Durga Puja (Photo Credit: Twitter)

দুর্গাপুজোর (Durga Puja 2022) আসল সময় হল বসন্তকাল। সেই পুজোকে বলা হয় বাসন্তী পুজো (Basanti Puja)। ত্রেতা যুগে ভগবান রামচন্দ্র (Ramchandra) তাঁর স্ত্রী সীতাকে (sita) উদ্ধারের জন্য অকালে দেবীকে (Devi) আরাধনা করেছিলেন। অসময়ে দেবীকে পুজো করেছিলেন বলে শরতের এই পুজোকে বলা হয় অকালবোধন।এই অকাল বোধনের পরিসরটাই বাঙালির ক্যালেন্ডারে (Bengali Calendar) হয়ে উঠেছে বছরের সেরা উৎসব দুর্গাপুজো। হিন্দু ক্যালেন্ডার অনুযায়ী আশ্বিন মাসের শুক্লপক্ষের সপ্তমী তিথিতে পালিত হয় মহা সপ্তমী, যা এই বছরের ২ অক্টোবর পড়েছে। ষষ্ঠীতে বোধনের পরে মহাসপ্তমী থেকে শুরু হয় মহা দুর্গাপূজা।

২০২২ সালের মহাসপ্তমীর নির্ঘণ্ট-

মহাসপ্তমী : ১৫ আশ্বিন/২ অক্টোবর, রবিবার।

 শ্রী শ্রী দেবীর মহাসপ্তমীবিহিত পুজো শুরু - ভোর ৫ টা ৩০ মিনিট। সেদিন সূর্যোদয় ৫ টা ৩২ মিনিটে, সপ্তমীর সময়সীমা রাত ৬ টা ২৩ মিনিটে। শ্রীশ্রী শারদীয়া দুর্গা পুজো। পূর্বাহ্ণ মধ্যে  দ্ব্যাত্মক-চরলগ্নে ও চরণবাংশে।

দেবীর নবপত্রিকা প্রবেশ, স্থাপন ও সপ্তম্যাদিকল্পারম্ভ ও সপ্তমীবিহিতপূজা প্রশস্তা।

দেবীর গজে আগমন। শস্যপূর্ণা বসুন্ধরা। রাত্রি ১১। ৩ গতে ১১। ৫১ মধ্যে দেবীর অর্ধরাত্রবিহিত পূজা।

 

জানুন মহাসপ্তমীর তাৎপর্য (Significance)-

শরতকালে (Autumn) স্বর্গের দেবতাগণ ঘুমিয়ে থাকেন। তাই দেবীকে ঘুম থেকে তোলার জন্য আহ্বান করতে হয়। দেবী এই সময় কুমারী (Kumari) রূপে বেল গাছের পাতায় অবস্থান করেন। তাই ষষ্ঠীর দিন বেল গাছের তলায় দেবীর বোধন (Bodhan) ও অধিবাস (Adhibas) সম্পন্ন হয়।বেল গাছের একটি ডালকে (Brunch) চিহ্নিত করে রাখা হয় এদিন। তারপর সপ্তমীর দিন ওই চিহ্নিত ডাল কেটে মণ্ডপে পুজোর স্থানে নিয়ে আসতে হয়।

মহাসপ্তমীর সকালে সর্বপ্রথম কলাবউ স্নান করানো হয়। কলাবউ বাংলার দুর্গাপূজার একটি বিশিষ্ট অঙ্গ। সপ্তমীর সকালে নদী বা জলাশয়ে নিয়ে যাওয়া হয় নবপত্রিকাকে মহাস্নান করাতে৷ তখনই শাস্ত্রবিধি মেনে স্নান করিয়ে নতুন শাড়ি পরানো হয় নবপত্রিকাকে ৷নয়টি উদ্ভিদ দিয়ে নবপত্রিকা গঠন করা হয়। এই নয়টি উদ্ভিদ মা দুর্গার নয়টি শক্তির প্রতীক। এই নয়টি উদ্ভিদ হল কদলী বা রম্ভা (কলাগাছ), কচু, হরিদ্রা (হলুদ), জয়ন্তী, বিল্ব(বেল), দাড়িম্ব(ডালিম), অশোক, মান ও ধান। নবপত্রিকাকে স্নান করিয়ে ফিরিয়ে আনা হয় বাড়ির পুজোর দালান অথবা বারোয়ারি পুজোমণ্ডপে ৷ সেখানে প্রবেশের পরই দুর্গাপূজার মূল প্রথাগত অনুষ্ঠানের সূচনা হয়। নবপত্রিকা প্রবেশের পরই দর্পণে দেবীকে মহাস্নান করানো হয়। তারপর মন্ত্রোচ্চারণের মাধ্যমে চক্ষুদানের মধ্য দিয়ে ত্রিনয়নী দেবী দুর্গার প্রাণ প্রতিষ্ঠা করা হয়। ধূপ-ধুনো, বেল-তুলসী, আসন, বস্ত্র, নৈবেদ্য, পুষ্পমাল্য, চন্দনসহ ১৬টি উপাচার দিয়ে দেবী দুর্গাকে পূজা করা হয়।