হিন্দু ক্যালেন্ডার অনুসারে, কার্তিক মাসের শুক্লপক্ষের নবমী তিথিতে পালন করা হয় অক্ষয় নবমীর উৎসব। আমলা নবমী নামেও পরিচিত এই উৎসব। এই দিনে ভগবান বিষ্ণু এবং দেবী লক্ষ্মীর সঙ্গে আমলা গাছের পুজো করা হয়। বিশ্বাস করা হয় যে অক্ষয় নবমীর দিন আমলা গাছের পুজো করলে ব্যক্তির সমস্ত দুঃখ দূর হয় এবং ঘরে সুখ, শান্তি ও সমৃদ্ধি আসে। ২০২৪ সালে অক্ষয় নবমীর উপবাস পালন করা হবে ১০ নভেম্বর, রবিবার। কার্তিক শুক্লপক্ষের নবমী তিথি শুরু হবে ০৯ নভেম্বর, শনিবার, রাত ১০:৪৫ মিনিটে এবং শেষ হবে ১০ নভেম্বর, রবিবার, রাত ০৯:০১ মিনিটে। উদয় তিথি অনুসারে, অক্ষয় নবমীর পুজো করা হবে ১০ নভেম্বর।

প্রদোষ কালের সময় অর্থাৎ সূর্যাস্তের পর পুজো করা হয় আমলা গাছের। কার্তিক শুক্লপক্ষের নবমীর দিন সূর্যোদয়ের আগে গঙ্গা বা যেকোনও পবিত্র নদীতে স্নান করে সূর্যদেবকে অর্ঘ্য নিবেদন করা হয়। দিনের নিয়ম অনুসারে ভগবান বিষ্ণু এবং দেবী লক্ষ্মীর পুজো করা হয়। সারাদিন উপবাস করার সময় প্রদোষকালে আমলা গাছের নিচে ভগবান বিষ্ণুর ধ্যান করে মন্ত্র জপ করা হয়। এরপর ফুল, মালা, অক্ষত, রোলি, সিঁদুর অর্পণ করা হয়। এছাড়া ফল এবং মিষ্টি নিবেদন করা হয়। সবশেষে মানুষের মধ্যে প্রসাদ বিতরণ করা হয়। এই দিনে গরম বস্ত্র দান করলে পুণ্য অর্জন হয়।

পৌরাণিক কাহিনী অনুসারে, কাঞ্চী রাজ্যের রাজা রাইসেনের পুত্র মুকুন্দ দেব শিকার করতে বনে গিয়ে ব্যবসায়ী কণকধিপের কন্যা কিশোরীর দ্বারা মন্ত্রমুগ্ধ হন। মুকুন্দ মেয়েটিকে বিয়ের প্রস্তাব দিলে কিশোরী বলেন তার ভাগ্যে স্বামীর সুখ নেই। জ্যোতিষশাস্ত্র মতে, বিয়ের মঞ্চে বজ্রপাতের কারণে তার বর মারা যাবে। একথা শোনার পরও মুকুন্দ বিয়ে করার সিদ্ধান্ত নেন। বিলোপী নামের এক রাক্ষস মেয়েটিকে আক্রমণ করায় রাক্ষসকে ধ্বংস করে কার্তিক শুক্লপক্ষের নবমীতে আমলা গাছের নিচে বিয়ে করার কথা বলেন সূর্য দেব। দুজনে আমলা গাছের নিচে মণ্ডপ তৈরি করে বিয়ে করে এবং আমলা গাছটি বজ্রপাত আটকে দেয়। সেই থেকে এই তিথিতে আমলা-বৃক্ষ পুজোর প্রথা শুরু হয়।