হিন্দু পঞ্জিকা অনুযায়ী গণেশ চতুর্থীর ১০ দিন পর অনন্ত চতুর্দশীর দিন গণেশ মূর্তির বিসর্জন করা হয়। এমনকি ৩, ৫, ৭ ও ১০ দিনে গণেশ বিসর্জন করা হয়ে থাকে। তবে অনন্ত চতুর্দশীর অদিন গণেশ বিসর্জনের কারণ রয়েছে।
অনন্ত চতুর্দশীর কাহিনীঃ-
প্রতি বছর অনন্ত চতুর্দশী তিথিতে ১০ দিনব্যাপী গণেশ উৎসবের পর গণেশ প্রতিমার বিসর্জন করা হয়। পুরাণ মতে মহর্ষি বেদব্যাস গণেশ চতুর্থীর দিন থেকে গণেশকে মহাভারতের কাহিনি শোনানো শুরু করেন। লাগাতার ১০ দিন পর্যন্ত বেদব্যাস চোখ বন্ধ করে গণেশকে কাহিনি শোনান। বিশ্রাম না-করেই গণেশ মহাভারত লিখতে থাকেন। ১০ দিন পর কাহিনি শেষ হওয়ায় বেদব্যাস চোখ খুললে, দেখেন একটানা লিখে যাওয়ার কারণে গণেশের শরীরের তাপমাত্রা অত্যধিক বৃদ্ধি পেয়েছে। সে সময় গণেশের শরীরের তাপমাত্রা স্বাভাবিক করার জন্য বেদব্যাস তাঁকে পুকুরের জলে স্নান করান। এর পরই গজানন স্বাভাবিক তাপমাত্রা ফিরে পান। যে দিন গণেশকে স্নান করানো হয়, সেটি ছিল অনন্ত চতুর্দশী। সেই কারণে এই তিথিতে গণেশ মূর্তি বিসর্জন করা হয়।
অনন্ত চতুর্দশী কখন?
হিন্দু ক্যালেন্ডার অনুসারে, ভাদ্রপদ মাসের শুক্লপক্ষের ১৪ তম দিনটিকে বলা হয় চতুর্দশী অর্থাৎ অনন্ত চতুর্দশী। গণেশ বিসর্জনও এই দিনে হয়। এই বছর চতুর্দশী তিথি ৮ ই সেপ্টেম্বর বিকাল সাড়ে চারটে থেকে শুরু হবে এবং ৯ সেপ্টেম্বর দুপুর ১.৩০ মিনিট পর্যন্ত থাকবে। উদয়তিথি অনুসারে, অনন্ত চতুর্দশীর পুজোর শুভ সময় ৯ সেপ্টেম্বর সকাল সাড়ে ৬টা থেকে বেলা ১.৩০ মিনিট পর্যন্ত থাকবে।
অনন্ত চতুর্দশীর তাৎপর্য
হিন্দু ধর্মে অনন্ত চতুর্দশীর বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে এবং এটি অনন্ত চৌদাস নামেও পরিচিত। গণেশের বিসর্জনের পাশাপাশি এই দিনে ভগবান বিষ্ণুরও পূজা করা হয়। তার বাহুতে একটি সিল্ক বা সুতির সুতো বেঁধে তাতে ১৪টি গিঁট দেওয়া হয়। এটি ঐক্য ও ভ্রাতৃত্বের প্রতীকও বটে।
গণপতি বিসর্জনের নিয়ম
অনন্ত চতুর্দশীর দিনে গণেশ বিসর্জন করা হয় এবং এটাও বলা হয় যে পরের বছর ভগবান আবার আসবেন এবং তার আশীর্বাদ বর্ষণ করবেন। এরপর জলের মধ্যে প্রতিমাকে ডুবিয়ে দেওয়া হয়ে থাকে। বিসর্জনের আগে রীতিমতো পুজো করা হয় এবং ধূপ-প্রদীপ জ্বালানো হয়। বিসর্জনের আগে, গণেশজীর সামনে সব ভুলের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করুন।