শুক্রবার ডারবানের কিংসমিডে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে প্রথম টি-টোয়েন্টিতে ভারতের হয়ে ইনিংস ওপেন করেন উইকেটরক্ষক-ব্যাটার সঞ্জু স্যামসন (Sanju Samson)। ক্রিজে থাকাকালীন কেরালার ২৯ বছর বয়সী ডানহাতি ব্যাটার ৭টি চার ও ১০টি ছক্কার সাহায্যে শতক করেন। ২০ ওভারে ৮ উইকেট হারিয়ে বোর্ডে মোট ২০২ রান দেয় ভারত। দ্বিতীয় উইকেটে অধিনায়ক সূর্যকুমার যাদবের (১৭ বলে ২১ রান) সঙ্গে ৬৬ ও তৃতীয় উইকেটে তিলক ভার্মার (১৮ বলে ৩৩ রান) সঙ্গে ৭৭ রান যোগ করেন সঞ্জু। জবাবে মাত্র ১৪১ রানে অলআউট হয়ে যায় দক্ষিণ আফ্রিকা এবং ভারত ৬১ রানে ম্যাচটি জিতে নেয়। ভারতের দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে এখন ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেল ভারত। ম্যাচের নায়ক সঞ্জু ২০১৫ সালে ভারতের হয়ে অভিষেক করেন, কিন্তু গৌতম গম্ভীরের আমলেই তাকে ভারতীয় দলে বেশি সুযোগ দেওয়া হয়েছে। সেই সুযোগ কাজে লাগিয়ে গতকাল রেকর্ডের বন্যা বইয়ে দেন স্যামসন। AUS vs PAK 2nd ODI Result: বিশ্বকাপজয়ী অজিদের ঘরের মাঠে হারাল রিজওয়ানে পাকিস্তান
একনজরে সঞ্জু স্যামসনের রেকর্ডের তালিকা
-শুক্রবার প্রথম টি-টোয়েন্টিতে সেঞ্চুরি করে সঞ্জু ইতিহাসের প্রথম ভারতীয় ক্রিকেটার হিসেবে ক্রিকেটের সংক্ষিপ্ততম ফর্ম্যাটে পরপর দুটি সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছেন। ২০২৪ সালের ১২ অক্টোবর হায়দরাবাদে বাংলাদেশের বিপক্ষে ভারতের হয়ে শেষ টি-টোয়েন্টিতে স্যামসন ৪৭ বলে ১১১ রান করেছিলেন। স্যামসন প্রথম এশিয়ান এবং সামগ্রিকভাবে বিশ্বের চতুর্থ ব্যাটার যিনি টি-টোয়েন্টিতে টানা সেঞ্চুরি করেছেন।
-সুরেশ রায়না, রোহিত শর্মা ও সূর্যকুমার যাদবের পর চতুর্থ ভারতীয় ক্রিকেটার হিসেবে দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে টি-টোয়েন্টিতে সেঞ্চুরি করলেন স্যামসন।
-সূর্যকুমার যাদবের পর দ্বিতীয় ভারতীয় ব্যাটার হিসেবে দক্ষিণ আফ্রিকায় টি-টোয়েন্টি সেঞ্চুরি করলেন স্যামসন। ২০২৩ সালের ১৪ ডিসেম্বর জোহানেসবার্গে প্রোটিয়াদের বিরুদ্ধে ৫৬ বলে ১০০ রান করেছিলেন সূর্য।
-রোহিত শর্মা (৫), সূর্যকুমার যাদব (৪) এবং কেএল রাহুলের (২) পর চতুর্থ ভারতীয় ক্রিকেটার হিসেবে টি-টোয়েন্টিতে একাধিক সেঞ্চুরি করলেন স্যামসন।
-রোহিত ও সূর্যকুমারের পর সঞ্জু হলেন তৃতীয় ভারতীয় যিনি এক ক্যালেন্ডার বছরে একাধিক টি-টোয়েন্টি সেঞ্চুরি করেছেন। ২০১৮ সালে, রোহিত ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে ১০০* (ব্রিস্টল, ৮ জুলাই) এবং ১১১* বনাম ওয়েস্ট ইন্ডিজ (লখনউ, ৬ নভেম্বর) করেছিলেন। সূর্যকুমার ২০২২ সালে দুটি করে সেঞ্চুরি করেছিলেন (১১৭ বনাম ইংল্যান্ড, ১১১* বনাম নিউজিল্যান্ড) এবং ২০২৩ সালে (১১২* বনাম শ্রীলঙ্কা, ১০০ বনাম দক্ষিণ আফ্রিকা)।
-স্যামসনের ৫০ বলে ১০৭ রান ভারত ও দক্ষিণ আফ্রিকার মধ্যে খেলা টি-টোয়েন্টি ম্যাচে সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত স্কোর। ২০১৫ সালের ২ অক্টোবর ধর্মশালায় ৬৬ বলে করা রোহিতের নয় বছরের পুরনো ১০৬ রানের রেকর্ড ভেঙে দেন তিনি। দক্ষিণ আফ্রিকার ডেভিড মিলারও ২০২২ সালের অক্টোবরে ১০৬ রান করেছিলেন।
-স্যামসন শুক্রবার তার ১০৭ রানের ইনিংসে ১০টি ছক্কা মেরেছেন, যা কোনও ভারতীয় ব্যাটারের টি-টোয়েন্টি ইনিংসে যৌথভাবে সর্বাধিক ছক্কা মারার রেকর্ড। ২০১৭ সালের ডিসেম্বরে ইন্দোরের হোলকার স্টেডিয়ামে শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে ১১৮ রানের ইনিংস খেলে রোহিত ১০টি ছক্কা হাঁকিয়েছেন।
-ভারত ও দক্ষিণ আফ্রিকার মধ্যে টি-টোয়েন্টি ম্যাচে সবচেয়ে বেশি ছক্কা মারার রেকর্ড এখন স্যামসনের দখলে। তিনি রাইলি রুশো এবং সূর্যকুমারের রেকর্ড ভেঙে দিয়েছেন, যারা যথাক্রমে ২০২২ এবং ২০২৩ সালে তাদের ১০০ রানের ইনিংসে ৮টি ছক্কা মেরেছিলেন।
-রোহিত শর্মার পরে স্যামসন দ্বিতীয় ভারতীয় যিনি দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে ওয়ানডে এবং টি-টোয়েন্টি উভয় ফরম্যাটেই সেঞ্চুরি করেছেন। প্রোটিয়াদের বিপক্ষে রোহিতের নামে তিনটি ওয়ানডে এবং একটি টি-টোয়েন্টি সেঞ্চুরি রয়েছে, যেখানে স্যামসন উভয় ফর্ম্যাটে একটি করে সেঞ্চুরি করেছেন। ২০২৩ সালের ২১ ডিসেম্বর পার্লে দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে ভারতের হয়ে শেষ ওয়ানডে ম্যাচে স্যামসন ১০৮ রান করেছিলেন।
রবিবার (১০ নভেম্বর) সেন্ট জর্জেস পার্কে দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে ফের মুখমুখি ভারত এবং দক্ষিণ আফ্রিকা।