Rinku Singh

পার্থ প্রতিম চন্দ্র: ২০২২ টি টোয়েন্টি বিশ্বকাপ থেকে খালি হাতে ফেরার পর সংক্ষিপ্ততম ক্রিকেটের ফর্ম্য়াটে দেশের জার্সিতে বিরাট কোহলি, রোহিত শর্মা-দের মত সিনিয়রদের নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল। অনেকেই বলেছিলেন, বারবার খালি হাতে ফেরায় ২০২৪ টি টোয়েন্টি বিশ্বকাপে আর কোহলি, রোহিতদের নিয়ে নয়, বরং নতুন প্রতিভাবান ক্রিকেটারদের নিয়েই দল গড়া হবে। সেই মত গত বেশ কয়েকটা মাস আন্তর্জাতিক টি-২০ ক্রিকেটে প্রায় খেলানোই হয়নি কোহলি, রোহতিদের। কিন্তু এবারও রোহিত, বিরাট, জাদেজাদের দিকেই তাকিয়ে স্কোয়াড গড়লেন বিসিসিআইয়ের নির্বাচকরা।

কোনওরকম ঝুঁকি না নিয়ে একেবারে চমকহীন টি-২০ বিশ্বকাপের দল বাছলেন অজিত আগরকর ও তাঁর দল। হার্দিক পান্ডিয়া মুম্বই ইন্ডিয়ন্সের হয়ে একেবারেই ভাল খেলছেন না। বল হাতে হতাশ করছেন। পাটা উইকেটে ব্যাটেও সেই আগের ফর্ম নেই। চোট সারিয়ে ফেরা হার্দিকের ফিটনেস নিয়েও প্রশ্ন আছে। তবু তাঁকে সহ অধিনায়ক করে রেখে দিলেন নির্বাচকরা। সিরাজের টি-২০ ক্রিকেটে ধারাবাহিকতা নিয়ে অনেক প্রশ্ন উঠেছে। কিন্তু তাঁর পরিবর্তে কোনও তরুণ পেসারদের জায়গা দেওয়া হল না। আরও পড়ুন-কেমন হল ইংল্যান্ডের টি-২০ বিশ্বকাপ স্কোয়াড

টি-২০ বিশ্বকাপে টিম ইন্ডিয়ার স্কোয়াড

রোহিত শর্মা (অধিনায়ক), যশস্বী জয়সওয়াল, বিরাট কোহলি, সূর্যকুমার যাদব, সঞ্জু স্যামসন (উইকেটকিপার), ঋষভ পন্থ (উইকেটকিপার), হার্দিক পান্ডিয়া (সহ অধিনায়ক), শিবম দুবে, রবীন্দ্র জাদেজা, অক্ষর প্যাটেল, যুজবেন্দ্র চাহাল, কুলদীপ যাদব, জশপ্রীত বুমরা, মহম্মদ সিরাজ, আর্শদীপ সিং।

রিজার্ভ হিসেবে- শুবমন গিল, রিঙ্কু সিং, খলিল আহমেদ, আবেশ খান।

এক নজরে দেখে নেওয়া যাক আসন্ন টি টোয়েন্টি বিশ্বকাপে কারা ভারতীয় স্কোয়াডে জায়গা না পাওয়াটা দুর্ভাগ্যের--

১) রিঙ্কু সিং: কলকাতার কোহিনুর। শেষ ওভারে ৫ ছক্কার সুপার হিরো। রিঙ্কু সিং কলকাতা নাইট রাইডার্সের জার্সিতে অবিশ্বাস্য পারফরম্যান্সের পর জাতয়ী দলে জায়গা দেওয়া হয়। ভারতের হয়ে যতবার নেমেছেন রিঙ্কু মাতিয়ে দিয়েছেন। কিন্তু আসন্ন টি-২০ বিশ্বকাপে তাঁকে মূল স্কোয়াডে রাখা হল। বরং কেকেআর-এর কোহিনুরকে রিজার্ভ দলে রাখা হল। মূল দলের কোনও ব্যাটার চোট না পেলে রিঙ্কুকে তাঁর প্রথম বিশ্বকাপ খেলতে আরও অপেক্ষা করতে হবে।

২) কেএল রাহুল: তাঁকে নিয়ে যতবার প্রশ্ন ওঠে, ততবার তিনি জবাব দেন। এবার আইপিএলেও ভাল খেলছেন। কিন্তু ঋষভ পন্থ, সঞ্জু স্যামসনদের কাছে পিছিয়ে পড়ে স্কোয়াডে জায়গা পেলেন না লোকেশ রাহুল। স্পেশালিস্ট ব্যাটার হিসেবে সূর্যকুমার যাদবের থেকেও পিছিয়ে পড়েছেন রাহুল।

৩) রিয়ান পরাগ: রাজস্থান রয়্যালস থেকে অসম। আইপিএল থেকে সৈয়দ মুস্তাক আলি বা রঞ্জি। গত এক বছরে ঘরোয়া ক্রিকেটে অসমের তারকা ব্যাটার রিয়ান পরাগের পারফরম্যান্স অবিশ্বাস্য। ফিল্ডিংটাও দারুণ, ফিটনেস বেশ ভাল। জোর জল্পনা ছিল এবার বিশ্বকাপে রোহিতের সংসারে পরাগ ফুটে। কিন্তু না। পরাগকে আরও অপেক্ষা করতে হবে। আরও রান করতে হবে।

৪) মুকেশ কুমার: বাংলার পেসার মুকেশ কুমার ধারাবাহিকভাবে ভাল বল করছেন। টি-২০ ক্রিকেটের স্লগ ওভারে তাঁর বোলিংয়ের বৈচিত্র সবার প্রশংসা পেয়েছে। দেশের জার্সিতে যখনই সুযোগ পেয়েছেন, তখনই প্রমাণ করেছেন। কিন্তু এরপরেও মুকেশ ব্রাত্য থাকলেন। মূল দলে তো বটেই রিজার্ভ হিসেবেও থাকলেন না মুকেশ। মুকেশকে টেক্কা দিয়ে মূল স্কোয়াডে জায়গা পেলেন মহম্মদ সিরাজ, আর্শদীপ সিং। রিজার্ভ দলে স্পেশালিস্ট পেসার হিসেবে তাকলেন খলিল আহমেদ।

৫) শুবমন গিল: বিরাট কোহলির পর তিনিই ভারতীয় ক্রিকেটে নেক্সট বিগ থিং। ওয়ানডে বিশ্বকাপে অবিশ্বাস্য খেলেছিলেন। সীমিত ওভারের ক্রিকেটে ব্য়াটিং গড় অবিশ্বাস্য। কিন্তু স্ট্রাইক রেট আর এবারের আইপিএলে পারফরম্যান্সের ভিত্তিতে যশস্বী জয়সওয়ালের কাছে পিছিয়ে পড়ে মূল স্কোয়াড থেকে ব্রাত্য থাকলেন গিল।

৬) ঋতুরাজ গায়কোয়েড়- চলতি আইপিএলে একটা সেঞ্চুরি একটা ৯৮ রানের ইনিংস সহ অনবদ্য খেলছেন এবারের আইপিএলে ধোনির দলের অধিনায়ক ঋতুরাজ। কিন্তু যশস্বী ঝড়ের কাছে কিছুটা ম্লান হয়ে জায়গা পেলেন না বিশ্বকাপের স্কোয়াডে।