তামিলনাড়ুর শ্রীপেরামবুদুরে নির্বাচনী সমাবেশে পৌঁছানোর জন্য তাড়াহুড়ো করছিলেন রাজীব গান্ধী। এই তাড়াহুড়োর জন্য ব্যক্তিগত নিরাপত্তা প্রধান ছাড়াই বিশাখাপত্তনম থেকে যাত্রা করেছিলেন তিনি, যার পরিণতি তাঁর মৃত্যু হবে, তা হয়তো কেউ কল্পনাও করতে পারেনি। চলুন জেনে নেওয়া যাক সেই রাতে শ্রীপেরামবুদুরে কী ঘটেছিল। প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধীর হত্যার আগে ভোটারদের উত্তেজনা দেখে মনে হচ্ছিল নিজের জায়গা ধরে রাখতে সক্ষম কংগ্রেস। ১৯৯১ সালে ক্ষমতায় ফিরে আসার বিষয়ে আত্মবিশ্বাসী ছিলেন রাজীব গান্ধী। তাই ক্রমাগত নির্বাচনী প্রচার ও সমাবেশ করে যাচ্ছিলেন তিনি।
সেদিন সন্ধ্যা ৬টা নাগাদ চেন্নাই যাওয়ার জন্য প্রস্তুত হেলিকপ্টার। অন্ধ্রপ্রদেশের বিশাখাপত্তনমে নির্বাচনী সভা শেষ করে চেন্নাই যাওয়ার পরিকল্পনা করেছিলেন রাজীব গান্ধী। রাত ৯টা নাগাদ চেন্নাই পৌঁছান তিনি। রাজীব গান্ধী বিমানবন্দরে পৌঁছাতেই তাঁকে স্বাগত জানান কংগ্রেস নেতারা। ১৯৯১ সালের ২১ মে রাত ১০:১০ মিনিটে শ্রীপেরামবুদুরে পৌঁছান রাজীব গান্ধী। সেখানে তার জন্য অপেক্ষা করছিল বিশাল জনতা। সেই রাতেই শ্রীপেরামবুদুরের নির্বাচনী সমাবেশে ভাষণ দেওয়ার কথা ছিল তাঁর।
শ্রীপেরামবুদুরের সমাবেশে নারী ও পুরুষের জন্য ভিন্ন ভিন্ন গ্যালারি করা হয়েছিল। সিকিউরিটি কভার ছাড়া রাজীব গান্ধী প্রথমে পুরুষদের গ্যালারিতে এবং তারপর মহিলাদের গ্যালারিতে গিয়েছিলেন। তাঁকে সামনে পেয়ে সবাই উল্লাস করছিল। এময় সময় হঠাৎ করেই এক মহিলা বেড়া পেরিয়ে রাজীব গান্ধীর দিকে এগিয়ে যায়। নিরাপত্তাকর্মীরা ওই মহিলাকে বাধা দিলে তাকে আসতে দেওয়ার জন্য নির্দেশ দেন রাজীব গান্ধী। ওই মহিলা পা ছুঁতে নিচু হলে রাজীব গান্ধী তাকে আশীর্বাদ করেন এবং উঠে দাঁড়াতে বলেন। ততক্ষণে ওই মহিলা তার কোমরে বাঁধা বিস্ফোরকের বোতাম টিপে দিয়েছেন। আচমকা বিকট শব্দে কেঁপে ওঠে চারিদিক, সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ে বিস্ফোরণের আগুন ও ধোঁয়া। সত্যি হয় রাজীব গান্ধীর ৭ বছর আগের ভবিষ্যদ্বাণী।