Bhoot Chaurdashi: ভূত চতুর্দশীর নির্ঘণ্টে ১৪ প্রঁদ্বীঁপেঁরঁ আঁলোঁয়ঁ সঁবাঁইঁকেঁ জাঁনাঁইঁ ভৌঁতিঁকঁ শুঁভেঁচ্ছাঁ
ভূত চতুর্দশী (Photo Credit: File Photo)

Bhoot Chaturdashi: এমনিতেই বিদেশি উৎসবের আমেজকে নিজের করে নিতে বাঙালি কখনও কার্পণ্য করেনি। তাই তো বিদেশিদের হ্যালোউইন-এর আদলে আজকাল ভূত চতুর্দশীও মার্কেটে হিট। সেই কবে সুতানুটি গোবিন্দপুর ও কলকাতা জুড়ে তিলোত্তমা তৈরি হল। ঝাঁকে ঝাঁকে গাড়ি, আলোর রোশনাই, প্রাসাদোপম বাড়ি, রাত বিরেতে ডিস্কো লাইটের ঝকমারি, ঘুমের ঘোরেও জ্বলছে মোবাইল। মেসেজ এলে আলো, হোয়াটসঅ্যাপ অ্যাক্টিভ থাকলে আলো, মেল এলে আলো। এত আলোর চক্করে ভূতবাবাজিরা তো কবেই পগাড় পার। তারউপরে তো ভুষুণ্ডির মাঠও আজকাল খালি নেই সেখানে দিনের বেলা প্রোমোটারের হম্বিতম্বি আর রাতে পাহারাদারদের বিড়ির আগুন। উফ, মামদো, গেছো, মেছো সবারই বাজার খারাপ। শেষে কিনা সেই মানুষই এখন ভূতকে নিয়ে মেসেজ লেখে।

বাঙালির বারো মাসে তেরো পার্বণ, তবুও মনে হয় যেন সারা বছর আর উৎসব কই। ওই বছরের কয়েকটা দিন। সে যাইহোক, সুযোগ ও কারণ পেলে বাঙালি উৎসবের আমেজ হাতছাড়া করতে চায় না। তাইতো কয়েক বছর আগেও প্রায় টিমটিমে ১৪ প্রদীপ জ্বেলে কেটে যাওয়া ভূত চতুর্দশী আজ উৎসবের খাতায় জ্বল জ্বল করছে। এ যেন দুয়োরানি থেকে সুয়োরানির মর্যাদা মিলেছে দিনটির। তাই তো সোশ্যাল মিডিয়ায় ভূত চতুর্দশীর নানা গ্রিটিংস, শুভেচ্ছা বার্তা থেকে শুরু করে কীই নেই। ওই দিন সকালে বাজারে গেলে পরিচিত সবজি দোকানি আপনার ব্যাগে ১৪ শাকের প্যাকেট ভরে দিলে মোটেও আশ্চর্য হবেন না। আরও পড়ুন-Bhoot Chaturdashi 2020 Wishes: করোনাকালে ভূত চতুর্দশী উপলক্ষে আপনার বন্ধু-পরিজনদের পাঠিয়ে দিন এই বাংলা Facebook Greetings, WhatsApp Status, GIFs, HD Wallpapers এবং SMS শুভেচ্ছাগুলি

যাকগে মোদ্দাকথা হল কালীপুজোর আগের দিনই ভূত চতুর্দশী। চতুর্দশী তাই ১৪ শাক খেয়ে ১৪ প্রদীপ জ্বালিয়ে এদিন পরলোকগত বংশধরদের তুষ্ট করার রীতি রয়েছে। এদিন সন্ধ্যায় প্রেতাত্মারা বাড়িতে আসে, তেনাদের যাতায়াতের পথকে আলোকিত করতেই গৃহস্থের দ্বারে জ্বলে ১৪ প্রদীপ। হিন্দু পুরাণে বলা হয়েছে যে, এই তিথিতে সন্ধে নামার পরেই অশরীরিদের প্রকোপ থেকে রক্ষা পেতে গৃহস্থের দ্বারে ১৪ প্রদীপ জ্বালানো হয়ে থাকে| তবে যে মতটি সর্বাধিক প্রচলিত তা হল, নরকাসুর রূপী রাজা বলি তখন সাধনবলে শক্তি অর্জন করে স্বর্গ, মর্ত্য ও পাতাল জয় করে হত্যাযজ্ঞে মেতে উঠেছিল এমনকী, দেবতারাও রেহাই পাচ্ছিলেন না।

এমতাবস্থায় দানব রাজা বলির তাণ্ডব থামাতে দেবগুরু বৃহস্পতি ভগবান বিষ্ণুকে একটা উপায় করতে বললেন। সেইমতো বামন রূপে ভগবান বিষ্ণু বলি রাজার কাছে এসে তিন পা জমি ভিক্ষা চাইলেন। দানবরাজ বলি প্রথমেই বুঝেছিলেন এই বামন আর কেউ নন, স্বয়ং বিষ্ণু। কিন্তু এরপর না বোঝার ভান করে তিনপদ জমি দানের চুক্তিতে রাজি হলেন তিনি। এদিকে জমি পেয়ে ভগবান বিষ্ণু দু’পা দিয়ে স্বর্গ ও মর্ত্য দখল করে নিলেন। তারপর নাভি থেকে তৃতীয় পা বের করে রাখলেন বলি রাজার মাথার উপরে, আর বলিকে ঠেলে দিলেন পাতালে। সেই থেকে বলির পাতালই হল আবাস। এই ভূত চতুর্দশীর দিন মর্ত্যে আসেন বলিরাজ। যেহেতু জেনেবুঝে তিনি জমি দান করেছিলেন তাই ভগবান বিষ্ণু বলির নরকাসুর রূপের পুজোর প্রবর্তন করেন। রাজা বলি কালীপুজোর আগের দিন ভূত চতুর্দশীর তিথিতে অসংখ্য অনুচর ও ভূত, প্রেতকে সঙ্গে নিয়ে মর্ত্যে নেমে আসেন পুজো নিতে। তবে বেশি ভয় পেয়ে কাজ নেই, আজ যে পেত্নী, শাঁকচুন্নি, মামদো, গেছো, ব্রহ্মদত্যিদের পার্টি টাইম, তাই এনজয়।