ইমরান খান(Photo Credit: Facebook)

ইসলামাবাদ, ১৩ সেপ্টেম্বর: ‘আফগানিস্তানে তালিবানদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছে আমেরিকা। আর সেই যুদ্ধের জের এসে পড়েছে প্রতিবেশী পাকিস্তানের উপরে। এই যুদ্ধ যেমন প্রচুর প্রাণহানি ঘটিয়েছে, একই সঙ্গে আর্থিক ক্ষয়ক্ষতিও কম হয়নি। সেই ক্ষতির জের এখনও টেনে চলেছে পাকিস্তান। যুদ্ধ করেও যখন আফগানিস্তানে আমেরিকা জিততে পারল না, তখনও তার দায়ভার পাকিস্তানের উপরে চাপিয়ে দেওয়া হল। এটা কিন্তু পাকিস্তানের সঙ্গে ঘোরতর অন্যায় করা হচ্ছে, যা মেনে নেওয়া যায় না।’ মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তালিবান নেতা ও আফগান নেতাদের সঙ্গে একটি গোপন বৈঠক পিছিয়ে দিয়েছেন। তারপরই এনিয়ে সরব হলেন ইমরান খান। শুক্রবার তাঁকে আফগানিস্তানে যুদ্ধ নিয়ে আমেরিকার বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিতে দেখা গেল।

এদিন ইমরান খান ক্ষোভের সঙ্গে বলেন, ‘আফগানিস্তানের যুদ্ধে আমরা ৭০ হাজার পাকিস্তানিকে হারালাম। আরথিক ক্ষতির পরিমাণ ছাড়াল ১০০ বিলিয়ন ডলার। তারপরেও কিনা আফগানিস্তানে আমেরিকা জিততে না পারার কারণ হিসেবে পাকিস্তানের দিকেই আঙুল উঠছে। আমি মনে করি এটা পাকিস্তানের সঙ্গে অন্যায্য আচরণ করা হচ্ছে।’ ১৯৮০-র ইতিহাস ঘাঁটতে গিয়ে ইমরান খান অভিযোগ করেন, আমেরিকার প্ররোচনায় সোভিয়েত সেনাদের বিরুদ্ধে জেহাদি হামলা চালানোর জন্য পাকিস্তান মুজাহিদিন জঙ্গি গোষ্ঠীকে তৈরি করে প্রশিক্ষণ দিয়েছে। আর সোভিয়েত ইউনিয়নকে পর্যুদস্ত করে এই মুজাহিদিনদের যাবতীয় খরচের টাকা দিয়েছে মার্কিন গুপ্তচর সংস্থা সিআইএ। এদিকে সোভিয়েত ইউনিয়নের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করা মুজাহিদিনদের আবার সন্ত্রাসী হিসেবে দাগিয়ে দিয়েছে সেই আমেরিকাই। যখন আবার আফগানিস্তানে  ( Afghanistan) তালিবানদের উপরে হামলা করার জন্য মার্কিন সেনা পৌঁছাল, তখন পাকিস্তানকে  (PAKISTAN) নিরপেক্ষতা অবলম্বন করতে বলা হল। একই সঙ্গে তালিবানদের বিরুদ্ধে এই যুদ্ধে মার্কিন সেনাকে সহযোগিতার জন্য পাক সেনাদের আহ্বান করা হল। তিনি ফের বলেন, ‘এই ঘটনা একটা বড়সড় বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। সত্যি সত্যিই পাকিস্তানকে এই যুদ্ধের সময় নিরপেক্ষ অবস্থান নেওয়া উচিত ছিল, এখন আমি তা দৃঢ়ভাবে মনে করি। কেননা মার্কিন সেনার সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়াই করতে গিয়ে পাক সেনারা আজ বিপর্যস্ত। আফাগানরা এখন আমাদের বিরুদ্ধে চলে গিয়েছে।’

ক্ষোভ উগরে দিয়ে ইমরান  (Imran Khan) বলেন, ‘১৯৮০ সালে যখন সোভিয়েত ইউনিয়ন আফগানিস্তানকে দখল করে রেখেছে তখন আমরা জেহাদের জন্য মুজাহিদিনদের প্রশিক্ষণ দিয়েছি। সুতরাং এই লোকগুলো পাকিস্তানের দ্বার প্রশিক্ষিত, সিআইএ  (CIA) এদের যাবতীয় খরচ চালিয়েছে। এর এক দশক পর আমেরিকা আফগানিস্তানে এল তখন এই মুজাহিদিনদের দাবি যেহেতু আমেরিকা আছে, তাই সেখানে কোনও সন্ত্রাস চলছে না’।