Manvinder Bisla. (Photo Credits:X)

IPL Final: এবারের আইপিএলের ফাইনালে আমেদাবাদে মুখোমুখি হচ্ছে রয়্য়াল চ্য়ালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু (Royal Challengers Bengaluru) বনাম পঞ্জাব কিংস (Punjab Kings)। আইপিএল পেতে চলেছে নতুন চ্যাম্পিয়ন। আজ ফাইনালে বিরাট কোহলির বেঙ্গালুরু বা প্রীতি জিন্টার পঞ্জাব যেই জিতুক, তারাই প্রথমবার আইপিএল খেতাব জিতছে। ১৮ বছরের চেষ্টায় এই প্রথম বিরাট কোহলি 'অধরা মাধুরী' আইপিএল জিততে পারেন কি না সেটাই দেখার।

কোহলির প্রথম নাকি শ্রেয়সের দ্বিতীয়

ইতিহাসের সামনে দাঁড়িয়ে পঞ্জাবের অধিনায়ক শ্রেয়স আইয়ার।আইপিএলের ইতিহাসে প্রথম অধিনায়ক হিসেবে তিনটি আলাদা দলের হয়ে ফাইনালে খেলতে নামছেন শ্রেয়স। আজ জিতলে, প্রথম অধিনায়ক হিসেবে আইপিএলে দুটো আলাদা ফ্র্য়াঞ্চাইজিকে নেতৃত্ব দিয়ে কাপ জিতবেন শ্রেয়স আইয়ার। এই নজির, ইতিহাস, দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসানের ফাইনালের আগে দেখে নেওয়া যাক আইপিএলের ফাইনালের ইতিহাসে সেরা পাঁচ স্মরণীয় পারফরম্যান্স--

১) মনবিন্দার বিসলা ( কেকেআর, ২০১২, সিএসকের বিরুদ্ধে)

৪৮ বলে ৮৯ রান

কোনও কোনও খেলোয়াড় শুধু একটা ইনিংস, একটা ওভার, কিংবা একটা ক্য়াচ লুফেই তাঁর দলের কাছে চিরকালীন সেরা স্মৃতির লোগো হয়ে যান। হরিয়ানার উইকেটকিপার-ব্য়াটার মনবিন্দর বিসলা কেকেআর-এর কাছে এমনই এক ক্রিকেটার। দেশের হয়ে তো দূরে থাক সেভাবে রাজ্য দলের খেলেও নাম করতে পারেননি। কিন্তু ২০১২ সালে আইপিএলের ফাইনালে এমএস ধোনির চেন্নাইয়ের বিরুদ্ধে জয়ের জন্য ১৯০ রান তাড়া করতে নেমে, কেকেআর-এর অখ্যাত ওপেনার বিসলা অবিশ্বাস্য ইনিংস খেলে কলকাতা নাইট রাইডার্সকে তাদের প্রথমবার আইপিএল খেতাব এনে দেন। ওপেনার-অধিনায়ক গৌতম গম্ভীর (২) প্রথম ওভারেই আউট হয়ে যাওয়ার পর, জাক কালিসের সঙ্গে জুটি বেঁধে অবিশ্বাস্য ইনিংস খেলে দেন বিসলা। ৪৮ বলে ৮৯ রানের ইনিংস খেলে ফাইনালের ম্যাচের সেরা হয়েছিলেন এখন ৪০ বছর বয়সী বিসলা। আইপিএল ফাইনালে এর আগে, পরে অনেক দুরন্ত ইনিংস খেলা হয়েছে, কিন্তু চিপকে ২০১২ আইপিএলের ফাইনালে বিসলার অমর ৮৯ রানের ইনিংসটা হয়তো কেকেআর সমর্থকরা কোনওদিনই ভুলতে পারবেন না।

২) ইউসুফ পাঠান (রাজস্থান রয়্যালস, চেন্নাইয়ের বিরুদ্ধে)

৩৯ বলে ৫৬ রান

প্রথম আইপিএলেক ফাইনালটা দারুণ উত্তেজক হয়েছিল। নবি মুম্বইয়ে আয়োজতি প্রথম আইপিএলের ফাইনালে মুখোমুখি হয়েছিল ধোনির চেন্নাই সুপার কিংস ও শেন ওয়ার্নের রাজস্থান রয়্যালস। প্রথমে ব্যাট করে ধোনিরা করেছিলেন ৫ উইকেটে ১৬৩ রান। সেই রান তাড়া করতে নেমে ৪২ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে এনতিনি, বালাজি, মুরলীধরণের পর বেশ চাপে পড়ে গিয়েছিল ওয়ার্নের রাজস্থান। কিন্তু পাঁচ নম্বরে নেমে ৩৯ বলে ৫৬ রানের দুরন্ত ইনিংস খেলে রাজস্থানকে প্রথম খেতাব এনে দেন ইউসুফ।

৩) শেন ওয়াটসন (সিএসকে, ২০১৮ সাল, সান রাইজার্স হায়দরাবাদের বিরুদ্ধে)

৫৭ বলে ১১৭ রান অপরাজিত (১১টি বাউন্ডারি, ৮টি ওভার বাউন্ডারি)

২০১৮ আইপিএলের ফাইনালে অবিশ্বাস্য ইনিংস খেলেন চেন্নাইয়ের শেন ওয়াটসন। ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে সেই ফাইনালে প্রথমে ব্যাট করে হায়দারাবাদ করেছিল ৬ উইকেটে ১৭৮। রান তাড়া করতে নেমে চেন্নাইয়ের অজি ওপেনার ওয়াটসন ৮টি ওভার বাউন্ডারি, ১১টি বাউন্ডারি হাঁকিয়ে একাই সহজে ধোনির দলকে জিতিয়ে আনেন। ২০১৮ আইপিএল ফাইনালে ওয়াটসনের ৫৭ বলে ১১৭ অপরাজিত ইনিংসটা টুর্নামেন্টের চূড়ান্ত খেতাবি লড়াইয়ে সেরাদের সেরা তালিকায় রাখা হয়।

৪) ঋদ্ধিমান সাহা (পঞ্জাব কিংস, ২০১৪ সাল, কেকেআর-এর বিরুদ্ধে)

৬৬ বলে ১১৫ রান অপরাজিত

আইপিএলের ইতিহাসে প্রথমবার সেঞ্চুরি করা কোনও ক্রিকেটার হলেন বাঙালি। ঋদ্ধিমান সাহা। বেঙ্গালুরুতে ২০১৪ আইপিএলের ফাইনালে ৩০ রানের মধ্যে ২ উইকেট হারিয়ে বড় চাপে পড়ে গিয়েছিল পঞ্জাব। কিন্তু সেখান থেকে ৬৬ বলে ১১৫ রানের অবিশ্বাস্য, অপরাজিত ইনিংস খেলে ব্যাট হাতে সুপারম্যান হয়ে ওঠেন ঋদ্ধি। সেই রাতে কলকাতার বিরুদ্ধে ঋদ্ধি ৮টি ওভার বাউন্ডারি, ১০টি বাউন্ডারি হাঁকিয়েছিলেন শিলিগুড়ির পাপালি। পঞ্জাবের সেই দলে থাকা বীরেন্দ্র সেওয়াগ, গ্লেন ম্যাক্সওয়েল, ডেভিড মিলার, জর্জ বেইলদের মত তারকা আন্তর্জাতিক ক্রিকেটাররা ম্লান হয়ে যায় ঋদ্ধি। সেই ফাইনালে প্রীতি জিন্টার দলের ১৯৯-র মধ্য়ে ঋদ্ধি করেন ১১৫, আর বাকিরা সেখানে করেন মাত্র ৮৪। শেষ অবধি অবশ্য দলের বোলারদের ব্যর্থতায় সেঞ্চুরি করেও হারতে হয় ঋদ্ধিমানকে।

৫) সুরেশ রায়না (সিএসকে, ২০১০ সাল, মুম্বই ইন্ডিয়ন্সের বিরুদ্ধে)

৩৫ বলে ৫৭ রান অপরাজিত

এমএস ধোনির প্রথম আইপিএল খেতাবের পিছনে সুরেশ রায়নার বড় অবদান। ২০১০ আইপিএলের ফাইনালে মুম্বই ইন্ডিয়ন্সের বিরুদ্ধে তিন নম্বরে নেমে রায়নার ৩৫ বলে ৫৭ রানের ইনিংসটা বড় ব্যবধান গড়ে দিয়েছিল।