বাংলা কবিতার অশৌচ কাল। এককথায় আজ পিতৃহীন হল বাংলার কবি সমাজ। অভিভাবককে হারালেন জয় গোস্বামী। তাইতো শঙ্খ বিদায়ে বললেন, “আমার কী হারাল তা, আমিই জানি। আর বাংলা সাহিত্যজগৎ কী হারাল, তা যত দিন যাবে, ততই বুঝবে সকলে। বাংলা সাহিত্যজগতে মহা বটবৃক্ষের পতন ঘটল। তরুণ কবি এবং লেখকদের মাথার উপর পিতা এবং অভিভাবকস্বরূপ বিরাজ করছিলেন উনি। জাতির বিবেক হিসেবে ছিলেন। মাথার উপর থেকে সেই আশ্রয় সরে গেল। নিঃস্ব হলাম।” শুধু বাংলার সাহিত্যাকাশ আজ অভিভাবকহীন এমন নয়, ব্যক্তিগতভাবে নিঃস্ব হয়ে গেলেন কবি জয় গোস্বামীও। প্রায় দু’দশকের বয়সের তফাত তাঁদের মধ্যে। আরও পড়ুন-Madan Mitra Hositalised: শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা, এসএসকেএমে ভর্তি মদন মিত্র
৪৫ বছরের সম্পর্ক। গুরু মানতেন শঙ্খ ঘোষকে (Shankha Ghosh)। তাইতো লিখেছেন, ‘জয়ের শঙ্খ’ বইখানা। ৮৯ বছর বয়সে শারীরিক অসুস্থতা ছিল। ফুসফুসের সমস্যাতেও ভুগছিলেন। তাই গত সপ্তাহে যখন করোনায় আক্রান্ত হলেন, তখন থেকেই ভয়েছিলেন জয় গোস্বামী। কিন্তু মৃত্যু তাঁকে এভাবে ছিনিয়ে নেবে তা দুঃস্বপ্নেও ভাবেননি।
আজ মন খারাপ সাহিত্যিক শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়েরও। বললেন, “অত্যন্ত ভারাক্রান্ত বোধ করছি। এই কৃষ্ণগহ্বর সহ্য করতে পারছি না। কিছু দিন আগেই ফোন করেছিলাম শঙ্খদাকে। নিজে ফোন ধরতে পারতেন না। সেমন্তী বলল, ‘বাবার সঙ্গে কথা বলিয়ে দেব। আপনি ওঁর কথা বুঝতে পারবেন না’। ফোন দেওয়া হল। জিজ্ঞেস করলাম, কেমন আছেন, বললেন, ভাল। কিন্তু সেটা স্পষ্ট ভাবে বোঝাই গেল না। শুনেছিলাম, ওঁর শরীর বিকল হয়েছে। বাকশক্তি আগের মতো স্পষ্ট নেই। শুধু দু’টো জিনিস সতেজ ছিল, তা হল স্মৃতিশক্তি এবং মনোবল, যা এই বয়সেও ১০০ শতাংশ অটুট ছিল।”