Representational Image (Photo Credits: ANI)

কলকাতা, ৩ জুলাই: গড়িয়ার রামগড়ে ঘটল এক চাঞ্চল্যকর ঘটনা। যেখানে অসুস্থ শয্যাশায়ী মা বুঝতে পারেনি তাঁর ছেলে মারা গিয়েছে। দিন তিনেক আগে ছেলে মারা গিয়েছেন। তাঁর মৃতদেহ পচে গলে গিয়েছে, কিন্তু শয্যাশায়ী মায়ের শরীর এত খারাপ যে তিনি টের পাননি। তিনি কাউকে কিছু না বলেননি।

ওদিকে ছেলের দেহ পচে যাচ্ছে, অন্যদিকে শরীর খারাপে মা বিছানায় শুয়ে। বৃদ্ধার বাড়ি থেকে অস্বভাাবাকি দুর্গন্ধ বের হতেই, পুলিশের কাছে খবর দেন প্রতিবেশীরা। আরও পড়ুন-বর্ষা এল দক্ষিণবঙ্গে, রবিবার থেকেই মুষলাধারায় ভিজতে চলেছে কলকাতা

রিজেন্ট পার্ক থানার বাড়ির দরজা ভেঙে পুলিশ এসে মৃতদেহ উদ্ধার করে এবং মৃতের বৃদ্ধা মা-কে হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা করে। মৃত ব্যক্তির নাম সোমনাথ কুণ্ডু (৩৯)। মৃত ছেলের ঠিক আর তার পাশেই শুয়ে রয়েছেন তাঁর বৃদ্ধা মা উত্তমা কুণ্ডু।

বৃদ্ধার কথায় বেশ কিছু অসংলগ্নতা ধরা পড়ছে। অসুস্থ শরীর নিয়ে টিভি চ্যানেলের সামনে তিনি বললেন, সোমনাথ আমার বড় ছেলে। চাকরি করে। জন্ডিস হয়েছিল। ওকে জল খেতে বললাম। এতে প্রস্রাব হবে। তা হয়নি। অজ্ঞান হয়ে পড়ে গিয়েছে। তিন দিন হল অসুস্থ। ডাক্তার দেখানো হয়েছিল। প্রতিবেশীরা জানান, ছেলে মারা গিয়েছেন অনেক আগেই সেটা মনে হয় বুঝতেই পারেননি বৃদ্ধা। আমরা ঘরে দুর্গন্ধ পেয়ে পুলিসে খবর দিই। পুলিশ অনেক ডাকলেও কেউ না ডাকায় ঘরের দরজা ভাঙতে বাধ্য হয়।

কিন্তু এখানে কিছু প্রশ্ন উঠছে? সত্যি কী মা তাঁর ছেলের মৃত্যুর কথা জানতেন না! নাকি ছেলেকে হারাতে চাননি বলেই ওই অবস্থায় রেখে দিয়েছেন? জানা গিয়েছে, রামগড়ের নেতাজিনগরে একটি বাড়ির নীচের তলায় বৃদ্ধা মাকে নিয়ে থাকতেন ৩৯ বছরের সোমনাথ কুণ্ডু। দিন পনেরো আগে সোমনাথের জন্ডিস ধরা পড়ে। তার পরেই অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। শুক্রবার বাড়ি থেকে দুর্গন্ধ বের হতে থাকায় দরজা ভেঙে ঘরে ঢোকে পুলিস। সোমনাথের দেহ একেবারে পচে গিয়েছে।দ্ধাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ময়না তদন্তে পাঠানো হয়েছে সোমনাথের দেহ।

প্রাথমিকভাবে জানা যাচ্ছে, গত তিন বছর ধরে ওই বাড়িটিতে রয়েছেন সোমনাথ কুণ্ডু। বাড়িতে বসেই কম্পিউটার সারাইয়ের কাজ করতেন। এলাকায় খুব ভাল ও মিশুকে ছেলে হিসেবেই পরিচিতি ছিল সোমনাথ। সোমনাথের জন্ডিস হওয়ার কথা বাইরের কেউ জানত না। অন্তত আপাতত এমনই কর। ছেলে যে মারা গিয়েছেন তা বুঝতেই পারেননি বৃদ্ধা মা। বাইরের কাউকে ডাকেননি অসুস্থ ওই পৌঢ়া।