দেশজুড়ে ব্যাপক উৎসাহের সঙ্গে পালিত হয় বসন্ত পঞ্চমীর উৎসব (Basant Panchami)। এই দিন বিদ্যা বুদ্ধি জ্ঞানের দেবী মা সরস্বতীর পুজো (Saraswati Puja) করা হয়। এই দিন হলুদ বস্ত্র পরিধান করে দেবী সরস্বতীকে হলুদ জিনিস নিবেদন করা হয়। মা সরস্বতীর পুজোর জোগাড়ে বিশেষ উৎসাহ দেখতে পাওয়া যায় শিশু ও পড়ুয়াদের মধ্যে, যাতে মা সরস্বতীর আশীর্বাদে তাদের পড়াশোনায় মনোযোগ আরও বেড়ে যায়। বসন্ত পঞ্চমী দেশের বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন ঐতিহ্য মেনে পালিত হয়। তবে পশ্চিমবঙ্গে বসন্ত পঞ্চমীর দিনটি সরস্বতী পুজোর দিন হিসেবেই গুরুত্ব দেওয়া হয়।

পঞ্জিকা অনুসারে, মাঘ মাসের শুক্লপক্ষের পঞ্চমী তিথিতে পালিত হয় বসন্ত পঞ্চমী। পশ্চিমবঙ্গে সরস্বতী পুজোর দিনটিকে বাঙালির ভ্যালেন্টাইনস ডে-ও বলা হয়। এই দিন থেকেই শুরু হয় বসন্ত ঋতু। আর বসন্ত মানেই নানা রংয়ের ফুলে ভরে ওঠে চারিদিক। সেই ফুলের গন্ধে আবহাওয়া খুবই মনোরম হয়ে ওঠে। এবার জেনে নেওয়া যাক বাংলায় বসন্ত পঞ্চমী কীভাবে পালিত হয়।

বসন্ত পঞ্চমীর দিন স্থাপন করা হয় জ্ঞান ও প্রজ্ঞার দেবী মা সরস্বতীর মূর্তি। বাড়িতে হোক, বা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে, বা পাড়ার অলিগলিতে, এদিন বাংলায় খুব ধুমধাম করে মায়ের পুজো করা হয়। সকলে দেবী সরস্বতীর অঞ্জলি দিয়ে তারপরেই কিছু খায়, বিশেষ করে পড়ুয়ারা।

বসন্ত পঞ্চমীর উৎসব বছরের পর বছর ধরে একই রীতিতে পালিত হয়ে চলেছে বাংলায়। প্রায় সকলেই হলুদ বস্ত্র পরিধান করে মা সরস্বতীর পুজার দিন। ছোট থেকে বড় সকলকেই ভারতীয় পোশাকে সজ্জিত হতে দেখা যায় এদিন। একদিকে ছেলেরা কুর্তা বা পাঞ্জাবি পায়জামা পরে, অন্যদিকে মেয়েরা এই দিনে শাড়ি পরতে পছন্দ করে। এমনকি ছোট ছোট মেয়েদেরও হলুদ শাড়ি পরানো হয় এদিন। আসলে এই রঙটি শুভ বলে মনে করা হয় বাংলায়। এই দিনে দেবী সরস্বতীকে হলুদ ফুল, হলুদ খাবার এবং নানা রকমের হলুদ জিনিস নিবেদন করা হয়। পশ্চিমবঙ্গে, পলাশ ফুল দিয়ে দেবীর কাছে প্রার্থনা করা হয়।

সরস্বতী পুজোর দিন বাংলায় হাতেখড়ির অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। মা সরস্বতীকে সাক্ষী রেখে হাতেখড়ির অনুষ্ঠানের মধ্যে দিয়ে প্রথমবারের মতো একটি শিশু হাতে চক বা পেন্সিল ধরে। পুজোর পুরোহিত বা পরিবারের বড় সদস্য শিশুর হাত ধরে প্রথম অক্ষর স্লেটে লিখে দেন। বাঙালিদের কাছে দেবীর সামনে লেখা প্রথম বর্ণ এবং প্রথম পাঠ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।