
প্রাচীনকাল থেকেই বার্লি ঔষধি গুণসম্পন্ন খাবার। বর্তমান দৈনন্দিন জীবনে এটি কার্যকর। গমের মতোই বার্লি একটি পুষ্টিকর শস্য, যা খাদ্যতালিকায় যুক্ত করে ঘরোয়া প্রতিকারেও ব্যবহৃত হয়। প্রাচীন আয়ুর্বেদ এবং বৈদিক শাস্ত্রে বার্লির অনেক উপকারিতা বর্ণনা করা হয়েছে। ২০২২ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি প্রকাশিত একটি গবেষণা অনুসারে, বার্লির স্বাদ তেতো, মিষ্টি, ঝাল এবং ঠান্ডা এবং এটি শরীরে কফ ও পিত্ত কমাতে সাহায্য করে। বার্লিকে শক্তি বৃদ্ধিকারী, কামশক্তি বৃদ্ধিকারী, হজম বৃদ্ধিকারী এবং মূত্রনালীর সমস্যায় উপশমকারী হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এছাড়াও, এটি ত্বক, হেমাটেমেসিস, শ্বাসকষ্ট, কাশি এবং ডায়াবেটিসের মতো রোগেও কার্যকর। গবেষণা অনুসারে, বার্লি ঔষধি গুণে সমৃদ্ধ একটি পুষ্টিকর শস্য, যা শরীরকে শক্তিই জোগানোর সঙ্গে অনেক স্বাস্থ্য সমস্যাও নিরাময় করে। এটি বিভিন্ন ঘরোয়া প্রতিকারের মাধ্যমে শরীরের স্বাস্থ্যের উন্নতি করতে পারে এবং অনেক রোগ এড়াতে পারে।
নিয়মিত বার্লি খেলে বিভিন্নভাবে স্বাস্থ্যের উন্নতি হয়। বার্লি ফাইবার, প্রোটিন, ভিটামিন এবং খনিজ সমৃদ্ধ। এতে ক্যালোরি কম এবং ফাইবার বেশি থাকে তাই এটি ওজন কমাতে এবং কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে সাহায্য করে। এতে উপস্থিত বিটা-গ্লুকান রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। যেখানে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং অন্যান্য পুষ্টি উপাদান রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। ঔষধি গুণসম্পন্ন এই খাবারে ম্যাগনেসিয়াম, ফসফরাস এবং ক্যালসিয়ামের মতো পুষ্টিগুণ প্রচুর পরিমাণে রয়েছে যা হাড়ের জন্য উপকারী। তথ্য অনুযায়ী, খোসা ছাড়ানো বার্লি বীজ ভেজে পিষে তাতে মধু এবং জলের সঙ্গে মিশিয়ে সাত্তু তৈরি করে কয়েকদিন খেলে ডায়াবেটিস থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব।
গরমের কারণে শরীরে জ্বালাপোড়া হলে বার্লি সাত্তু খাওয়া যেতে পারে। এটি শরীরকে ঠান্ডা করে এবং গরমের সমস্যা কমায়। দুধের সঙ্গে বার্লির পোরিজ খেলে মূত্রাশয়ের সমস্যা দূর হয়। বার্লির দানা পিষে জলে ভিজিয়ে পরে গরম জল দিয়ে কুলি করলে গলা ব্যথা এবং কাশি থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব। ডুমুরের রস বার্লির আটার সঙ্গে মিশিয়ে ক্ষতস্থানে লাগালে ক্ষত দ্রুত নিরাময়ে সাহায্য করে। বার্লি এবং মুগের স্যুপ খেলে অন্ত্রের তাপ ঠান্ডা হয় এবং ডায়রিয়ার সমস্যা দূর হয়। বার্লির জল খেলে পাথরের সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। তিল এবং চিনির সঙ্গে ছেঁকে নেওয়া বার্লির আটা মিশিয়ে খেলে গর্ভপাতের সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। কানের প্রদাহ বা পিত্তের সমস্যার ক্ষেত্রে, বার্লির আটার সঙ্গে ইসবগুলের খোসা এবং ভিনেগারের মিশ্রণ লাগালে আরাম পাওয়া যায়।