Swami Chaitanyananda (Photo Credit: X)

দিল্লি, ২৫ সেপ্টেম্বর: স্বঘোষিত ধর্মগুরু স্বামী চৈতন্যনন্দ সরস্বতীকে (Swami Chaitanyananda Saraswati) গ্রেফতার করেছে পুলিশ। চৈতন্যনন্দ সরস্বতী নামে শ্রী সারদ ইনস্টিটিউট অফ ইন্ডিয়ান ম্য়ানেজমেন্ট কলেজের ছাত্রীদের একাংশ যে অভিযোগ করেছেন, তা শুনে শিউরে উঠছে গোটা দেশ (India)। স্বামী চৈতন্যনন্দ সরস্বতী নামের ওই স্বঘোষিত বাবা কীভাবে দিনের পর দিন ধরে ছাত্রীদের প্রলুব্ধ করত এবং তাঁদের জোর করে শারীরিকভাবে হেনস্থা করত, তার বর্ণনা যত গভীরে যাচ্ছে, মানুষ তা শুনে অবাক হয়ে যাচ্ছেন।

সারদা ইনস্টিটিউটের ওই ভণ্ড বাবার কুকীর্তি ফাঁস করতে গিয়ে বেশ কয়েকজন ছাত্রী তাঁদের তিক্ত অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরেছেন। যেখানে ওই ছাত্রীরা বলেন, চৈতন্যনন্দ সরস্বতী রাত হলেই তাঁদের ডেকে পাঠাত। হোয়াটস অ্যাপে মেসেজ বা কল করে তাঁদের ডাকা হত। এমনকী চৈতন্যনন্দ সরস্বতী ওরফে পার্থ সারথী এক পড়ুয়াকে জোর করে তাঁর নামও বদলে ফেলতে বাধ্য করে বলে অভিযোগে উঠে আসে।

যে ৩০ জন ছাত্রী চৈতন্যনন্দ সরস্বতীর বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন, তাঁদের মধ্যে ১৭ জন ওই ভণ্ড বাবার বিরুদ্ধে যৌন লাঞ্ছনার অভিযোগ তুলেছেন। যার জেরে পার্থ সারথীর বিরুদ্ধে ভারতীয় ন্যায় সংহিতার বেশ কয়েকটি ধারা মেনে দায়ের করা হয় অভিযোগ।

আরও পড়ুন: Self Styled Godman Swami Chaitanyananda Saraswati: 'আমার ঘরে এস, তোমায় বিদেশে নিয়ে যাব', বাবা সেজে নোংরা মেসেজ, ছাত্রীদের শরীর স্পর্শের চেষ্টা স্বঘোষিত গুরুর

চৈতন্যনন্দ কী বলে ভয় দেখাত ছাত্রীদের 

কোনও ছাত্রী যদি চৈতন্যনন্দ সরস্বতীর কথায় রাজি না হতেন, তাহলে তাঁকে সাসপেন্ড করা হবে কলেজ থেকে। এই কথা বলে ভয় দেখানো হত। আবার কেউকে ভয় দেখানো হত, পরীক্ষায় ফেল করিয়ে দেওয়ার কথা বলে।

ছাত্রীদের অভিযোগ 

২১ বছরের এক স্লার ছাত্রী চৈতন্যনন্দের বিরুদ্ধে অভিয়োগ জানাতে গিয়ে পুলিশকে জানান, তিনি গত বছর পার্থ সারথীর দেখা পান। চৈতন্যনন্দ ওই কলেজের চ্যান্সেলর। প্রথম সাক্ষাতে ওই ভণ্ড বাবা তাঁকে তার অফিসে ঢুকিয়ে, ঘরের দরজা বন্ধ করে দেয়। তারপর নান কথা বলে, পড়াশোনা থেকে তাঁর মন সরানোর চেষ্টা করে। যা একেবারে অবাঞ্ছিত বলে তাঁর ওই সময় মনে হয়েছিল বলে জানান সংশ্লিষ্ট ছাত্রী।

এসবের পাশাপাশি ওই ছাত্রী আরও জানান, একবার তিনি চোট পেয়ছিলেন। যে আঘাতের রিপোর্ট চ্যান্সেলরকে শেয়ার করার কথা বলা হয়। তিনি হোয়াটস অ্যাপের মাধ্যমে পার্থ সারথীকে চোটের কথা জানান। এরপর থেকেই রাতবিরেতে পার্থ সারথী তাঁকে অশ্লীল মেসেজে পাঠাতে শুরু করে বলে পুলিশকে জানান ওই ছাত্রী।

ওই সব মেসেজ চৈতন্যনন্দ সরস্বতী লিখত, 'বেবি আই লভ ইউ। আমি তোমাকে ভালবাসি। তোমায় আজ দেখতে দারুণ লাগছিল। তোমার চুল কত সুন্দর।'

তিনি মেসেজের উত্তর না দিলে, চৈতন্যনন্দ তাঁকে বার বার পিং করত। এবং বাধ্য করত উত্তর দিতে।

ওই সম তিনি কলেজের অ্যাসোসিয়েট ডিনকে বিষয়টি জানিয়েছিলেন। ডিন পালটা জবাবে জানান, চৈতন্যনন্দ যতদিন ওই কলেজের প্রধান থাকবেন, ততদিন পর্যন্ত তাঁকে উত্তর দিতে হবে ওই সব মেসেজের। এমনকী তিনি বেশ কয়েকজন সিনিয়রের সঙ্গেও এ বিষয়ে কথা বলেছিলেন বলে জানান ওই ছাত্রী।

চৈতন্যনন্দর কুকীর্তি

চৈতন্যনন্দ যখন নতুন বিএমডব্লিউ গাড়ি কেনেন, তখন পুজো দেওয়ার জন্য তাঁদের হৃষিকেষে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে ফেরার পথে তাঁর দেখে আলটপকা মন্তব্য রেন চৈতন্যনন্দ সরস্বতী।

হৃষিকেষের ঘটনার পর হোলির সময় থেকে চৈতনন্যনন্দ তাঁকে বেবি বলে সম্মোধন শুরু করে। যা শুনে তিনি বিরক্ত হতে শুরু করেন কিন্তু কেউ তাঁকে ওই সময় সাহায্য করেনি বলে দাবি করেন ওই ছাত্রী।