হিন্দু ধর্মে পূর্ণিমা তিথির রয়েছে বিশেষ গুরুত্ব। প্রতি মাসের শুক্লপক্ষের চতুর্দশীর পরের দিন পালন করা হয় পূর্ণিমা। বৈশাখ মাসের পূর্ণিমা তিথিকে বলা হয় বুদ্ধ পূর্ণিমা। হিন্দু শাস্ত্র অনুসারে, বৈশাখ পূর্ণিমায় জন্মগ্রহণ করেছিলেন ভগবান বুদ্ধ। প্রতি বছর বৈশাখ মাসের পূর্ণিমা তিথিতে পালন করা হয় বুদ্ধ জয়ন্তী। এই দিনে পুজো করা হয় ভগবান বুদ্ধের। ২০২৪ সালে বুদ্ধ পূর্ণিমা পালন করা হবে ২৩ মে। বুদ্ধ পূর্ণিমা শুরু হবে ২২ মে, বুধবার সন্ধ্যা ০৬:৪৭ মিনিটে এবং শেষ হবে ২৩ মে, বৃহস্পতিবার, সন্ধ্যা ০৭:২২ মিনিটে। উদয় তিথির অনুযায়ী বুদ্ধ পূর্ণিমা পালন করা হবে ২৩ মে‌।

গৌতম বুদ্ধের আসল নাম হল সিদ্ধার্থ গৌতম। মান্যতা অনুসারে, প্রায় ২৫০০ বছর আগে লুম্বিনীতে জন্মগ্রহণ করেছিলেন গৌতম বুদ্ধ। ইতিহাসবিদদের মতে, বুদ্ধদেবের জন্ম, গয়াতে বোধিবৃক্ষের নীচে বুদ্ধদেবের জ্ঞানলাভ এবং বুদ্ধদেবের মুক্তি অর্থাৎ মৃত্যু, গৌতম বুদ্ধের জীবনের এই তিনটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা একই দিনে ঘটার কারণে বৈশাখী পূর্ণিমার গুরুত্ব বহুগুণ বেড়ে গিয়েছে। তাই বৌদ্ধ ধর্মের অনুসারীরা অত্যন্ত আড়ম্বরের সঙ্গে পালন করে এই দিনটি। হিন্দু বিশ্বাস অনুসারে, বৈশাখী পূর্ণিমার দিনে ভগবান বিষ্ণু তার নবম অবতার ভগবান বুদ্ধরূপে পৃথিবীতে জন্ম নিয়েছিলেন।

ভগবান বুদ্ধ রাজকুমার সিদ্ধার্থ রূপে জন্মগ্রহণ করেন নেপালের লুম্বিনীতে। রাজকুমার সিদ্ধার্থ তার জীবনের প্রথম ২০ বছর অত্যন্ত বিলাসবহুল জীবনযাপন করেছিলেন। একদিন বার্ধক্য ও মৃত্যু দেখে তিনি এতটাই অনুপ্রাণিত হয়েছিলেন যে, মানবজীবনের সত্যের খোঁজে বাড়ি ত্যাগ করেছিলেন তিনি। বনে বনে ঘুরে বেড়ানোর পর একদিন বুদ্ধগয়ার একটি বোধিবৃক্ষের নীচে বসে ধ্যান শুরু করেন তিনি। ধ্যান শুরু করার আগে তিনি দৃঢ়সংকল্প নিয়েছিলেন যে জ্ঞান অর্জন না করা পর্যন্ত সেই স্থান থেকে উঠবেন না তিনি। অনেক কষ্ট সহ্য করার পরও নিজের সংকল্পে অটল ছিলেন‌ গৌতম বুদ্ধ। এই ভাবে সিদ্ধার্থ রাজ্য ত্যাগ করে এবং অহমের মায়াকে অতিক্রম করে অসীম জ্ঞান লাভ করেন এবং যুবরাজ সিদ্ধার্থ হয়ে ওঠেন গৌতম বুদ্ধ। ৮০ বছর বয়সে উত্তরপ্রদেশের কুশিনগরে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন গৌতম বুদ্ধ।