কাঁচরাপাড়া ও হাওড়ায় রেল অবরোধ (Photo: ANI)

কলকাতা, ৮ জানুয়ারি: দেশে চাকরি নেই, মন্দায় অর্থনীতি, (Economic Slowdown) সর্বত্র চলছে ছাঁটাই, ব্যাংক দেউলিয়া, এলআইসি পলিসি বন্ধ করে দিচ্ছে, সেই সঙ্গে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (NRC), জাতীয় নাগরিকপঞ্জি (এনআরসি) (NRC) ও জনগণনার (এনপিআর) (NPR) বিরোধিতায় আজ দেশজুড়ে ২৪ ঘণ্টার সাধারণ ধর্মঘটের (Bharat Bandh) ডাক দিয়েছে কেন্দ্রীয় শ্রমিক ইউনিয়নগুলি। একই দিনে গ্রামীণ ভারত ধর্মঘট ডেকেছে কৃষক ও ক্ষেতমজুর সংগঠনগুলি। সিপিএম, কংগ্রেস-সহ ২০টি দল এ রাজ্যে ওই ধর্মঘটকে সমর্থন করছে। ধর্মঘটের ইস্যুগুলিকে তৃণমূল নেত্রী মমতা ব্যানার্জি (Mamata Banerjee) সমর্থন করলেও, ধর্মঘট কোনও মতেই সমর্থন যোগ্য নয় বলে তিনি স্পষ্ট করে দিয়েছেন।

যদিও এ দিন সকাল থেকে রেল লাইন অবরোধ করে ধর্মঘট সমর্থনকারীরা। বেশ কিছু লোকাল ট্রেন দাঁড়িয়ে পড়েছে বিভিন্ন জায়গায়। কাঁচরাপাড়ায় (Kancharapara) রেল অবরোধের জেরে শিয়ালদা মেইন লাইনে ট্রেন চলাচল বন্ধ। রেল পরিষেবা বন্ধ হাওড়া-বর্ধমান শাখায়। শ্যামনগর ও বারাসাতে চলে রেল অবরোধ। চম্পাহাটি, মথুরাপুর, মগরাহাটে ওভারহেড তারে ফেলা হয় কলাপাতা। ফলে শিয়ালদা-ক্যানিং, লক্ষ্মীকান্তপুর-বারুইপুর ও শিয়ালদা-ডায়মন্ডহারবার শাখায় ব্যাহত ট্রেন চলাচল। তারে কলাপাতা ফেলা হয়েছে রিষড়া ও কোন্ননগর স্টেশনের মাঝেও। ফলে হাওড়া-শ্রীরামপুরে ব্যাহত রেল পরিষেবা। যাদবপুর স্টেশনে দাঁড়িয়ে রয়েছে ২টি ট্রেন। দমদম রেল স্টেশনে বুকিং কাউন্টার বন্ধ করে দেয় CPI(M)। হৃদয়পুর স্টেশনে লাইনে মিলল বোমা। সকালে হৃদয়পুর স্টেশনে রেলের ট্র্যাকের ওপরে একটি সন্দেহজনক বস্তু দেখতে পান চালক। তা দেখে তিনি ট্রেন থামিয়ে দেন। পরে দেখা যায় লাইনে পড়ে রয়েছে ৩টি তাজা বোমা। পরে সেগুলিকে নিষ্ক্রিয় করা হয়।আরও পড়ুন: Nirbhaya Case: অবশেষে সাজা, ২২ জানুয়ারি সকাল সাতটায় ফাঁসির দড়িতে নির্ভয়ার ৪ ধর্ষক; রায় দিল পাতিয়ালা হাউস কোর্ট

অন্যদিকে কলকাতার রাস্তায় সকাল থেকেই পুলিশের উপস্থিতি চোখেপড়েছে। শহরে গাড়ির সংখ্যা অন্য দিনের থেকে কম। তবে হাওড়া ব্রিজে যান চলাচল স্বাভাবিক। হাজরা মোড়ে পুলিশ কর্মীরা মোতায়েন রয়েছেন। শ্যামবাজার পাঁচমাথার মোড়ে বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি বাস চলছে। আনন্দবাজারের খবর অনুযায়ী, যাদবপুরে যান চলাচল স্বাভাবিক।

তবে যাদবপুরে বন্‌ধের সমর্থনে বামেদের মিছিল চলছে। ধর্মঘট শুরু হওয়ার প্রথম এক ঘণ্টা তার প্রভাব দেখা যায়নি কলকাতা বিমানবন্দরে। অন্য দিনের মতোই স্বাভাবিক রয়েছে পরিষেবা। জলপাইগুড়িতে ধর্মঘটীদের সঙ্গে বাসচালকদের বচসা। হেলমেট খুলে বাস চালানোর জন্য অনুরোধ ধর্মঘটীদের। পশ্চিম মেদিনীপুররে তমলুকে রাস্তা অবরোধ করেছে বনধ সমর্থকরা। ধর্মঘটের সমর্থনে বর্ধমানের কয়েকটি জায়গায় পথ অবরোধ।

ভারত বনধে রেল পরিষেবা স্বাভাবিক রাখতে আগেই মন্ত্রকের তরফে নোটিশ জারি হয়। তাতে বলা ছিল, ধর্মঘটের দিন কোনও রকমের ছুটির আবেদন মঞ্জুর করা হবে না। সব রেলের জেনারেল ম্যানেজারকে এই নির্দেশ লিখিত ভাবে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। অন্যথায় রেলওয়ে অ্যাক্ট ১৯৮৯-এর ১৭৩, ১৭৪, ১৭৫ ধারায় শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। হাইকোর্ট এ দিন একটি জনস্বার্থ মামলার শুনানির সময় রাজ্য সরকারকে ধর্মঘটের দিন আইনশৃঙ্খলার বিষয়টিতে নজর রাখতে বলেছে।