বালুরঘাট, ১২ ফেব্রুয়ারি: দক্ষিণ দিনাজপুর (South Dinajpur) জেলা সদর বালুরঘাট হাসপাতালে (Balurghat Hospital) চালু হল ট্রান্সজেন্ডার ওয়ার্ডের (Transgender Ward)। উদ্বোধন করা হল ৪টি শয্যার (Bed)। সেই সঙ্গেই পশ্চিমবঙ্গে (West Bengal) এই প্রথম চালু হল রূপান্তরকামীদের (Transgender) জন্য আলাদা স্বাস্থ্য ব্যবস্থা। জেলা স্বাস্থ্য দফতরের উদ্যোগে এমন পদক্ষেপ নেওয়া হল। ওয়ার্ডের সূচনা করেন জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সুকুমার দে, জেলা আইন কর্তৃপক্ষ শুভ্রসোম ঘোষাল, বালুরঘাট হাসপাতাল সুপার তপন কুমার বিশ্বাস সহ অন্যান্যরা আধিকারিকরা। গতকাল মঙ্গলবার এই ওয়ার্ডের উদ্বোধন হয়।
অবশেষে পূরণ হল দীর্ঘ দিনের দাবি। ট্রান্সজেন্ডার বা রুপান্তরকামীদের কথা মাথায় রেখে ৪টি শয্যা চালু করল জেলা স্বাস্থ্য দফতর। এদিন বিকেলে একটি অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে রুপান্তরকামীদের জন্য নতুন চারটি শয্যার উদ্বোধন করা হয়। জানা গিয়েছে শুধুমাত্র রুপান্তরকামীদের জন্যই চারটি শয্যা সংরক্ষিত থাকবে। বালুরঘাট জেলা সদর হাসপাতালের নীচের তলায় মেডিসিন ব্লকে রুপান্তরকামীদের জন্য এই আসনগুলি সংরক্ষিত করা হয়েছে। দীর্ঘ দিনের দাবী জানানোর পর খুশি রুপান্তরকামীরা। তাঁরা জেলা হাসপাতাল কতৃপক্ষকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। সমাজ বদলাচ্ছে। দৃষ্টিভঙ্গিও বদলাচ্ছে আমাদের। তারই প্রকৃষ্ট উদাহরণ বালুরঘাট হাসপাতালের এই ট্রান্সজেন্ডার স্পেশাল ওয়ার্ড। অসুস্থ হলে রুপান্তরকামীদের মহিলা না পুরুষ কোন ওয়ার্ডে রাখা হবে, তা ঠিক করতেই সময় লেগে যায় বিস্তর। এই সমস্যা মেটাতে নজির গড়ে প্রথমবার সরকারি হাসপাতালে রূপান্তরকামীদের জন্য বিশেষ ওয়ার্ড চালু হল। অন্যান্য ওয়ার্ডের মতো উদ্বোধন হওয়া সেই বিশেষ ওয়ার্ডেও রয়েছে সমস্ত ব্যবস্থাপনা। মঙ্গলবার পৃথক ওয়ার্ডের উদ্বোধন করেন রূপান্তরকামী বনি রায় (Bonny Roy)। সংবাদ প্রতিদিনের খবর অনুযায়ী বালুরঘাট সদর হাসপাতালের সুপার তপন বিশ্বাস বলেন, “সমাজ এগোলেও রূপান্তরকামীরা এখনও উপহাসের শিকার। তাঁদের বাঁকা চোখে দেখেন অনেকেই। তাই এই বিশেষ ওয়ার্ড খোলার ভীষণ প্রয়োজন ছিল। জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক এই বিশেষ ওয়ার্ড চালুর প্রধান উদ্যোক্তা।” আরও পড়ুন: Fire At Sonarpur Local Train: অফিস টাইমে সোনারপুর লোকালে আগুন, কিছুক্ষণের জন্য বন্ধ ট্রেন চলাচল
জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সুকুমার দে বলেন, জেলাতে এই মুহূর্তে অন্তত ৩০০ জন রূপান্তরকামী রয়েছেন। চিকিৎসার (Treatment) সময় তাঁদের পুরুষ নাকি মহিলা বিভাগে রাখা হবে তা নিয়ে সমস্যা হত। এই ধরনের ওয়ার্ড চালু করে পৃথকভাবে রূপান্তরকামীদের চিকিৎসা করা যায় কিনা তা আমার কাছে জানতে চাওয়া হয়। আমি জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলি। শেষে এই ব্যবস্থা করা হয়েছে। এখন চিকিৎসা করাতে এসে অন্তত উপহাসের শিকার হতে হবে না তাঁদের। রূপান্তরকামীদের জন্য বিশেষ ওয়ার্ড খুলে দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে পারায় ভীষণ খুশি আমরা।