্দে আত্মহারা বাবা, মিশুককে নিয়ে কী কারণে গর্বিত প্রসেনজিৎ?
বাস্তবের হাড়হিম করা কোনও অপরাধমূলক ঘটনা সিনেমার পর্দায় নিয়ে আসাটা হলিউডের পর বলিউডেও এখন অভ্য়াসে পরিণত হয়েছে। কিন্তু বাংলার চলচ্চিত্র নিমার্তারা এই বিষয়ে অনেকটাই পিছিয়ে। কালিয়াচক চ্যাপ্টার ওয়ান-এর পরিচালক রাতুল চ্যালেঞ্জটা নিচ্ছেন।
সিনেমায় মহিলা পুলিশের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় পরিচালক রাতুল মুখোপাধ্যায়ের স্ত্রী রূপাঞ্জনা মিত্র। পরিচালক-অভিনেত্রীর সদ্য বিবাহ হয়। এই ঘটনার মূল অভিযুক্ত 'আসিফ ইকবাল চরিত্রে দেখা যাবে নতুন অভিনেতা অসীমকে। রূপাঞ্জনা ছাড়াও 'কালিয়াচক চ্যাপ্টার ১'-এ দেখা যাবে পার্থ সারথী, দেবপ্রসাদ হালদার, দেবপ্রতিম দাশগুপ্ত-কে। বাস্তবের ঘটনা থেকে সিনেমার পর্দার ফুটিয়ে তোলার কাহিনিটি লিখেছেন অতনু তনুজ ঘোষ। জুনের শেষের দিকে মুক্তি পেতে চলেছে রাতুল মুখোপাধ্যায় পরিচালিত এই সিনেমা। ছবির প্রচারের জন্য অভিনব পোস্টার শহরের বেশ কিছু জায়গায় নজরে আসছে। খবরের কাগজের পাতার মোড়কে করা হয়েছে এই অভিনব পোস্টার। টিজার, ট্রেলার, রিলিজ-তিনটি ক্ষেত্রেই ছবির পোস্টারে আলাদা আলাদা চমক রাখা হয়েছে।
কী ঘটেছিল কালিয়াচকে: ২০২১ সালের ১৯ জুন কালিয়চকের হাড়হিম করা ঘটনা সামনে আসে। তবে সেটা ঘটেছিল মাস চারেক আগে। ১৮ ফেব্রুয়ারি নিজেদের বাড়ির দেওয়াল লাগানো নির্মীয়মাণ গুদামঘরে পরিবারের পাঁচ সদস্যকে জলে ডুবিয়ে, শ্বাসরোধ করে খুন করার চেষ্টা করে আসিফ। ভাগ্যচক্রে সঠিক সময়ে ঘুমের ওষুধের প্রভাব কেটে যাওয়ায় প্রাণে বেঁচে যান তার দাদা আরিফ মোহম্মদ।
ভাই আসিফের খুনের হাত এড়িয়ে কোনওরকমে পালিয়ে যান আরিফ। পরে মামার পরামর্শে ঘটনার চার মাস পর তিনি কালিয়াচক থানায় গিয়ে গোটা ঘটনার বর্ণনা দেন। ২০২১ সালের ১৯ জুন ওই গুদামের মেঝে খুঁড়ে চারটি পচাগলা দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। দেহগুলি আসিফের বাবা-মা, বোন ও ঠাকুমার। পুলিশি জেরায় আসিফ নানা কথা বলে পুলিশকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করে। যদিও পরে পুলিশের চাপে আসিফ বেশ কিছু তথ্য তদন্তকারী অফিসারদের জানায়। আসিফকে নিয়ে ঘটনার পুনর্নির্মাণও করেন পুলিশকর্তারা।