Messi with 2026 WC Match Ball TRIONDA. (Photo Credits:X)

TRIONDA Ball: আগামী বছর জুনে হতে চলা আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্র, মেক্সিকো ও কানাডায় হতে চলা ফুটবল বিশ্বকাপের অফিসিয়াল বলের ( Official Match Ball) উন্মোচন হল। ১৯৭০ বিশ্বকাপ থেকেই টুর্নামেন্টের জন্য বিশেষ বল তৈরি করা হয়। টুর্নামেন্ট শুরুর আগে সেই বল উন্মোচন করা হয়। অ্যাডিডাস কোম্পানিই এই বল তৈরি করে। আগামী বছর ১১ জুন থেকে শুরু হতে চলা পুরুষদের ফুটবল বিশ্বকাপে ৪৮টি দেশ মূলপর্বে খেলবে। ধারেভারে এটাই সর্বকালের সবচেয়ে বড় ফুটবল বিশ্বকাপ হতে চলেছে। সেই বিশ্বকাপের অফিসিয়াল বলের নাম 'TRIONDA'। স্প্য়ানিশ ভাষা থেকে নেওয়া এই নামের বাংলা অর্থ হল 'তিন তরঙ্গ'। যেহেতু তিনটি দেশ মিলিতেভাবে বিশ্বকাপের আয়োজন করছে, তাই তিন তরঙ্গে মিলছে ভাবনা। বলটির ডিজাইনে সেই প্রতীকী ভাবনা জায়গা করে নিয়েছে।  বলের ভেতরে থাকা ছোট চিপটি প্রতি সেকেন্ডে ৫০০ বার অবস্থান ও গতি মাপে, মানে বলের প্রতিটি মুহূর্তের ছোট ছোট গতিবিধি ধরে রাখা যায়। অভিনব এই প্রযুক্তির ফলে অফসাইড বা দ্রুত সিদ্ধান্তে মানুষ-চোখের চেয়েও নির্দিষ্ট টাইমস্ট্যাম্প এবং বলের সঠিক পজিশন পাওয়া যায়। এবারই প্রথম তিনটি দেশ (কানাডা, মেক্সিকো এবং যুক্তরাষ্ট্র) একসঙ্গে বিশ্বকাপ আয়োজন করছে। নতুন বলের নাম ও নকশা সেই ঐতিহাসিক ঐক্যকেই উদযাপন করছে।

২০২৬ বিশ্বকাপের অফিসিয়াল বলের সঙ্গে মেসি

এবার বিশ্বকাপের বলে থাকছে ৫০০Hz মোশন সেন্সর

অ্যাডিডাসের দাবি এর চেয়ে ভাল মানের বল এর আগে কখনও কোনও বিশ্বকাপে তৈরি করা হয়নি। গতবার, ২০২২ কাতার বিশ্বকাপে খেলা হয়েছিল 'আল রিহলা' (Al Rihla)। অ্যাডিডাসের দাবি ট্রিয়োন্ডা বলটি ফুটবলারদের মধ্যে থেকে সেরাটা বের করে আনবে। বলটি যেমন হাল্কা, তেমনই গোলকিপারদের গ্রিপ করতেও সুবিধা হবে। পাশাপাশি ফ্রিকিক বা সেটপিসের সময়েও ফুটবলারদের দারুণ সুবিধা হবে। দাবি করা হচ্ছে, 'TRIONDA'বলের সৌজন্যে এবার বিশ্বকাপে কিছু অনবদ্য ফ্রিকিক দেখা যাবে। ফিফার এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, "গেম-চেঞ্জিং ফিফা বিশ্বকাপ ২৬-এর কাউন্টডাউন নতুন এক গুরুত্বপূর্ণ মাইলস্টোনে পৌঁছল। অফিসিয়াল ম্যাচ বল TRIONDA-এর আত্মপ্রকাশ সেই ইতিহাসের সাক্ষী হয়ে থাকল।"

দেখুন ছবিতে আসন্ন বিশ্বকাপের বল

এক নজরে TRIONDA বল

বিশ্বকাপ ২০২৬-এর অফিসিয়াল ম্যাচ বল TRIONDA নিয়ে নতুন উপস্থাপনা। রঙ, ডিজাইন আর প্রযুক্তি সব মিলিয়ে আকর্ষণীয়।

নিচে বিশ্বকাপ ২০২৬-এর অফিসিয়াল বলের কিছু বৈশিষ্ট্য--

TRIONDA-এর প্রযুক্তি : এক নজরে

১) ৫০০Hz মোশন সেন্সর: বলের ভেতরে থাকা ছোট চিপটি প্রতি সেকেন্ডে ৫০০ বার অবস্থান ও গতি মাপে। মানে বলের প্রতিটি মুহূর্তের ছোট ছোট গতিবিধি ধরে রাখা যায়।

২) কানেক্টেড সিস্টেম: সেন্সর থেকে তথ্য ওয়্যারলেসভাবে স্টেডিয়ামের ডেটা নোডে পাঠানো হয়। সেখান থেকে VAR এবং ম্যাচ অফিসিয়ালরা দ্রুত বিশ্লেষণ পায়।

৩) VAR-এ লাভ: অফসাইড বা দ্রুত সিদ্ধান্তে মানুষ-চোখের চেয়েও নির্দিষ্ট টাইমস্ট্যাম্প এবং বলের সঠিক পজিশন পাওয়া যায়। ফলে সিদ্ধান্ত আরো নির্ভুল হয়। VAR (Video Assistant Referee) হলো ফুটবলে এক ধরনের প্রযুক্তি, যেখানে ভিডিও রিপ্লে দেখে রেফারিকে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে সাহায্য করা হয়। VAR-র মূল কাজ হল গোল হয়েছে কি না নিশ্চিত করা।

৪) হার্ডওয়্যার সুরক্ষা: চিপ ও ইলেকট্রনিক্স জলে/আর্দ্রতায় টেকসই রাখার জন্য শক্তভাবে সিল করা থাকে যাতে বলের গুণগত মান ক্ষতিগ্রস্ত না হয়।

৫) নির্ভুলতা ও রিয়েল-টাইম: উচ্চ ফ্রিকোয়েন্সি (৫০০Hz) মানে আরও সূক্ষ্ম মুভমেন্ট ধরা পড়ে। রিয়েল-টাইম সিদ্ধান্ত নিতে সহায়ক।

৬) প্রতিবন্ধকতা ও সীমাবদ্ধতা: তবুও সব সিদ্ধান্ত কেবল ডেটার ওপরই নেয়া যায় না। ভিডিও, রেফারির পর্যবেক্ষণ আর ডেটাকে মিলিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

৭) বলের রঙ: লাল-সবুজ-নীল: আয়োজক দেশের পতাকা স্মরণে।

৮) বলের প্যানেল: চার-প্যানেল ডিজাইন।

৯) কেন্দ্রীয় চিত্র: একটি ত্রিভুজ- আমেরিকা, মেক্সিকো, কানাডার ঐক্য।

১০) বলে জাতীয় চিহ্ন: আমেরিকার-এর তারা, কানাডার ম্যাপল লিফ, মেক্সিকোর ঈগল।

১১) সোনালি আলংকারিক অংশ: ফিফা ট্রফির প্রতি শ্রদ্ধা।

১২) গহ্বর: গভীর সিম, হাওয়ায় ওড়ার সময় স্থিতিশীলতা বাড়ায়।

১৩) মসৃণ বল: এমবসড ডিটেইলগুলো সামনে থেকে দেখা যায়, দেখতে মসৃণ।

১৪) অভিনব প্রযুক্তি: ৫০০Hz মোশন সেন্সর (কানেক্টেড বল)।

১৫) ভার (VAR) সহায়তা: সোজা-টাইম ডেটা রেফারি সিস্টেমে যায়।

১৬) সিদ্ধান্ত নিতে সুবিধা: বিশেষ করে অফসাইড-সিদ্ধান্তে সাহায্য।

১৭) ফিফা প্রেসিডেন্টের মন্তব্য: ইনফান্তিনো TRIONDA-কে 'সুন্দর' বলে প্রশংসা করেছেন।