ভারতীয় স্বাধীনতা সংগ্রামের অন্যতম সাহসী বিপ্লবী ছিলেন চন্দ্রশেখর আজাদ। তাঁর আসল নাম হল চন্দ্রশেখর তিওয়ারি, কিন্তু নিজেকে "আজাদ" ঘোষণা করেছিলেন এবং ব্রিটিশদের হাতে কখনও জীবিত বন্দী না হওয়ার শপথ করেছিলেন তিনি। ২৭ ফেব্রুয়ারি চন্দ্রশেখর আজাদের মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে জেনে নেওয়া যাক তাঁর জীবনের সঙ্গে সম্পর্কিত কিছু জানা অজানা গল্প। ১৯২১ সালে মহাত্মা গান্ধীর অসহযোগ আন্দোলনের সময় মাত্র ১৫ বছর বয়সে ব্রিটিশ পুলিশ দ্বারা গ্রেফতার হন চন্দ্রশেখর আজাদ। এরপর বিচারকের সামনে হাজির করা হয় তাঁকে।

আদালতে বিচারক যখন চন্দ্রশেখরের নাম জিজ্ঞাসা করেন, তখন তিনি উত্তর দিয়েছিলেন, নাম "আজাদ", বাবার নাম "স্বতন্ত্র", ঠিকানা "জেল"। এই কথা শুনে বিচারক রাগে লাল হয়ে চন্দ্রশেখরকে ১৫টি বেত্রাঘাতের শাস্তি দিয়েছিলেন। এরপর শাস্তি দেওয়ার জন্য চন্দ্রশেখরকে মাঠে ডাকা হয় এবং প্রথম লাঠিটি পড়ার সঙ্গেই তিনি জোরে চিৎকার করে বলেন "বন্দে মাতরম!" তারপর দ্বিতীয়, তৃতীয়, চতুর্থ... প্রতিটি লাঠিতে তিনি বলতে থাকেন "বন্দে মাতরম!" কিন্তু ১১তম লাঠিটি পড়ার সঙ্গেই তিনি তাঁর সমস্ত শক্তি দিয়ে চিৎকার করে বলতে থাকেন "ভারত মাতা কি জয়"।

১১তম লাঠির পর থেকে প্রতিটি লাঠির আঘাতে "ভারত মাতা কি জয়" এই একই স্লোগান বারবার বলতে থাকেন। ব্রিটিশ অফিসাররা আশা করেছিল যে এত মারের পর তিনি কাঁদবেন অথবা করুণা ভিক্ষা করবেন, কিন্তু তাঁর সাহস দেখে সবাই হতবাক হয়ে যায়। এই ঘটনার পর, চন্দ্রশেখর দেশজুড়ে খ্যাতি অর্জন করেন এবং তিনি আজাদ নামে পরিচিত হন। তিনি প্রতিজ্ঞা করেছিলেন যে তিনি কখনও ব্রিটিশদের হাতে জীবিত ধরা পড়বেন না এবং অবশেষে ১৯৩১ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি এলাহাবাদের আলফ্রেড পার্কে নিজেকে গুলি করে প্রতিজ্ঞা পূরণ করেন চন্দ্রশেখর আজাদ।