Kolkata: ক্যানসার আক্রান্ত বাবার শেষ ইচ্ছেতে হাসপাতালেই বসল মেয়ের বিয়ের আসর
ক্যানসার আক্রান্ত বাবার শেষ ইচ্ছেতে হাসপাতালেই বসল মেয়ের বিয়ের আসর (প্রতীকি ছবি: Wikimedia Commons)

বরানগর, ১২ ফেব্রুয়ারি: হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফেরা আর হবে না। যে কোন সময় চলে যেতে পারেন পৃথিবী ছেড়ে। এমনটা যখন নিশ্চিত হল তখন চিকিৎসকদের (Doctor) কাছে নিজের শেষ ইচ্ছে জানিয়ে একটাই কথা বললেন ক্যানসারে (Cancer) আক্রান্ত বরানগরের (Baranagar) সন্দীপ সরকার। বললেন মেয়ের বিয়েটা যদি দেখে যেতে পারি! মুমূর্ষু রোগীর শেষ ইচ্ছে পূরণে তাই হাসপাতালেই বসল বিয়ের আসর (Marriage In Hospital)। বিছানায় শুয়ে মৃত্যুপথযাত্রী বাবা সাক্ষী থাকলেন মেয়ে দিওতিমার সাতপাকের।

শরীরের যা অবস্থা, খারাপ খবর আসতে পারে যেকোনও মুহূর্তে। বুঝতে পেরেছিলেন চিকিৎসকদের টিম। তাই আর দেরি করেননি। রোগীর শেষ ইচ্ছে পূরণে হাসপাতালেই ডাকা হল রেজিস্টার। হাসপাতালেই নিমন্ত্রণ করা হল আত্মীয়স্বজনদের। এনগেজমেন্ট-এর সোনার আংটি (Gold Ring) থেকে গোলাপের মালা (Garland Of Rose) সব হাজির। হাসপাতালে ক্যানসার আক্রান্তের ঘরের পাশেই বসিয়ে দেওয়া হল বিয়ের মণ্ডপ। বিয়ে হল সন্দীপবাবুর মেয়ে দিওতিমার। দুচোখ ভরে দেখলেন তিনি। ২০১১ সালে প্রথম জিভে অস্ত্রোপচার হয় তাঁর। তারপরে বেশ কয়েক বছর ভালোই ছিলেন। ছ’বছর পর ফের সমস্যা। বায়োপসি করে চিকিৎসকরা এবার জানতে পারেন ফুসফুস পর্যন্ত ছড়িয়ে গিয়েছে ক্যানসার। আর এবার তা আরও ভয়ঙ্কর রূপে। পৌঁছে গিয়েছে চতুর্থ পর্যায়ে। রোগী কিছুই খেতে পারছেন না। ক্রমশ ওজন কমে যাচ্ছিল। সাধারণত চতুর্থ পর্যায়ের এই ক্যানসারে রোগী ১ বছরের বেশি বাঁচে না। তাই হাসপাতালে তাঁকে ভর্তি করা হলে সন্দীপবাবু জানান, একমাত্র মেয়ের বিয়ে হয়নি। তা না দেখেই চলে যাবো? শুরু হয় অসুখের বিরুদ্ধে চিকিৎসকদের একজোট লড়াই। দ্রুত গতিতে ছড়িয়ে পড়তে থাকা ক্যানসারকে কীভাবে রোধ করা যায়, আটকানো যেতে পারে নিশ্চিত মৃত্যুকে? দীর্ঘ বৈঠকের পর চিকিৎসকরা কথা দিয়েছিলেন, ইমিউনোথেরাপি দিয়ে ওনাকে আরও ৩ বছর পর্যন্ত বাঁচিয়ে রাখবেনই। সেই তিন বছরের সময়সীমা শেষ হয়েছে এই ফেব্রুয়ারিতেই। অসুখের বিরুদ্ধে লড়তে লড়তে ক্লান্ত হয়ে পড়েছেন সন্দীপবাবুও। অগুনতি কেমো নিয়ে নিয়ে সব চুল পড়ে গিয়েছে। কঙ্কালসার চেহাড়া। হাসপাতালের মেডিক্যাল অঙ্কোলজি বিভাগের ডা. বিবেক আগরওয়ালা, ডা. চন্দ্রকান্ত এমভি বুঝতে পারছিলেন আর নয়। সরকারিভাবে মেয়ের বিয়ের তারিখ ছিল ১৬ ফেব্রুয়ারি। কিন্তু মাঝের এই কদিনও সন্দীপবাবু না বাঁচতে পারেন। এমনই তাঁর শরীরের দশা। অগত্যা শেষ ইচ্ছে মেনে হাসপাতালেই বিয়ের আসরের পরিকল্পনা করল হাওড়ার নারায়ণা সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল। আরও পড়ুন: East-West Metro Update: পাঁচ মাস পরে ফের শুরু ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর কাজ

সংবাদ প্রতিদিনের খবর অনুযায়ী চোখে জল নিয়ে দিওতিমা জানান, জানি বাবা (Father) যে কোনওদিন চলে যাবে। কিন্তু আমার নতুন জীবন শুরুতে তাঁর আর্শীবাদ আমার কাছে সবচেয়ে দামি। সেটা আমার কাছে রয়ে গেল।