বিজ্ঞান মানুষের জীবনকে অকল্পনীয় উপায়ের মাধ্যমে সহজ করে দিয়েছে। আইফোন, বিমান, কম্পিউটার, রোবট, বর্তমান যুগে বিজ্ঞানের সাহায্যে সবকিছু অর্জন করা সক্ষম। বৈজ্ঞানিক সাফল্য শুধু যে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সীমাবদ্ধ তা নয়, কোনও দিক দিয়ে পিছিয়ে নেই ভারতীয় বিজ্ঞানীরাও। ভারতও জন্ম দিয়েছে অনেক পদার্থবিদ ও বিজ্ঞানী। এমনই এক মহান বিজ্ঞানী হলেন চন্দ্রশেখর ভেঙ্কটরামন (Chandrashekhar Venkat Ramen)। তিনি বর্ণালীবিদ্যায় অত্যন্ত বিরল আবিষ্কার করেছিলেন। যা তাঁর নামে নামকরণ করা হয়েছিল ‘রমন এফেক্ট’ (Raman effect)বা 'রমন স্ক্যাটারিং’ (Raman scattering)। এই আবিষ্কারকে উৎসাহিত করার জন্য প্রতিবছর ২৮ ফেব্রুয়ারি জাতীয় বিজ্ঞান দিবস (National Science Day) পালন করে ভারত।

তামিলভাষী ড. সিভি.রমন ১৯০৭-১৯৩৩ সাল পর্যন্ত কাজ করেছিলেন কলকাতা ভিত্তিক ইন্ডিয়ান অ্যাসোসিয়েশন ফর দ্য কাল্টিভেশন অফ সায়েন্সে (Indian Association for the Cultivation of Science / IACS)। ১৯২৮ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি, তিনি 'রমন এফেক্ট' আবিষ্কার করে বর্ণালীবিদ্যার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ গবেষণা সম্পন্ন করেন। এই মহান কৃতিত্বের জন্য তাঁকে নোবেল পুরস্কারে ভূষিত করা হয়। ড. সিভি রমন প্রথম ভারতীয় যিনি নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন, যা ভারতকে গর্বিত করেছিল। ১৯৮৬ সালে ন্যাশনাল কাউন্সিল ফর সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি কমিউনিকেশন (National Council for Science and Technology Communication) ভারত সরকারকে সুপারিশ করেছিল ২৮ ফেব্রুয়ারিকে জাতীয় বিজ্ঞান দিবস হিসেবে ঘোষণা করার জন্য। ভারত সরকারের সম্মতিতে ১৯৮৭ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি প্রথমবার পালিত হয় জাতীয় বিজ্ঞান দিবস।

জাতীয় বিজ্ঞান দিবস পালনের মূল উদ্দেশ্য হল ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে বিজ্ঞানে অনুপ্রাণিত করার পাশাপাশি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে ক্যারিয়ার গড়ার জন্য যুবকদের উৎসাহিত করা। রমন এফেক্ট আবিষ্কার উদযাপন এবং বিশ্বের কাছে ভারতীয় বিজ্ঞানীদের কৃতিত্ব প্রচার করা হয় এদিন। এছাড়া এদিন জনসাধারণের মধ্যে বৈজ্ঞানিক সচেতনতা বৃদ্ধি করার চেষ্টা করা হয়। মানবজাতির অগ্রগতির জন্য বৈজ্ঞানিক বিশ্লেষণ এবং আবিষ্কারের গুরুত্ব তুলে ধরাও হল এই দিনটি পালনের মূল উদ্দেশ্যগুলির মধ্যে একটি।