ছুটি পেলেই মন চায় একটু কোথাও যেন ঘুরে আসি। নির্জন প্রাকৃতিক পরিবেশ মন টানে সকলের । সেখানে যদি পাহাড়ের কোল থেকে ঝরনা ঝরে তা তো আর কথাই নেই। দীর্ঘ কর্মজীবনের ব্যস্ততা। একঘেয়েমি জীবন। সবকিছুকে নিমিষের মধ্যে দূরে সরিয়ে দেয় শান্ত নির্জন পরিবেশ। তাই ভ্রমন পিপাসুরা বারবার খুঁজে বেড়ান নতুন কোন বেড়ানোর জায়গা। আপনাদের এমনই এক জায়গার সন্ধান দেবো যেখানে এক গেলে নিজের অজান্তেই সময় পেরিয়ে যাবে। অরুণাচল প্রদেশে রয়েছে জিরো ভ্যালি। এক শান্ত নির্জন পরিবেশ। অপরূপ প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর। এটি একটি উপত্যকা। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ৫৫০০ ফুট উচ্চতায় অবস্থিত। প্রকৃতির অপরূপ শোভা দেখতে পাবেন এখানে। সারি সারি পাহাড়, সবুজ ধানক্ষেত আর নীল আকাশ মিলে সৃষ্টি করেছে এক স্বর্গীয় পরিবেশ।

তবে এই জিরো ভ্যালির মূল বাসিন্দারা আপাতানি জনগোষ্ঠী। তাদের জীবনযাত্রা সম্পূর্ণ আলাদা ধরনের। যা পর্যটকদের আকর্ষণ করে। , চাষাবাদের পদ্ধতি এবং সংস্কৃতিও পরখ করে দেখতে ইচ্ছা করে। মূলত এখানে ধান চাষ এবং মাছ চাষ একসাথে করা হয়। যা ইউনেস্কো স্বীকৃত ‘ইনট্যানজিবল কালচারাল হেরিটেজ’। এই উপত্যকার মহিলারা নাকের ওপরের ট্যাটু করেন। শুধু তাই নয় নাকের অলংকার প্রাচীন জনগোষ্ঠীকে মনে করিয়ে দেয়। সকাল হলেই এলাকা মেঘে ঢেকে যায়। বিভিন্ন প্রজাতির পাখি রয়েছে। সেই পাখির ডাক আপনার মনকে শান্তি দেবে।। পাহাড়ে ঘেরা এই প্রাকৃতিক পরিবেশের মধ্যে এমন সৌন্দর্য দেখতে দেখতে আপনার মন হারিয়ে যাবে অন্য কোথাও। এখানে আছে তাল্লো ও হাপোলি গ্রামের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, পাহাড়ি ঝরনা, এবং কাছেই পাকা বিচি কিংবা সিপি নদীর শান্ত রূপ।

এই মে মাস হল এই উপত্যকা ভ্রমণের উপযুক্ত সময়। এই সময় এখানকার আবহাওয়া খুব আরামদায়ক হয়। প্রকৃতি আপন সাজে সেজে ওঠে এই সময়। অসাধারণ প্রাকৃতিক সৌন্দর্য অসংখ্য প্রকৃতিপ্রেমীকে আকৃষ্ট করে। দূর-দূরান্ত থেকে এই স্থানের অলৌকিক প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে তাদের মনকে ডুবিয়ে দিতে ভ্রমণ করেন। এই স্থানটি অ্যাডভেঞ্চার সন্ধানীদের জন্যও দুর্দান্ত। যারা জঙ্গলে ক্যাম্পিং মজা বা বন্যপ্রাণী দেখার জন্য উন্মুখ হন, জিরো উপত্যকা কাউকে হতাশ করবে না। ঘন বাঁশের বন এবং লম্বা নীল ও সবুজ পাইন গাছ দিয়ে সারিবদ্ধ মনোরম পথ দিয়ে ঘেরা এই অসাধারণ পাহাড়ি জনপদের মনোমুগ্ধকর সৌন্দর্য ।