রিও ডি জেনেইরো, ২৯ মে: এবার আর বাইরে নয়, জেলের ভিতরেই খুনখারাপিতে মাতল বন্দিরা। চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে ব্রাজিলের (Brazil) মানাউস শহরের চারটি জেলে। এই খুনোখুনির জেরে ৫৫জন বন্দির মৃত্যু হয়েছে। মূলত ছুরি মেরে ও গলা টিপেই এই হত্যাকাণ্ড গুলি ঘটিয়েছে বন্দিরা। সূত্রের খবর, ড্রাগ মাফিয়াদের নিজেদের মধ্যে দ্বন্দ্বের জেরেই এই খুনোখুনি। বুধবার মাফিয়া গ্যাং-এর কয়েকজন পাণ্ডাকে অন্যান্য জেলে সরিয়ে দিয়েছে পুলিশ। খুনজখমে অভিযুক্ত আরও ২৯ জনকে চিহ্নিত করে তাদেরও সরিয়ে দেওয়া হচ্ছে।
এই ঘটনায় সরকারের দিকেই অভিযোগের আঙুল তুলেছে সেদেশের মানবাধিকার সংগঠন। অভিযোগ, জেলে হিংসা রোধ করার জন্য কিছুই ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। সাদারণ বন্দিদের মধ্যেই রয়েছে ড্রাগ মাফিয়ারা। এই খুনোখুনির মূল হোতা তারাই। অন্যবন্দিদের রীতিমতো প্রভাবিত করে জেলে বসেই দলের সদস্য বাড়িয়ে চলে এই মাফিয়ারা। সরকারে কাছে এনিয়ে তথ্য প্রমাণ থাকলেও কোনওরকম ব্যবস্থা নেওয়া হয় না। উল্টে অল্প জায়গায় গাদাগাদি করে এই খুনেদের সঙ্গে সাধারণ বন্দিদের থাকার ব্যবস্থা করা হয়। আনিসিও জোবিম নামে যে জেলে রবিবার প্রথমে দাঙ্গা লাগে, সেখানে ৪৫৪ জন বন্দির থাকার জায়গা আছে। বাস্তবে আছে তার দ্বিগুণ। ব্রাজিলে কট্টর দক্ষিণপন্থী প্রেসিডেন্ট জাইর বোলসোনারো এই জেল দাঙ্গায় অস্বস্তিতে পড়বেন বলে পর্যবেক্ষকদের ধারণা। তিনি আগে বলেছিলেন, ক্ষমতায় এসে কড়া হাতে অপরাধ দমন করবেন। জেলে দাঙ্গাহাঙ্গামা বরদাস্ত করবেন না।
এদিকে খুনোখুনি ও মারদাঙ্গার খবর পেয়েই জেলের(Prison) বাইরে ভিড় জমিয়েছে বন্দিদের পরিবার। তাঁদের একটাই দাবি, জেল কর্তৃপক্ষ জানাক, পরিজনরা প্রাণে বেঁচে যাচ্ছে। একই সঙ্গে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের ভিড়ে জেলের বাইরে তিল ধারনের জায়গা নেই। গোটা ঘটনায় প্রশাসন বেশ বিপাকে তা বলাই বাহুল্য। জেলের ভিতরে তখন অন্য নাটক চলছে, পুলিশ দাঙ্গা থামাতে গেলে মারমুখী বন্দিরা নিজেদের একজনকে পনবন্দি করে ছাড় পাওয়ার চেষ্টা করে। পরে গুলি চালিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়। তবে এই খুনোখুনির জেরে প্রথমে ১৫জন বন্দির দেহ(15TH Prisoner’s death) উদ্ধার করা হয় পরে আরও ৪০টি দেহ উদ্ধার হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে গোটা ঘটনার নেপথ্যে রয়েছে সেদেশের সক্রিয় ড্রাগ পাচারকারী গ্যাং ফ্যামিলি অব দি নর্থ। নিজেদের মধ্যে ঝামেলার জেরেই এসব ঘটেছে। এরপরেই নয় গ্যাং স্টারকে অন্য জেলে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।