চেন্নাই, ২৮ জুলাইঃ তামিলনাড়ুতে খুন হলেন বিজেপি কর্মী। শনিবার রাতে শিবগঙ্গাইতে বিজেপি কর্মীকে কুপিয়ে খুনের অভিযোগে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে গোটা এলাকায়। ঘটনায় তামিলনাড়ুর (Tamil Nadu) আইন শৃঙ্খলা নিয়ে প্রশ্ন তুলে ডিএমকে সরকারকে (DMK) কাঠগড়ায় তুলেছেন রাজ্য বিজেপির প্রধান কে আন্নামালাই (K Annamalai)। পালটা শিবগঙ্গাইয়ের সাংসদ কার্তি পি চিদাম্বরমের দাবি, বিজেপি কর্মী খুনের এই ঘটনার সঙ্গে রাজনীতির কোন যোগ নেই।
জানা যাচ্ছে, মৃত বিজেপি কর্মীর নাম সেলভাকুমার। তিনি বিজেপি জেলা সম্পাদক ছিলেন। শনিবার রাতে নিজের ইটভাটা থেকে বাইকে চেপে বাড়ি ফিরছিলেন। মাঝ রাস্তায় তাঁর পথ আটকায় একদল অজ্ঞাত পরিচয়ের ব্যক্তি। চলে একের পর এক ছুরির কোপ। রক্তাক্ত অবস্থায় সেলভাকুমারকে রাস্তায় ফেলে চম্পট দেয় অভিযুক্তরা। স্থানীয়রা দেখতে পেয়ে তড়িঘড়ি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করেন। হাসপাতালে পৌঁছতেই চিকিৎসকেরা বিজেপি কর্মীকে মৃত বলে জানিয়ে দেন।
সেলভার খুনে চটেছে গ্রামবাসী। অভিযুক্তদের অবিলম্বে গ্রেফতারের দাবিতে বিজেপি কর্মী-সমর্থক সহ গ্রামবাসীরা রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখায়। ক্ষুব্ধ জনতাকে নিয়ন্ত্রণে আনতে এলাকায় বিশাল পুলিশ বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। রাজ্য বিজেপি প্রধান কে আন্নামালাই সেলভাকুমারের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন। দলের তরফে সমস্ত রকমের সাহায্যের আশ্বাস দিয়েছেন তিনি।
তামিলনাড়ুকে 'হত্যার রাজধানী' বলে অভিহিত করে আন্নামালাই বলেন, অসামাজিক কাজের সঙ্গে যারা যুক্ত তারা রাজ্যের সরকার কিংবা পুলিশ কোন কিছুকেই ভয় পাচ্ছে না। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর ছত্র-ছায়ায় এইসব অপরাধ হচ্ছে। ডিএমকে মুখ্যমন্ত্রী এম কে স্টালিনকে হুঁশিয়ারি দিয়ে আন্নামালাই বলেন, 'যদি মুখ্যমন্ত্রীর পদ ধরে রাখতে চান তাহলে 'আত্মদর্শন' করুণ'।
অন্যদিকে শিবগঙ্গাইয়ের সাংসদ কার্তি পি চিদাম্বরম বিজেপি কর্মী খুনের এই ঘটনায় রাজনীতির রঙ না লাগাতেই অনুরোধ করেছেন। এক্স হ্যান্ডেলে সাংসদ জানান, এই বিষয়ে তিনি জেলা পুলিশের সঙ্গে কথা বলেছেন। এসপি জানিয়েছেন, দুটি গোষ্ঠীর মধ্যে শত্রুতার কারণে এই হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। অভিযুক্তদের দ্রুত গ্রেফতার করা হবে বলেও আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।
তবে রাজ্য জুড়ে রাজনৈতিক নেতা, কর্মীদের খুনের হার যেভাবে বাড়ছে তাতে পরিস্থিতি ক্রমেই উদ্বেগজনক হয়ে উঠছে। গত ২৪ ঘণ্টায় তামিলনাড়ুতে এটি দ্বিতীয় রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ড। শনিবার কুড্ডালোরে এক AIADMK কর্মীকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। এই মাসের শুরুতেই, ৫ জুলাই বহুজন সমাজ পার্টির (BSP) রাজ্য সভাপতি কে আর্মস্ট্রংকেও একই ভাবে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে খুন করা হয়েছিল। সেই হত্যাকাণ্ডের রেষ কাটতে না কাটতেই শনিবার পরপর দুই রাজনৈতিক দলের কর্মী খুন হলেন।