ভারত বনাম চিন(Photo Credits:PTI)

সিউড়ি, ১৭ জুন: ভারত চিন সীমান্তে লাদাখের গলওয়ান উপত্যাকায় লাল ফৌজের হামলায় শহিদ হয়েছেন ২০ জন ভারতীয় জওয়ান। শহিদের তালিকায় রয়েছেন বীরভূমের মহম্মদ বাজারের বেলগড়িয়া গ্রামের রাজেশ ওরাঁও (Rajesh Orang)। ২০১৫-তে যখন কলেজের দ্বিতীয় বর্ষে পড়ছেন সেই সময়েই সেনাবাহিনীতে যোগ দেওয়ার সুযোগ এসে যায়। আদ্যপান্ত কৃষক পরিবারের ছেলে রাজেশ সুযোগের সদ্ব্যবহার নিয়ে দ্বিতীয়বার ভাবেননি। তিনি সেনায় যোগ দেন। প্রথম থেকেই ছিল হার্ড পোস্টিং। তাই জম্মু কাশ্মীরের সন্ত্রাসবাদী হামলার খবর বাড়িতে এলেই গল্প করতেন। লাদাখে ১৬ নম্বর বিহার রেজিমেন্টে পোস্টিং ছিলেন। চলতি বছরটা কেটে গেলে আশপাশে আপাত শান্তিপ্রিয় কোনও এলাকায় তাঁর পোস্টিং হত।

তবে সেদিনটা আর এল না। তার আগেই বীরভূমের বীর ছেলের জীবনের গতি থমকে গেল। একমাত্র বোন কলেজে পড়েন। সোমবারই টিভিতে খবর পেয়েছিলেন দাদার রেজিমেন্টের বেশ কয়েকজন সেনা লাল ফৌজের মোকাবিলায় শহিদ হয়েছেন। তারপর থেকে বারবার তিনি যোগাযোগ করার চেষ্টা করেছেন তবে লাভ কিছু হয়নি। মঙ্গলবার বিকেলে লাদাখের সেনা হাসপাতাল থেকে ফোন করে বেলগড়িয়ার বাড়িতে জানানো হয়, গলওয়ান ভ্যালিতে সেনা সংঘর্ষে গুরুতর জখম হয়েছেন রাজেশ ওরাঁও। ফের কিছুক্ষণ পড়ে খবর আসে, শহিদ হয়েছেন দাদা রাজেশ। এই খবরের পর থেকেই বার বার জ্ঞান হারিয়ে ফেলছেন বাবা। শোকে পাথর বাবার বক্তব্য, সন্তান হারিয়ে বুক ফেটে যাচ্ছে। তবে মোদি সরকার এই নিধন যজ্ঞের যোগ্য প্রতিশোধ নিক। তাহলেই কষ্টটা খানিক কমবে। আরও পড়ুন-COVID-19 Cases In India: এক দিনে করোনায় মৃত ২ হাজারেরও বেশি, ভারতে কোভিড রোগীর সংখ্যা ৩ লক্ষ ৫৪ হাজার ৬৫

ইন্দো-চিন সীমান্তে লাল ফৌজের হামলায় বীরভূমের সেনা জওয়ানের শহিদ হওয়ায় শোক প্রকাশ করেছেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড় (Jagdeep Dhankhar)। গত সেপ্টেম্বরে রাজেশ বাড়ি এসেছিলেন। চলতি বছর মে মাসে ফের বাড়িতে আসার কথা থাকলেও লকডাউনের কারণে তা সম্ভব হয়নি। ছেলের বিয়ের কথা ভাবছিলেন বাব-মা। রাজেশের ইচ্ছে, বোনের কলেজ পাশের আগে বিয়ে করবেন না। দিন আনা দিন খাওয়ার সংসারে রাজেশের রোজগারেই মাটির বাড়ি এখন একতলা পাকা বাড়ি। অশক্ত শরীরে বিছানায় শুয়ে আছেন বাবা সুভাষ ওরাঁও। মা কেঁদে চলেছেন নিরন্তর। সংসারের একমাত্র রোজগেরে সদস্যকে হারিয়ে দিশেহারা গোটা পরিবার। জানা গিয়েছে, বুধবার বিকেলেই লাদাখ থেকে বেলগড়িয়ার বাড়িতে ফিরবে শহিদ জওয়ান রাজেশ ওরাঁওয়ের দেহ।