মুম্বই, ১৪ জুলাই: করোনা আবহে এবার হচ্ছে হজ (Hajj 2021)৷ তবে সৌদি সরকার চলতি বছরের হজ পালনকারীদের ক্ষেত্রেও বেশকিছু বিধি নিষেধ বলবৎ করেছে৷ একমাত্র প্রতিষেধক নিয়েছেন এমন লোকজনই হজ করতে পারবেন৷ অবশ্যই তাঁদের বয়স ১৮-৬৫ বছরের মধ্যে হতে হবে৷ অতিমারীর কারণে এবারেও বিদেশি কোনও মুসলিমকে হজ পালনের অনুমতি দেওয়া হচ্ছে না৷ সবমিলিয়ে টিকাকরণের আওতায় আসা ৬০ হাজার পুণ্যার্থী এবার হজ পালনে অংশ নিতে পারেবন৷ আর্থিকভাবে সচ্ছল ও শারীরিকভাবে সক্ষম এমন কোনও মুসলিমকে জীবনে একবার হজ পালন করতেই হবে৷ ইসলামের পাঁচ স্তম্ভের এক স্তম্ভ হল এই হজ৷
২০২১-এর হজ কবে?
জিল হজ মাসের ৮ তারিখ থেকে হজ শুরু হয় মক্কায়৷ ইসলামক ক্যানলেন্ডারের শেষ মাস হল জিল হজ মাস৷ ইংরেজি ১১ জুলাই থেকে এই মাস শুরু হয়৷ ১৮ জুলাই অর্থাৎ জিল হজ মাসের ৮ তারিখ থেকে শুরু হয় হজ৷ ১৭ জুলাই সূর্য ডোবার পর থেকে হজের কাজকর্ম শুরু করে দেন ধর্মপ্রাণ মুসলিমরা৷ আরও পড়ুন-WB Congress General Sectary Rohan Mitra Resigns: অধীরকে বিঁধে প্রদেশ কংগ্রেসের সম্পাদকের পদ ছাড়লেন সোমেন পুত্র রোহন
হজের ক্রিয়াকর্ম ও তাৎপর্য:
একদম শুরুতেই হজ পালন করতে আসা পুরুষরা এহরাম পরেন৷ এটি হল দুটি সেলাই বিহীন সাদা কাপড়৷ মহিলাদের সাধারণ পোশাকই পরতে হয়৷ মূলত ধনী গরিব হিসেবে নয়, সমস্ত হজ পালনকারীকে একই পরিচয়ে পরিচিত করাতেই এই এহরাম পরিধান৷ মহান আল্লাহের সামনে সব বান্দাই সমান, যা এহরাম পরিধানেই স্পষ্ট হয়ে ওঠে৷ বিশ্বাস করা হয় যে একবার এহরাম পরে নেওয়া মানে এক পবিত্রতার মধ্যে চলে যাওয়া৷ এহরাম পরিধানের পর হাজি পুণ্যার্থীরা আর সুগন্ধী ব্যবহার করতে পারবেন না৷ নখ, চুল, দাড়ি কোনও টাই কাটা যাবে না৷ এমনকী যৌন সংসর্গও কঠোরভাবে নিষিদ্ধ৷ প্রথম দিন পুণ্যার্থীদের সাতবার কাবা শরীফে তাওয়াফ (পরিক্রমা) করার পর সাফা ও মারওয়া পাহাড়ের মধ্যে সাতবার পরিক্রমা করতে হবে৷
দ্বিতীয় দিনে সকালে নামাজ পড়ার পরে মিনা থেকে মাউন্ট আরাফতের উদ্দেশে রওনা দিতে হয় পুণ্যার্থীদের৷ সেখানে আল্লাহর দরবারে ক্ষমাপ্রার্থী হয়ে দোয়া চাওয়াই হল মূল কাজ৷ অতীতের সমস্ত অপরাধ যাতে আল্লাহর দরবারে মাপ হয়ে যায়৷ আরাফতের ময়দানে দুপুরে যে প্রার্থনা ও ক্রিয়াকর্ম পালন করতে হয়, তার অর্থ হল আল্লাহর সামনে দাঁড়ানো৷
সূর্যাস্ত পর্যন্ত হজ পালনকারীদের মাথা মুজদালিফার (আরাফত ও মিনার মধ্যবর্তী স্থান) দিকেই থাকবে৷ সেখানে পৌঁছে মগরিব ও এশার নামাজ একসঙ্গে পড়া হয়৷ গোটা রাত কেটে যায় দোয়া প্রার্থনায়৷ সেই রাতে খোলা আকাশের নিচেই ঘুমানো নিয়ম৷ পরের দিন শয়তানকে উদ্দেশ্য করে পাথর ছুঁড়তে হবে তাই এদিনই হজ পালনকারীদের পাথর সংগ্রহ করতে হয়৷ হজের তৃতীয় দিনে পুণ্যার্থীরা রামি-আর জামরাট-এ গিয়ে শয়তানকে লক্ষ্য করে সাতটি পাথর ছোঁড়েন৷ সূর্যোদয় থেক সূর্যাস্ত পর্যন্ত পাথর ছোঁড়ার সময়সীমা৷ সেখানে যে তিনটি সর্বোচ্চ স্তম্ভ রয়েছে যাদের বলা হয় জামরাট আর আকবাহ, সেই স্তম্ভ তিনটি লক্ষ্য করেই ছুঁড়তে হবে পাথর৷
তৃতীয় দিনেই ইদুজ্জোহা পালন করতে হবে৷ কুরবানির মাধ্যমে ঈদ পালন করবেন হজ পালনকারীরা৷ সেদিন পুরুষদের মাথা ন্যাড়া করতে হবে৷ ওই দিনই কাবায় ফিরে এসে প্রত্যেক পুণ্যার্থীকে তাওয়াফ করতে হবে৷ যাকে বলা হচ্ছে তাওয়াফ-আল-ইফাদাহ৷ এবং ফের সাফা মারওয়ার মাঝে সাতবার প্রদক্ষিণ করতে হবে৷ এই ক্রিয়াকর্ম সম্পন্ন করে ফের ফিরে যেতে হবে মিনায়৷ চতুর্থ দিনেও মিনায় ওই তিনটি স্তম্ভকে লক্ষ্য করে সাতটি পাথর ছুঁড়তে হবে৷ একই কাজ করতে হবে পঞ্চম দিনেও৷ ষষ্ঠ অর্থাৎ হজের শেষ দিনে মক্কা ছাড়ার আগে কাবা শরীফকে ঘিরে পুণ্যার্থীরা বিদায়ী তাওয়াফ করবেন৷ যাকে বলা হচ্ছে তাওয়াফ-আল-ওয়াদা৷