ভগবান শিবের রয়েছে বিভিন্ন রূপ। তিনি অত্যন্ত নিষ্পাপ হওয়ায় ভক্তদের পুজোয় খুব দ্রুত প্রসন্ন হয়ে যান, অন্যদিকে মহাদেব ক্রুদ্ধ হলে হয়ে যান ধ্বংসাত্মক, এই রূপকে বলা হয় রুদ্র অবতার। তবে ভক্তদের ধ্বংসাত্মক রূপ দেখান না তিনি, এই কারণেই শ্রাবণ মাসের সোমবারে মহাদেবের রুদ্রাভিষেক করেন ভক্তরা। জ্যোতিষীদের মতে, শ্রাবণ মাসে রুদ্রাভিষেক অনুষ্ঠান করলে সন্তুষ্ট হয়ে সমস্ত ইচ্ছা পূরণের জন্য আশীর্বাদ দেন ভগবান শিব।
মান্যতা রয়েছে যে জন্মকুণ্ডলীতে চন্দ্র গ্রহ রুষ্ট হলে মানসিক দুশ্চিন্তা ও চাপের সম্মুখীন হতে হয়। জ্যোতিষীদের মতে, এই ধরনের সমস্যা দেখা দিলে বা এই ধরনের অন্য কোনও সমস্যায় ভুগলে এবং সমস্ত ব্যবস্থা নেওয়ার পরেও জীবনে শান্তি না এলে, অবশ্যই রুদ্রাভিষেক অনুষ্ঠান করা উচিত। রাবণের সঙ্গে যুদ্ধে জয়ী হওয়ার জন্য লঙ্কায় রওনা দেওয়ার আগে রামেশ্বরমে রুদ্রাভিষেক পুজো করেছিলেন ভগবান শ্রী রাম। রাবণ মহাদেবের বড় ভক্ত হওয়া সত্ত্বেও অধার্মিকতার উপর ধর্মের জয়ের জন্য শ্রী রামকে আশীর্বাদ দিয়েছিলেন ভগবান শিব। এই রুদ্রাভিষেক পুজোর জন্য শিবলিঙ্গ থাকা আবশ্যক।
রুদ্রাভিষেকে শিবলিঙ্গে জলাভিষেক করার আগে অবশ্যই পুজো করতে হবে ভগবান গণেশের, তবেই রুদ্রাভিষেকের পুণ্যতা পাবে। ভগবান গণেশের পুজোর সঙ্গে পুজো করতে হয় নবগ্রহের। অভিজ্ঞ পণ্ডিতের মাধ্যমে নিয়ম মেনে করা উচিত রুদ্রাভিষেক পুজো। পুজোর নিয়ম অনুযায়ী রুদ্রাভিষেকের সময় শিবলিঙ্গকে পবিত্র স্নান করিয়ে শুরু করা হয় পুজোর অনুষ্ঠান। রুদ্রাভিষেক করা হয় ছয়টি উপায়ে। প্রথমে জল দিয়ে অভিষেক, দ্বিতীয় মধু দিয়ে অভিষেক, তৃতীয় দই দিয়ে অভিষেক, চতুর্থ দুধ দিয়ে অভিষেক, পঞ্চম খাঁটি ঘি দিয়ে অভিষেক এবং পঞ্চামৃত দিয়ে করা হয় ষষ্ঠ ও অন্তিম অভিষেক।