(Photo Credits: Ratan Dalui)

কলকাতা, ২৬ সেপ্তেম্বর: এই বছর সোনাগাছিতেও (Sonagachi) হচ্ছে থিম পুজো ( Puja Theme)। থিম পুজোর হিড়িকে এবছর নাম লেখাল কলকাতার (Kolkata) প্রাচীনতম এই যৌনপল্লী। দুর্বারের কার্যালয়ের ছোট্ট মণ্ডপ থেকেই এ বছর পরিবেশ বাঁচানোর বার্তা দেবেন যৌনকর্মীর সন্তানেরা। তারাই এবার থিম আর্টিস্ট (Theme Artist)। আর এই থিমের প্রধান শিল্পী (Main Theme Maker) হলেন সোনাগাছিরই এক যৌনকর্মীর সন্তান রতন দলুই (Ratan Dalui)। তবে পুজো পরিচালনার দায়িত্বে সেই যৌনকর্মীদের নিয়ে কাজ করা স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা দুর্বার মহিলা সমন্বয় সমিতি (Durbar)। প্রায় ৩ লক্ষের বাজেটে সম্পন্ন হচ্ছে পুজোর যাবতীয় কাজ।

গত ৭ বছর ধরে সোনাগাছিতে উমার আরাধনা হয়ে আসছে। বিগত বছরগুলিতে শুধুমাত্র ১ টি জায়গায় পুজো অনুষ্ঠিত হলেও এবার প্রায় ৭টা যৌনপল্লীতে পুজোর আয়োজন হচ্ছে। প্রায় ৬৫ হাজার যৌনকর্মী অংশ নেবেন পুজোয়। তিন মাস ধরে চলছে কাজ। ১০ জন ক্ষুদে শিল্পীর অক্লান্ত পরিশ্রমে একটু একটু করে রূপ পাচ্ছে ছোট্ট মণ্ডপ। রতনের কথায়, আমাজনের (Amazon) জঙ্গলে আগুন থেকে চেন্নাইয়ের (Chennai) জলসঙ্কট; প্লাস্টিকের বিপদ, বিশ্ব উষ্ণায়ন (Global Warming) থেকে অবাধ বৃক্ষনিধনের পরিণতি এই সব বিষয়গুলোকে তুলে ধরা হয়েছে থিমে। কাগজে-টিভিতে ওই সমস্ত বিপর্যয়ের খবর শুনেছেন যৌনকর্মীরা। বুঝেছেন, পরিবেশ রক্ষায় এখনই কিছু করা না গেলে সামনেই ঘনিয়ে আসছে বিপদ। যা থেকে রক্ষা পাবে না যৌনপল্লীও। তাই পরিবেশ বাঁচানোর বার্তা দেওয়ার চিন্তা-ভাবনা শুরু করে দেওয়া উচিৎ এখন থেকেই। ‘বিশ্ব উষ্ণায়ন কমাও, পৃথিবী বাঁচাও’—এই ভাবনার আঙ্গিকেই তাই এ বছর সেজে উঠবে রতনদের একচিলতে পুজো মণ্ডপ। আরও পড়ুন- বৃষ্টির জলের প্রকোপ থেকে বাঁচতে দুর্গাপুজোর ক্লাব অ্যাসোসিয়েশনগুলির নয়া উদ্যোগ

(Photo Credits: Ratan Dalui)

এক সময়ে আর পাঁচটা পুজো মণ্ডপে উৎসবের দিনে ব্রাত্য থাকতেন সোনাগাছির যৌনকর্মীরা (Sex Workers)। সেই থেকেই এখানকার মানুষদের ইচ্ছে হত যদি নিজেরাও দুর্গাপুজো করতে পারতাম! আর সেই ভাবনা থেকেই ২০১৩ সালে সোনাগাছির একটি ঘুপচি ঘরে শুরু হয় দুর্গাপুজো। কিন্তু তাতে কি আর মন ভরে! ২০১৫ সালে পুজো সরিয়ে আনা হয় এলাকার একটি মন্দির চত্বরে। কিন্তু যৌনকর্মীদের ইচ্ছে ছিল, প্রকাশ্যে রাস্তার উপরেই পুজো করার। ২০১৭ সালে সেই ইচ্ছেকে মান্যতা দেয় হাইকোর্ট (Kolkata High Court)। আদালতের নির্দেশমতো বিগত দু’বছর মসজিদ বাড়ি স্ট্রিটের (Masjid Bari Street) আট বাই কুড়ি ফুটের মণ্ডপেই উমার আবাহন করে আসছেন যৌনকর্মীরা। এ বছরেও ইতিমধ্যেই কুমোরটুলিতে (Kumartuli) শিল্পী প্রশান্ত পালের (Prashanta Pal) কাছে প্রতিমার বায়না দেওয়াও হয়ে গিয়েছে।