কলকাতা, ২৫ নভেম্বর: চার মিনিটে দেখতে হবে খাতা (Exam Answer Sheet)। পড়ুয়াদের প্রাপ্ত নম্বরে কোনও হেরফের হলেই পরীক্ষককে (Examiner) সতর্ক করবে যন্ত্র। সরাসরি উত্তরপত্র পুনর্মূল্যায়নে স্ক্রুটিনিয়ার আর থাকছেনই না! দ্রুত থেকে নির্ভুল খাতা দেখতে এবার এমন ব্যবস্থাই করছে মৌলানা আবুল কালাম আজাদ প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (Maulana Abul Kalam Azad University of Technology) তথা ম্যাকাউট। এর আগে বহুবার ঘোষণা করলেও রাজ্যজুড়ে ছড়িয়ে থাকা দুশোরও বেশি বেসরকারি কলেজের কারিগরি ও প্রযুক্তি শাখায় অড সেমেস্টারের পরীক্ষার্থীদের উত্তরপত্র মূল্যায়নে এই প্রথম ডিজিটাল ইভ্যালুয়েশন চালু করছে তারা। চলতি বছরের ৯ ডিসেম্বর থেকেই এই পদ্ধতি চালু করতে চলেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বলে জানা গিয়েছে।
এই পদ্ধতির জন্য তৈরি হচ্ছে বিশেষ খাতা। হাইস্পিড মেশিনে উত্তরপত্র স্ক্যান করে ক্লাউডে আপলোড করা হবে। বিভিন্ন কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত বিষয়ভিত্তিক শিক্ষকরা (Teachers) ক্লাউডে ম্যাকাউটের তৈরি শিক্ষক প্রোফাইল ধরে লগ-ইন ও পার্সোনাল আইডি দিয়ে খুলে দেখতে পারবেন। বাড়িতে বসেই হোক বা কলেজে থাকাকালীন উত্তরপত্র মূল্যায়ন করতে পারবেন তাঁরা। পরীক্ষকদের কাছে মডেল প্রশ্ন ও উত্তরপত্র থাকবে। যাতে খাতা দেখায় বৈষম্য না হয়। উত্তরপত্রে কোনওরকম ভুল থাকলে তা সাবমিট করতে পারবেন না পরীক্ষকরা। যে কোনও প্রশ্নের উত্তর দেখে পরীক্ষক নম্বর দিলে কম্পিউটারে তা উঠে যাবে। কোনও প্রশ্নে বরাদ্দ নম্বর বা পূর্ণমানের চেয়ে বেশি নম্বর দিলে কম্পিউটার সংকেত দিয়ে পরীক্ষককে সতর্ক করবে। সেইসঙ্গে ম্যানুয়াল কেজিংয়ে খাতা দেখে সার্বিকভাবে যে নম্বর দেওয়ার পদ্ধতি ছিল, তাও উঠে যাচ্ছে। কম্পিউটারই স্বয়ংক্রিয়ভাবে হিসাব কষে দেবে। ফলে পরীক্ষকের উত্তরপত্র মূল্যায়নের পরে প্রধান পরীক্ষকের অধীন স্ক্রুটিনিয়ারের মাধ্যমে পুনর্মূল্যায়নের প্রচলিত ব্যবস্থা আর থাকছে না। খাতা দেখে প্রধান পরীক্ষকের যদি মনে হয় কোনও পরীক্ষক পরীক্ষার্থীদের কাউকে বেশি বা কম নম্বর দিয়েছেন, তবেই শুধুমাত্র সেসব উত্তরপত্র তৃতীয় পরীক্ষকের কাছে পাঠাবেন। তবে আগের পরীক্ষকের দেওয়া নম্বর মুছে ফেলেই পুনর্মূল্যায়নে পাঠাতে হবে। তবেই রি-চেকিং সম্ভব হবে। আরও পড়ুন: Kolkata: এবার আবাসনের ছাদ থেকেই দেখতে পাবেন চাঁদের কলঙ্ক, শনির বলয়
ম্যাকাউটের উপাচার্য সৈকত মৈত্র এই প্রসঙ্গে এই সময়কে জানিয়েছেন, দ্রুত ফলপ্রকাশ (Result Out), উত্তরপত্র মূল্যায়নে স্বচ্ছতা এবং অনলাইন সুবিধার জন্যই এমন মূল্যায়ন চালু করা হচ্ছে। যে কোনও পরীক্ষার্থী তথ্য জানার অধিকার আইনে (আরটিআই) প্রাপ্ত নম্বর চ্যালেঞ্জ করলে যাতে সহজেই তা দেখিয়ে দেওয়া যায় তাতে করে দেশের অনেক রাজ্যের প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ই ইতিমধ্যে ডিজিটাল ইভ্যালুয়েশন চালু করেছে। ম্যাকাউটের পরীক্ষা নিয়ামক শুভাশিস দত্তের দাবি, চার মিনিটেই খাতা দেখতে হবে, এমন কোনও বাধ্যবাধকতা নেই। একটি উত্তরপত্র মূল্যায়নে ন্যূনতম চার মিনিট সময় বেঁধে দেওয়া থাকবে। এতদিন স্পট মূল্যায়নে অনেক পরীক্ষকই দূর থেকে আসতেন, তাঁদের থাকার ব্যবস্থা করতে হত। অন্যথায় তাড়াতাড়ি খাতা দেখে চলে যেতেন। নতুন ব্যবস্থায় অনলাইনে একটি পাতা না দেখে পরের পাতায় যেতেই পারবেন না পরীক্ষকরা। কোনও পরীক্ষক শেষ পাতা অবধি না দেখলে সেই খাতা ও নম্বর সাবমিট করতেই পারবেন না। এতটাই নিখুঁত নতুন এই ব্যবস্থা।