১৮৫৭ সালের ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের প্রথম নায়ক ছিলেন মঙ্গল পাণ্ডে। তিনি ভারতকে স্বাধীন করার যে আগুন মানুষের মধ্যে জ্বালিয়ে ছিলেন তার জেরে ১৯৪৭ সালে ব্রিটিশরা ভারত ত্যাগ করতে বাধ্য হয়। ১৮২৭ সালের ১৯ জুলাই উত্তর প্রদেশের বালিয়া জেলায় জন্মগ্রহণ করেন মঙ্গল পাণ্ডে। জীবিকা অর্জনের জেরে ব্রিটিশ সেনাবাহিনীতে চাকরি করতে বাধ্য হন তিনি। ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির নিষ্ঠুরতার কারণে ইতিমধ্যেই ব্রিটিশ শাসনের প্রতি জনগণের মধ্যে ঘৃণা ক্রোধের জন্ম নিতে শুরু হয়ে গিয়েছিল।

ভারতীয় সৈন্যদের নতুন বন্দুক গুলি দেওয়া হলে সেই ঘৃণা ক্রোধের সীমা পৌঁছে যায় চরম পর্যায়ে। কারণ নতুন বন্দুকগুলিতে আধুনিক ফায়ারিং সিস্টেম ব্যবহার করা হয়েছিল। কার্তুজ ভরতে হলে কার্তুজের উপরের অংশ দাঁত দিয়ে কামড়ে খুলতে হত। ঐতিহাসিক তথ্য অনুযায়ী, কার্তুজের উপরের অংশ তৈরি করা হত শূকর এবং গরুর মাংস থেকে। ইংরেজরা হিন্দুদের পাশাপাশি মুসলমানদের ধর্মীয় অনুভূতি নিয়েও খেলা করা শুরু করেছিল। মঙ্গল পাণ্ডে এই কার্তুজে দাঁত লাগাতে অস্বীকার করে সহকর্মীদের এর বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করার জন্য উৎসাহ দেন, যার ফলে ব্রিটিশ অফিসাররা তাঁর উপর ক্ষুব্ধ হয়ে যায়।

এমন সময়ে এক ব্রিটিশ অফিসারকে হত্যা করার অপরাধে ব্রিটিশ সৈন্যরা মঙ্গল পাণ্ডেকে আটক করে। ১৮৫৭ সালের ১৮ এপ্রিল মঙ্গল পাণ্ডেকে ফাঁসির আদেশ দেওয়া হলেও তার ১০ দিন আগে তথা ৮ এপ্রিল পশ্চিমবঙ্গের ব্যারাকপুরে গোপনে ফাঁসি দেওয়া হয় মঙ্গল পাণ্ডেকে। যার পর দেশের বিভিন্ন জায়গায় শুরু হয় বিদ্রোহ। স্বাধীনতা সংগ্রামে মঙ্গল পাণ্ডের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার জন্য ১৯৮৪ সালে তাঁর সম্মানে ভারত সরকার জারি করে একটি ডাকটিকিট।