আসানসোল, ১৬ এপ্রিল: মলয় ঘটক বারবার চেষ্টা করেও পারেননি। অনেক আশা করা হলেও দোলা সেনও ব্যর্থ হয়েছিলেন। মুনমুন সেনও হতাশ করেছেন। অবশেষে আসানসোলে দিদিকে জেতালেন শত্রুঘ্ন সিনহা। তৃণমূল প্রতিষ্ঠার পর এই প্রথম আসানসোল লোকসভায় ফুটল জোড়া ফুল। ২০০৯ লোকসভায় রাজ্যে দিকে দিকে জোড়া ফুল ফুটলেও সিপিএমের বংশগোপাল চৌধুরীকে হারাতে পারেননি মলয় ঘটক। এরপর ২০১৪ লোকসভা নির্বাচনে শিল্পাঞ্চলের এই আসনে ট্রেড ইউনিয়ন নেত্রী দোলা সেনকে প্রার্থী করেন মমতা। কিন্তু অনেকটা পিছন থেকে শুরু করে দোলাকে হারিয়ে বিজেপি-কে প্রথমবার জেতান বাবুল সুপ্রিয়। পাঁচ বছর বাদে বাঁকুড়া থেকে তুলে এনে অভিনেত্রী মুনমুন সেনকে প্রার্থী করে ভরাডুবি হয় তৃণমূলের।
বাবুল ১ লক্ষ ৯৭ হাজার ভোটের ব্যবধানে হারান মুনমুনকে। দার্জিলিং বাদ দিলে রাজ্যের একমাত্র আসানসোলেই জিততে পারছিল না তৃণমূল। আসানসোলে জিততে না পারার ক্ষেদ ছিল দিদির। অনেকের যুক্তি ছিল আসানসোলে অবাঙালি ভোটারদের মন পড়তে পারছে না তৃণমূল। তাই বাবুল দলবদল করার পর আসানসোলে বিহারী বাবু শত্রুঘ্না সিনহা-কে প্রার্থী করে বাজিমাত করলেন মমতা। আরও পড়ুন: বালিগঞ্জে ফলে চমক,, না যেটা ভাবছেন তেমনটা নয়
শত্রুঘ্নের মত হাই প্রোফাইল প্রার্থী আশায় তৃণমূলে কোন্দল কমে যায়, আর রাজ্যের শাসক দলের নেতা-কর্মীরা দলকে জেতাতে ঝাঁপিয়ে পড়েন। ফলে আসানসোলের সাতটি বিধানসভা কেন্দ্রেই অনায়াসে জিতলেন বলিউডের খামোশ অভিনেতা। ২০১৯ লোকসভায় বিজেপি-র টিকিটে বাবুল জিতেছিলেন ১ লক্ষ ৯৭ হাজার ভোটে। এবার সেখানে শত্রুঘ্নের জয় এল ৩ লক্ষ ভোটের ব্যবধানে। ২০২১ বিধানসভা ভোটে আসানসোল লোকসভার সাতরটার মধ্যে পাঁচটা কেন্দ্রে জিতেছিল তৃণমূল, আসানসোল (দক্ষিণ), কুলটিতে জিতেছিল বিজেপি। আসানসোল দক্ষিণে জেতা বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পালকে লোকসভায় প্রার্থী করেও লাভ হল না বিজেপির। সেখানে বিহারী বাবু ঝড়ে উড়ে গেল বিজেপি। প্রায় দু লক্ষে জেতা লোকসভা আসনে বিজেপি হারল প্রায় ৩ লক্ষ ভোটে। অন্যদিকে, আবার লোকসভায় ফিরছেন অটল বিহারী বাজপেয়ী মন্ত্রিসভার গুরুত্বপূর্ণ সদস্য শত্রুঘ্ন। বিজেপি ছেড়ে ২০১৯ লোকসভায় বিহারের পটনা সাহিব থেকে কংগ্রেসের টিকিটে লড়ে ভরাডুবি হয়েছিল তাঁর, দিদির দল তাঁর সম্মান ফিরিয়ে দিল। লোকসভায় এবার মোদী-শাহ-কে খামোশ করার পালা শত্রুঘ্ন-র।