মিরাট, ২২ মার্চঃ যত সময় গড়াচ্ছে মার্চেন্ট নেভি অফিসার সৌরভ রাজপুত হত্যা-কাণ্ডের রহস্য ভেদ করছে পুলিশ। প্রেমিক সাহিল শুক্লার (Sahil Shukla) সঙ্গে ছক কষে স্বামী সৌরভ রাজপুতকে (Saurabh Rajput) খুন করে দেহ ১৫ টুকরো করার অভিযোগ উঠেছে স্ত্রী মুসকানের (Muskan Rastogi) বিরুদ্ধে। ইতিমধ্যে গ্রেফতার হয়েছেন দুই অভিযুক্ত। গত বুধবার তাঁদের আদালতে হাজির করানো হলে বিচারক তাঁদের ১৪ দিনের বিচারবিভাগীয় হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন ।
খুনের ঘটনাটি ঘটেছে গত ৪ মার্চ। ঘুমের ওষুধ কিনে এনে তা স্বামী সৌরভের খাবারে মিশিয়ে দেন মুসকান। এরপর সৌরভের গলা কেটে তাঁকে খুন করেন মুসকান এবং সাহিল। খুনের পর দেহ স্নানঘরে নিয়ে গিয়ে এক এক করে ১৫ টুকরো করা হয়। কিনে আনা নীল রঙের একটি ড্রামে সৌরভের দেহাংশ ভরে তার উপর বালি সিমেন্ট দিয়ে চাপা দিয়ে দেওয়া হয়। উত্তরপ্রদেশের (Uttar Prdaesh) মিরাটে স্বামীকে খুন করে প্রেমিক সাহিলের সঙ্গে হিমাচল প্রদেশ (Himachal Pradesh) বেড়াতে যান মুসকান। ১০ মার্চ কাসোলের (Kasol) একটি হোটেলে চেক-ইন করেন দুজনে। হোটেলে মুসকানকে নিজের স্ত্রী হিসাবে পরিচয় দেন সাহিল। হোটেলের ২০৩ নম্বর রুমে ৬ টানা দিন ছিলেন তাঁরা। এমনকি সেখানেই তাঁরা ১১ মার্চ সাহিলের জন্মদিন উদযাপন করেছেন। জানিয়েছেন হোটেলেরই এক কর্মী।
তিনি জানান, মুসকানকে স্ত্রীর হিসাবে পরিচয় দেন সাহিল। প্রয়োজনীয় সমস্ত নথি দিয়েই তাঁরা হোটেলে রুম নিয়েছিলেন। দেখে আর পাঁচজন দম্পতির মতই মনে হয়েছিল তাঁদের। যদিও অধিকাংশ সময়টাই দুজনে রুমের মধ্যে থাকতেন। খুব কমই বাইরে বেরতেন। মুসকান এবং সাহিলের সঙ্গে তাঁদের একজন গাড়ির চালকও এসেছিলেন বলে উল্লেখ করেছেন হোটেলের ওই কর্মী।
সৌরভ রাজপুত হত্যা-কাণ্ডে পরতে পরতে লুকিয়ে রহস্য। পুলিশি তদন্তে উঠে এসেছে, ২০১৯ সাল থেকে সাহিলের সঙ্গে সম্পর্ক মুসকানের। ২০২১ সালে স্ত্রীর পরকীয়ার কথা জানতে পেতে বিবাহবিচ্ছেদের মামলা করেছিলেন সৌরভ। কিন্তু মেয়ের কথা ভেবে বিচ্ছেদের পথ থেকে সরে আসেন এবং স্ত্রীর সঙ্গে থাকার সিদ্ধান্ত নেন তিনি। কিন্তু মুসকান থাকতে চেয়েছিলেন সাহিলের সঙ্গেই। ২০২৩ সালে প্রেমিকের সঙ্গে মিলে স্বামীকে খুনের চেষ্টা করেছিলেন স্ত্রী। কিন্তু সেই বার ব্যর্থ হন। তাই এইবার আগে থেকে সমস্ত আটঘাট বেঁধে সৌরভকে খুনের প্রস্তুতি নিয়েছিলেন মুসকান এবং সাহিল।