Bhai Phonta 2019: ভাইবোনের এই মধুর মেলবন্ধন ভাইফোঁটা, শুরু হল কীভাবে?
প্রতীকী ছবি (Photo Credit: Latestly.com)

Bhai Phonta: যমের দুয়ারে কাঁটা দিয়ে বাঙলার ঘরে ঘরে দিদি বোনেরা দাদা ভাইদের কপালে মঙ্গল ফোঁটা দেয়। ভাইফোঁটা যতটা না মন্ত্রশোভিত তার থেকে অনেক বেশি ভাইবোনের ভালবাসার চিরবন্ধন। দেবীপক্ষ শুরু হতে না হতেই কখন যে দুর্গাদশমী কাটল টেরই পাওয়া গেল না। দেখতে দেখতে কোজাগরী লক্ষ্মীপুজো কালীপুজো দীপাবলি শেষে ভাইফোঁটা দরজায় কড়া নাড়ছে। আজই তো সেই দিন, যেদিন ভাইবোনের মধুর সম্পর্ক সূতোকে আরও একবার দৃঢ় হতে দেখা যায়। ভাইফোঁটাই সেই উৎসব যেখানে কোনও ব্রাহ্মণ বা পুরোহিতের প্রয়োজন নেই। শুধু ভাইবোনকে সকাল সকাল স্নান সেরে ফোঁটা নেওয়া ও দেওয়ার জন্য তৈরি হয়ে নিতে হবে। শুদ্ধ বস্ত্রে নিতে হবে ফোঁটা। দুই তরফই ফোঁটার আগে পর্যন্ত উপবাস থাকে। ফোঁটা নেওয়া হলে শুরু খাওয়াদাওয়া।

মজার বিষয় হল উপবাসের পরে একেবারে এলাহি খাওয়াদাওয়ার আয়োজন থাকে। সঙ্গে উপহারের আদানপ্রদান তো রয়েইছে। তবে রীতি রেওয়াজও কিছু রয়েছে। ঘাসের ডগায় যে ভোরের শিশির থাকে তা দিয়েই বাটতে হয় চন্দন। মূলত এটাই ফোঁটার প্রধান উপকরণ। এছাড়া প্রদীপের কাজল, ঘি ইত্যাদি দিয়েও ভাইফোঁটা দেওয়া হয়। ফোঁটা দিতে বোন কড়ে আঙুল ব্যবহার করে থাকে। বরণডালা সাজিয়ে ভাই বা দাদাকে আরতি করা হয়। এক্ষেত্রে বাড়ি ভেদে নিয়মের কিছু অদলবদলও হয়। এক তবে পান-সুপুরি, প্রদীপ, ধূপকাঠি প্রতিটি বরণডালায় থাকলে বাকি দ্রবসামগ্রী সেই বাড়ির নিজস্ব রীতিতে রাখা হয়। তারপর সেই চিরাচরিত মন্ত্র, “ভাইয়ের কপালে দিলাম ফোঁটা/ যমদুয়ারে পড়ল কাঁটা/যমুনা দেন যমকে ফোঁটা/আমি দিই আমার ভাইকে ফোঁটা/যম যেমন হন চিরজীবী/আমার ভাই যেন হয় তেমন চিরজীবী।” পড়ে চলে ফোঁটা পর্ব। সেসব মিটলে উপহার দেওয়া নেওয়ার পালা ও জমিয়ে ভূরিভোজ।

এই ভাইফোঁটার নেপথ্যেও রয়েছে দুটি ভিন্নধর্মী পৌরাণিক কাহিনী। নরকাসুরকে বধ করার পর এদিনই বোন সুভদ্রার সঙ্গে দেখা করতে যান কৃষ্ণ। সুভদ্রা দাদার মঙ্গল বরণডালা নিয়ে কামনায় আরতি করার পাশাপাশি ফুল মিষ্টান্ন ও ফোঁটাও আয়োজন করেন। অন্যটি হল, যমরাজ গিয়েছেন বোন যমুনার বাড়িতে। দাদার আগমনে তাঁর মঙ্গলকামনায় ফোঁটার বন্দোবস্ত করে যমুনা। সম্ভবত এটিই প্রচলিত কাহিনী। এরপর থেকেই সহোদরের মঙ্গল কামনায় ভাতৃদ্বিতীয়ার উদযাপন চলে আসছে।