শোভন চট্টোপাধ্যায় ও বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়(File Photo)

কলকাতা, ১৭ মে: গতকাল থেকেই ফিসফাসটা চলছিল। সোমবার সকালে নারদ কাণ্ডে কলকাতার প্রাক্তন মেয়র-মন্ত্রী শোভন চ্যাটার্জি (Sovon Chatterjee) কে গ্রেফতার করার পর জেলে ছুটে যান রত্না চ্যাটার্জি। কিন্তু শোভনের বান্ধবী বৈশাখী ব্যানার্জি (Baishakhi Banerjee)  কে কোথাও দেখা যায়নি। বন্ধুর খারাপ সময়ে কোথায় গেলেন বৈশাখী তা নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় নানা পোস্ট হতে থাকে। তবে জানা যায় শোভন চ্যাটার্জিকে সিবিআই দফতর থেকে থেকে প্রেসিডেন্সি জেলে নিয়ে যাওয়ার পরে আসেন তাঁর বান্ধবী বৈশাখী ব্যানার্জি। এরপর বৈশাখী জেলের গেটের বাইরে দাঁড়িয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন। রাতে বৈশাখী জেলের ফটকে চাপড় মারেন বলেও সংবাদমাধ্যমে প্রকাশ। আরও পড়ুন: Narada Scam Case: নারদা মামলায় জামিন পেলেন ফিরহাদ, মদন, শোভন, সুব্রত মুখোপাধ্যায়

বন্ধু শোভনের সঙ্গে একটি বার দেখা করতে দেওয়ার আবেদন বারবার করতে থাকেন। তবে নিরাপত্তারক্ষীর বৈশাখীকে সরিয়ে দেন। তিনি জেলের দরজায় বেশ কয়েকবার ধাক্কা মারেন। গেট ধরে বসে চিৎকার করতে থাকেন। বৈশাখী বলতে থাকেন, " আমায় একবার ওঁর সঙ্গে দেখা করতে দিন। ওঁকে ওষুধটুকু খেতে দিন। ওঁর তো হাই সুগার। তবুও কিছু খেতে দেওয়া হয়নি। অমানুষিক ব্যবহার করা হচ্ছে।" সঙ্গে যোগ করেন, "আপনাদের কোনও লজ্জা নেই। শোভনকে ধরার জন্য আগে থেকে না জানিয়ে এক মহিলার বেডরুমে চার জন পুরুষ ঢুকলেন।"গতকাল শোভনের গ্রেফাতরির পর বৈশাখী সংবাদমাধ্যমে জানিয়েছিলেন, আজ থেকে মুখ্যমন্ত্রীর জন্য প্রাণ দিতেও প্রস্তুত  তিিন।

এদিকে, মাঝরাত থেকে শ্বাসকষ্ট শুরু হওয়ায় নারদা কাণ্ডে গ্রেপ্তার মদন মিত্রকে (Madan Mitra)ভোররাতে ভর্তি করা হল এসএসকেএম হাসপাতালে৷ অসুস্থ বোধ করায় একই সঙ্গে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন শোভন চট্টোপাধ্যায়ও৷ রাত ১টা বেজে ১০ মিনিটের পর নিজাম প্যালেস থেকে মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম, সুব্রত মুখোপাধ্যায়, মদন মিত্র ও শোভন চট্টোপাধ্যায়কে প্রেসিডেন্সি জেলে নিয়ে যাওয়া হয়৷ সেখানেই অসুস্থ বোধ করতে থাকেন মদন মিত্র৷ শুরু হয় শ্বাসকষ্ট৷ এরপর এসএসকেএমের উডবার্ন ওয়ার্ডে ভর্তি হন দুজনে৷ উডবার্ন ওয়ার্ডের ১০৩ নম্বর ঘরে ভর্তি রয়েছেন মদন মিত্র৷ অন্যদিকে ১০৬ নম্বর ঘরে ভর্তি আছেন শোভন৷ অসুস্থ বোধ করায় সুব্রত মুখোপাধ্যায়কেও হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়৷ তবে ফের তাঁকে প্রেসিডেন্সি জেলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে৷

গতকাল সকালে নারদা মামলায় এই চার নেতাকে তাঁদের বাড়ি থেকে গ্রেফতার করে সিবিআই৷ নিজাম প্যালেসে গোটাদিন আটকে রাখা হয়৷ খবর পেয়ে সেখানে গিয়ে অবস্থান শুরু করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ প্রায় ৬ ঘণ্টা পর সেখান থেকে বেরোন তিনি৷ নিম্ন আদালতে জামিনও পেয়ে যান ফিরহাদ হাকিম, সুব্রত মুখোপাধ্যায়, মদন মিত্র ও শোভন চট্টোপাধ্যায়৷ তবে শেষরক্ষা হয়নি৷ সিবিআই হাইকোর্টে নিম্ন আদালতের রায়কে চ্যালেঞ্জ জানায়৷ এরপর হাইকোর্ট নিম্ন আদালতের রায়ে স্থগিতাদেশ দিলে চারজনেরই জেল হেফাজত হয়৷ আগামী বুধবার পর্যন্ত এঁরা প্রেসিডেন্সি জেলে থাকবেন৷ রাত একটা বেজে ১০ মিনিটে নিজেম প্যালেস থেকে যখন চারজনকে প্রেসিডেন্সি জেলে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে তখন সংবাদ মাধ্যমের সামনে আবেগ চাপতে পারেননি ফিরহাদ হাকিম৷ ধরা গলায় বলেন, “কলকাতার মানুষকে বাঁচাতে চেয়েছিলাম। আমাকে বাঁচাতে দিল না।”