পঞ্চাঙ্গ অনুসারে, ভূত চতুর্দশী কার্তিক মাসের কৃষ্ণপক্ষের চতুর্দশী তিথিতে পালিত হয়। ভূত চতুর্দশী দীপাবলির এক দিন আগে এবং ধনতেরাসের একদিন পরে উদযাপিত হয়। এটি ছোট দিওয়ালি, রূপ চৌদাস, ভূত চৌদাস, রূপ চতুর্দশী বা ভূত পুজো নামেও পরিচিত। এই দিনে মৃত্যুর দেবতা যমরাজ ও শ্রীকৃষ্ণের পুজো করার বিধান রয়েছে। রূপ চৌদ্দের দিন সন্ধ্যায় প্রদীপ জ্বালিয়ে চারপাশ আলোকিত করা হয়।
ভূত চতুর্দশীর তিথি
দীপাবলির এক দিন আগে নরক চতুর্দশী পালিত হয়। কার্তিক মাসের কৃষ্ণ পক্ষের চতুর্দশী তিথির সূচনা হবে ১১ নভেম্বর দুপুর ১টা ৫৭ মিনিট থেকে। এই তিথি সমাপ্ত হবে ১২ নভেম্বর দুপুর ২টো ৪৪ মিনিটে। উদয়া তিথি অনুযায়ী ১২ নভেম্বরই নরক চতুর্দশী পালিত হওয়ার কথা কিন্তু সেদিনই দীপাবলি থাকায় ১১ নভেম্বর করা হবে নরক চতুর্দশীর পুজো।
নরক চতুর্দশীর পৌরানিক কাহিনিঃ-
কথিত রয়েছে, নরকাসুর নামে এক অসুর নিজ শক্তি বলে দেবী দেবতাদের উত্যক্ত করছিল। তখন ঋষি মুনি দেবতার সকলেই দ্বারস্থ হন শ্রীকৃষ্ণের। তখন শ্রীকৃষ্ণ তাঁদের নরকাসুর থেকে মুক্ত করার আশ্বাস দেন। দেববাণী ছিল যে, নরকাসুর কোনও স্ত্রীর হাতে মৃত হবে। ফলে নিজের স্ত্রী সত্যভামাকে সঙ্গে নিয়ে শ্রীকৃষ্ণ নরকাসুরকে হত্যা করতে উদ্যত হন , আর তাতে সফল হন। যে দিনে নরকাসুর বধ হয় তা কার্তিকের কৃষ্ণপক্ষের চতুর্দশী।
কেন পালিত হয় চোদ্দ প্রদীপের রীতি?
উল্লেখ্য, চোদ্দ প্রদীপ দিয়ে ভূত চতুর্দশীর রাতে ১৪ পূর্ব পুরুষকে শ্রদ্ধা জানানো হয়। এছাড়াও মনে করা হয়, এই দিনে অশুভ প্রেতাত্মারা চারিদিকে ঘোরাফেরা করে। ফলে সেই অশুভ শক্তিকে মেটাতেই এমন উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়।
ভূত চতুর্দশীর পুজো পদ্ধতি
ভূত চতুর্দশীতে, সূর্যোদয়ের আগে স্নান করুন এবং পরিষ্কার কাপড় পরিধান করুন। নরক চতুর্দশীর দিন যমরাজ, শ্রী কৃষ্ণ, কালী মাতা, ভগবান শিব, হনুমান জি ও শ্রী হরি বিষ্ণুর বামন রূপের বিশেষ পুজো করা হয়। বাড়ির উত্তর-পূর্ব কোণে এই সমস্ত দেব-দেবীর মূর্তি স্থাপন করুন এবং তাদের পুজো করুন।দেবতাদের সামনে একটি ধূপ প্রদীপ জ্বালান, সিঁদুরের তিলক লাগান এবং মন্ত্র জপ করুন।
এমনটা বিশ্বাস করা হয় যে নরক চতুর্দশীর দিন যমদেবের পুজো করলে অকালমৃত্যুর ভয় দূর হয়। এছাড়াও, সমস্ত পাপ নাশ হয়, তাই সন্ধ্যায় যমদেবের পুজো করুন এবং অবশ্যই বাড়ির দরজার উভয় পাশে প্রদীপ জ্বালান।