প্রতি বছর ১ আগস্ট থেকে ৭ আগস্ট পর্যন্ত পালন করা হয় বিশ্ব স্তন্যপান সপ্তাহ। বর্তমান যুগে বারবার উঠে আসে একটি প্রশ্ন, আধুনিক যুগের মহিলারা তাদের সন্তানদের কী বুকের দুধ খাওয়াবে? পুরোনো বিশ্বাস অনুযায়ী, বুকের দুধ খাওয়ানো মা ও শিশু উভয়ের জন্যই খুবই উপকারী। প্রসবের পর প্রথম যে দুধ স্তনে আসে তাকে বলে কোলোস্ট্রাম। ডব্লিউএইচওর মতে, কোলোস্ট্রামযুক্ত মায়ের হলুদ ঘন দুধ নবজাতকের সম্পূর্ণ খাদ্য। এই দুধ জন্মের ১ ঘন্টার মধ্যে শিশুকে দেওয়া উচিত বলে বিশ্বাস করা হয়।

মায়ের দুধের সময়কাল প্রতিটি মহিলার জন্য আলাদা হয়। অনেক মা শিশুর জন্মের পর থেকে ৫ বছর পর্যন্ত দুধ পান করাতে পারেন, আবার অনেক মা ৫ বছরেরও কম সময় পায়। মায়ের খাদ্যাভ্যাসের উপর নির্ভর করে এই সময়। পুরোনো বিশ্বাস অনুযায়ী, যতক্ষণ শিশু মায়ের দুধ পান করে ততক্ষণ স্তনে দুধ উৎপাদন হয় এবং শিশু দুধ পান করা বন্ধ করে দিলে স্তনে দুধ উৎপাদন বন্ধ হয়ে যায়। বিশেষজ্ঞদের মতে, মা ও সন্তান উভয়ের জন্যই বুকের দুধ খাওয়ানো খুবই উপকারী। মানসিক বন্ধন এবং সুস্থ থাকার জন্য এটি গুরুত্বপূর্ণ। মায়েদের জন্য বুকের দুধ খাওয়ানোর প্রথম এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সুবিধা হল যে মা যখন প্রথমবার তার সন্তানকে বুকের দুধ খাওয়ান, তখন তিনি নিজের এবং সন্তানের মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ বন্ধন স্থাপন করেন। এর ফলে দুজনের মধ্যে একটা মানসিক বন্ধন তৈরি হয়। এর অন্য একটি সুবিধা হল যে প্রসবের সময় যে সমস্ত দুঃখ কষ্টের মুখোমুখি হয় তা ভুলে যান মা।

বিশেষজ্ঞদের মতে, স্তন্যপান করার সময় সর্বাধিক ক্যালোরি ব্যয় হয়। বুকের দুধ খাওয়ালে প্রসবের সময় মায়ের বর্ধিত ওজন নিয়ন্ত্রণে আসে অর্থাৎ প্রসবের পর সঠিক খাদ্যাভ্যাস এবং নিয়মিত সন্তানকে বুকের দুধ খাওয়ালে সহজেই ওজন কমাতে পারে। বিশেষজ্ঞদের মতে, স্তন্যপান করানোর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সুবিধা হল এর ফলে মহিলাদের স্তন ক্যান্সারের মতো মারাত্মক রোগ থেকে রক্ষা পাওয়া সম্ভব। এছাড়া মায়ের প্রথম দুধ শিশুর জন্য খুবই ভালো। মায়ের দুধে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিবডি থাকে যা শিশুর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে।