আশ্বিন মাসের নবরাত্রির অষ্টম দিনে দেবী মহাগৌরীর আরাধনা করেন ভক্তরা। এই দেবীর রূপ এতই ফর্সা যে তাঁকে শঙ্খ, চাঁদ আর জুঁই ফুলের সঙ্গে তুলনা করা হয়। মহাগৌরী শব্দের আভিধানিক অর্থ ধরলে মহা মানে মহান। আর গৌরী মানে ফর্সা।দেবী মহাগৌরীকে দেবী পার্বতীর ১৬ বছর বয়সি অবিবাহিত রূপ বলে মনে করা হয়। তাঁকে গিরিরাজের কন্যা হিসেবেও মনে করা হয়। কথিত আছে, দেবী মহাগৌরীর কেবল দৃষ্টিশক্তি দিয়েই অশুভ শক্তিকে পরাস্ত করার ক্ষমতা আছে।

পূর্ণিমার পূর্ণচন্দ্রের মতো অতিশুভ্র এবং সদ্য প্রস্ফুটিত পদ্মের মতো অতীব সৌন্দর্যের অধিকারিণী দেবী মহাগৌরী চতুর্ভুজা। তাঁর এক হাতে থাকে ত্রিশূল। অন্য হাতে থাকে ডমরু। এক হাতে বর মুদ্রা। আর চতুর্থ হাতে থাকে অভয়মুদ্রা। দেবী বাহন বৃষ। তিনি সেই বৃষের ওপরে অবস্থান করেন। দেবীর এই লীলামূর্তিকে ভক্তরা শিবা বলেন। কারণ, এই স্বরূপে দেবী সাক্ষাৎ শিবপত্নী।তাঁর এই রূপের আরাধনা করলে দেবী সাধককে সাত্ত্বিকতা, শান্তি, পবিত্রতা, আনন্দ, বিদ্যা, করুণা ও অভয় দান করে থাকেন। নবরাত্রির অষ্টমী তিথিতে তথা অষ্টম দিনে দেবী পার্বতীর এই মহাগৌরী স্বরূপের আরাধনা করলে সমস্ত পাপ থেকে সাধক মুক্তি লাভ করে।

সাধকরা মনে করেন দেবী পার্বতীর এই স্বরূপ পরমসাত্ত্বিকের আধার। তিনি পরম পবিত্রতার প্রতীক ও করুণাময়ী দেবী লীলামূর্তি ধারণ করেন। দেবী কালরাত্রির ক্রোধ যখন শান্ত হয়, তখন তিনি নিজের উগ্ররূপ ত্যাগ করে মহাগৌরী রূপে আবির্ভূত হন।কথিত আছে যে এই দেবীর আরাধনা করে, দেবী তাঁদের জীবন থেকে সব ধরনের ভয় ও দুঃখ দূর করেন। এছাড়াও তিনি ভক্তদের জ্ঞান দেন। তাঁদের ব্যক্তি জীবনে ক্রমোন্নতির ব্যবস্থা করে দেন। ভক্তদের সাফল্য অর্জনের ব্যবস্থা করেন তিনি। পাশাপাশি, শত্রুদের ওপর জয়লাভেরও ব্যবস্থা করেন দেবী।

বারাণসীর কাশী বিশ্বনাথ মন্দিরের কাছে দেবী অন্নপূর্ণার মন্দির আছে। সেটি মহাগৌরী মন্দির হিসেবে ভক্তদের কাছে পরিচিত। আশ্বিন ও চৈত্র নবরাত্রির অষ্টম দিনে এই মন্দিরে ব্যাপক ভক্তসমাগম হয়।